ফিলিস্তিনি প্রতিরোধ আন্দোলন হামাস-নিয়ন্ত্রিত গাজা উপত্যকা নিয়ে ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর পরিকল্পনাকে নাৎসিদের ইহুদি নিধনের সাথে তুলনা করে ইসরাইলের এক পার্লামেন্ট সদস্য শাস্তির মুখে পড়েছেন। দেশটির ইথিকস প্যানেল তাকে সাসপেন্ড করেছে।
এক সাক্ষাতকারে ইসরাইলি এমপি ওফার ক্যাসিফ অভিযোগ করেন, প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর সরকার গাজা নিয়ে যে পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করছেন, তা ইউরোপে ইহুদিদের বিরুদ্ধে নাৎসিদের ‘ফাইনাল সলিউশন’-এর সাথে তুলনীয়।
তিনি আরেকবার বিদেশী মিডিয়ায় হামাসের হামলায় ৭ অক্টোবরের ১৪ শ’ লোকের নিহত হওয়া প্রসঙ্গে বলেন, ‘ইসরাইল এই সহিংসতা চায়।’
জেরুসালেম পোস্ট জানায়, ক্যাসিফকে ৪৫ দিনের জন্য সাসপেন্ড করা হয়েছে।
এর জবাবে এক্সে (সাবেক টুইটার) ক্যাসিফ ইসরাইলি পার্লামেন্ট নেসেটের সিদ্ধান্তকে ‘রাজনৈতিক মতপ্রকাশের স্বাধীনতার কফিনে আরেকটি পেরেক’ হিসেবে অভিহিত করেন।
উল্লেখ্য, নেতানিয়াহু গাজা থেকে হামাসকে নিশ্চিহ্ন করার প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেছেন। আর হিটলার ইউরোপ থেকে ইহুদিদের নিশ্চিহ্ন করার কথা ঘোষণা করেছিলেন।
গাজায় যুদ্ধাপরাধের দায়ে ইসরাইলকে অভিযুক্ত করেছেন আফ্রিকান ইউনিয়ন প্রধান
আফ্রিকান ইউনিয়নের প্রধান মুসা ফাকি মাহামাত গাজা উপত্যাকার একটি হাসপাতালে মঙ্গলবার ভয়াবহ হামলা চালানোয় ইসরাইলকে ‘যুদ্ধাপরাধের’ দায়ে অভিযুক্ত করেছেন।
এ ব্যাপারে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানিয়ে মুসা ফাকি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এক্সে দেওয়া এক বার্তায় বলেন, ‘আজ গাজার একটি হাসপাতালে ইসরায়েলের ভয়াবহ বোমা হামলার ঘটনায় আমাদের নিন্দা জানানোর কোন ভাষা নেই। তাদের বর্বরোচিত হামলায় শত শত মানুষ নিহত হয়েছে।’
এর আগে এক্স যোগাযোগ মাধ্যম টুইটার নামে পরিচিত ছিল।
হামাস পরিচালিত ফিলিস্তিনের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানায়, গৃহহীন মানুষদের আশ্রয় দেওয়ায় ইসরায়েল ওই হাসপাতাল প্রাঙ্গণে হামলা চালায়। এতে সেখানে কমপক্ষে ৫ শ’ জন নিহত হয়।
এদিকে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী বলেছে, হামাসের মিত্র সংগঠন ইসলামিক জিহাদ ফিলিস্তিনের জঙ্গিরা ভুল করে সেখানে রকেট হামলা চালিয়েছে।
ফাকি বলেন, ‘কোনো হাসপাতাল লক্ষ্য করে হামলা চালানো যুদ্ধাপরাধের সামিল। আন্তর্জাতিক মানবিক আইনের আওতায় যেকোনো হাসপাতালকে নিরাপদ আশ্রয়স্থল হিসেবে বিবেচনা করা হয়ে থাকে।’
গত ৭ অক্টোবর হামাসের যোদ্ধারা ইসরাইলের দক্ষিণাঞ্চলে ব্যাপক হামলা চালানোর পর থেকে ইসরায়েল গাজার বিভিন্ন স্থাপনা লক্ষ্য করে হামলা চালিয়ে আসছে। ফলে সেখানে যুদ্ধে উভয় পক্ষের কয়েক হাজার লোক ইতোমধ্যে নিহত হয়েছে।
গাজা উপত্যকা জুড়ে ইসরায়েলি বিমান হামলায় প্রায় ৩ হাজার লোক প্রাণ হারিয়েছে।
এদিকে ইসরাইলে হামাসের হামলায় ১৪ শ’ জনের বেশি নিহত হয়েছে।
সূত্র : আল জাজিরা, এএফপি ও অন্যান্য