নিজ মাঠে বাংলাদেশ কখনই হারেনি মালদ্বীপের কাছে। কিন্তু ৫৯ মিনিটে জুনিয়র সোহেল রানা লালকার্ড পাওয়ায় শংকায় পড়ে যায় বাংলাদেশ। ১০ জন নিয়ে ফিফা র্যাংকিংয়ে ১৫৫-তে থাকা দলটির বিপক্ষে জিততে পারবে তো ১৮৯-তে থাকা জামাল ভূঁইয়ারা। অবশ্য ততোক্ষণে লাল-সবুজরা ২-১ গোলে এগিয়ে থাকার পর আর সমতা আনতে পারেনি মালদ্বীপ। ফলে এই স্কোরলাইন নিয়েই দুর্দান্ত জয়ে বাংলাদেশ এখন ২০১৬ বিশ্বকাপ বাছাই পর্বে কোয়ালিফাই করলো।
১৬ নভেম্বর থেকে শুরু হওয়া বাছাই পর্বে বাংলাদেশের প্রথম ম্যাচ মেলবোর্নে অস্ট্রেলিয়ার সাথে। আই ‘গ্রুপে তাদের অপর দুই প্রতিপক্ষ ফিলিস্তিন ও লেবানন।
১২ অক্টোবর মালের মাঠে দুই দলের খেলা ১-১-এ ড্র। ফলে বিশ্বকাপ বাছাই প্লে-অফে মঙ্গলবার ফিরতি ম্যাচে জয়ের বাধ্যবাধকতা দাঁড়ায় বাংলাদেশ ও মালদ্বীপের। ম্যাচ শুরুর দুই মিনিটে বাংলাদেশ দলের ওপর চড়াও হয়ে দুটি কর্নার আদায় মালদ্বীপের। এ থেকে গোল পেতে পারতো সফরকারীরা। গোলরক্ষক মিতুল মারমা আর ডিফেন্সের দৃঢ়তায় রক্ষা। এই ধাক্কা সামলিয়ে ১১ মিনিটে নিজেদের প্রথম আক্রমণ থেকেই গোল আদায় বাংলাদেশ দলের।
ঈসা ফয়সালের বদলে এ ম্যাচে একদাশে চান্স পাওয়া সাদউদ্দিন থ্রু বাড়ান ফয়সাল আহমেদ ফাহিমের উদ্দেশে। মনে হচ্ছিল বলটি ধরতে পারবেন না এই ফরোয়ার্ড। কিন্তু গতিতে মালদ্বীপের ডিফেন্ডারকে টপকে ঠিক লাইনের ওপর থেকে কাট ব্যাক করেন ফাহিম। সে বলে ফাঁকায় পা লাগিয়ে গোল করেন রাকিব হোসেন।
বসুন্ধরা কিংস এরিনায় ৬৭২৯ জন দর্শক উপস্থিতিতে বিশ্বকাপ বাছাই প্লে-অফের এই ম্যাচে এগিয়ে যাওয়ার পর বাংলাদেশ দল কাউন্টার অ্যাটাকে খেলে আরো তিনটি গোলের সুযোগ পায়। ১৫ মিনিটে জামালের ক্রসে ফাহিমের ভলি গোলরক্ষক ফিস্ট করলে, ২৯ মিনিটে হৃদয়ের লবে রাকিবের শট বিপক্ষ কিপার পা দিয়ে ঠেকালে এবং ৩৪ মিনিটে জামালের ক্রসে রাকিবের ভলি ক্রসবারে প্রতিহত হলে ব্যবধান বাড়াতে পারেনি স্বাগতিকরা। শুরু থেকেই নড়বড়ে ছিল হাভিয়ার কাবরেরা বাহিনীর ডিফেন্স লাইন। শেষ পর্যন্ত এই দুর্বলতাকে কাজে লাগিয়ে ৩৫ মিনিটে ম্যাচে ফেরে মালদ্বীপ। হামজা মোহাম্মদের কর্নার ফাহিমের মাথায় লেগে আইসাম ইব্রাহিমের সামনে এলে তিনি ফাঁকা হেডে পরাস্ত করেন মিতুল মারমাকে। অথচ তিনটি গোল মিস না হলে প্রথমার্ধেই শেষ হয়ে যেত মালদ্বীপের লড়াই।
বিরতির পরপরই ফের এগিয়ে যাওয়া জামালদের। ডান দিক থেকে আসা বলে রাকিবের ব্যাক হেডে সাদউদ্দিনের শট মালদ্বীপের গোলরক্ষক ঠেকানোর পর বল ফিরতি বলে জুনিয়র সোহেল রানার পাস থেকে গোল করেন ফাহিম। তবে এই গোলের পরই আঘাত লাল-সবুজদের। ৫৯ মিনিটে অযথা ফাউলের কারণে বাহরাইনের রেফারি আমের ইব্রাহিম লালকার্ড দেখান জুনিয়র সোহেল রানাকে। ফলে বাকি সময়ে ১০ জন নিয়ে খেলতে হয় বাংলাদেশকে।
তবে গত সাফের সেমিতে খেলা দলটি এরপরও দমে যায়নি। ৭৯ মিনিটে ফাহিমের শট অল্পের জন্য লক্ষ্য মিস করলে ব্যবধান বাড়েনি। তবে শেষ দিকে মালদ্বীপ চেপে ধরে একের পর এক কর্নার আদায় করলেও তাদের ফরোয়ার্ডদের গোল মিস জয় নিশ্চিত করে লালসবুজদের।
বাংলাদেশ ২০২২ বিশ্বকাপ বাছাই প্লে-অফে লাওসকে হারিয়ে (১-০, ০-০) কোয়ালিফাই করেছিল।