অগোচরেই বিভিন্ন ক্ষমতাধর দেশের সঙ্গে সমঝোতা হয়ে গেছে, ইঙ্গিত করে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছিলেন, ‘তলে তলে সব হয়ে গেছে’। এর জবাবে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘একই কথা বারবার বলে, বলতে তারা (ক্ষমতাসীন দলের নেতারা) খুব আনন্দ পান। পরে আবার সেটাকে বলে, রাজনৈতিক রসবোধ! তলে তলে নাকি আবার সব হয়ে গেছে— বারবার এ কথাটা কেন বলে? এ জন্যই বলে, আসলে কিছুই হয়নি।’
শনিবার (১৪ অক্টোবর) রাজধানীর নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে অনশন কর্মসূচিতে তিনি একথা বলেন। বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তি ও তার বিদেশে চিকিৎসাসহ ‘এক দফা’ দাবিতে দেশব্যাপী কর্মসূচির অংশ হিসেবে ঢাকা মহানগর (উত্তর ও দক্ষিণ) বিএনপি এই অনশনের আয়োজন করে। যুগপৎভাবে আন্দোলনে যুক্ত অন্যান্য বিরোধী দলও এই কর্মসূচিতে অংশ নেয়।
পুরো গণতান্ত্রিক বিশ্ব আওয়ামী লীগ সরকারকে পরিষ্কার করে ক্ষমতা থেকে সরে যাওয়ার জন্য বলছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‘অনেক চড়াই-উৎড়াই পার করে এসেছি আমরা। এখন আমাদের সামনে লক্ষ্য মাত্র একটাই— দেশকে বাঁচাতে হলে, অর্থনীতিকে বাঁচাতে হলে, মানুষকে বাঁচাতে হলে এবং একই সঙ্গে দেশনেত্রীসহ আমাদের সব রাজনৈতিক কর্মীদের বাঁচাতে হলে আন্দোলনের মাধ্যমে এদের পরাজিত করা ছাড়া কোনও বিকল্প নাই।’
পূজাকে কেন্দ্র করে নেতা-কর্মীদের সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়ে বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘সামনে পূজা আছে। আমরা সবসময় বলেছি— আমরা সম্পূর্ণ শান্তিপূর্ণ, অসাম্প্রদায়িক ব্যবস্থায় বিশ্বাস করি। আমরা চাই না, ওই আন্দোলনের সুযোগ নিয়ে তারা আবার সেই সমস্যার তৈরি করবে। ইতিমধ্যে সমস্যা তৈরি করেছে। কুমিল্লাতে হিন্দু, বৌদ্ধ ও খ্রিষ্টান কল্যাণ ফ্রন্টের শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদ মিছিলে পুলিশ বাধা দিয়েছে, তারপর আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীরা বাধা দিয়ে তাদের আহত করেছে।’
এর আগে সকাল ১১টায় শুরু এই অনশনে বসেন বিএনপির নেতাকর্মীরা। এর পর দুপুর ২টায় দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে জুস খাইয়ে অনশন ভাঙান লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির (এলডিপি) সভাপতি কর্নেল (অব.) অলি আহমদ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি অধ্যাপক আনোয়ার উল্লাহ চৌধুরী।
অনশন কর্মসূচিতে আরও বক্তব্য দেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, আবদুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান ও সেলিমা রহমানসহ অনেকেই।
এছাড়া সংহতি জানিয়ে বক্তব্য দেন নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না, জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান মোস্তফা জামাল হায়দার,বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, এনপিপি চেয়ারম্যান ফরিদুজ্জামান ফরহাদ, জাগপা সভাপতি লুতফর রহমান এবং গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকিসহ আরও অনেকে।