সরকার পতনের আন্দোলনে দল-মত নির্বিশেষে সবাইকে ঝাঁপিয়ে পড়ার জন্য আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
মঙ্গলবার (১০ অক্টোবর) বিকেলে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে ‘গণতন্ত্র, সার্বভৌমত্ব ও রোহিঙ্গা সঙ্কট: শহীদ আবরার ফাহাদের প্রেরণা’ শীর্ষক আলোচনা সভায় এ আহ্বান জানান তিনি।
গণঅধিকার পরিষদ (ড. রেজা কিবরিয়া পন্থী) এ আলোচনা সভার আয়োজন করে।
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘সরকার দেশকে লুটেরাদের স্বর্গরাজ্য পরিণত করেছে। এরা আসবে, লুট করবে- নিয়ে চলে যাবে। কথা বাড়াতে চাই না। কথা এখন একটাই, কোনো কথা-বার্তা না বলে, কালবিলম্ব না করে আসুন আমরা সবাই দল-মত নির্বিশেষে বাম, ডান, উত্তর-দক্ষিণ বুঝি না, যারা দেশকে ভালোবাসেন তারা সবাই ঝাঁপিয়ে পড়েন।’
তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের সাহেবকে আমি ব্যক্তিগতভাবে চিনি। আওয়ামী লীগের যে কয়েকজন পড়াশোনা জানা মানুষ তাদের মধ্যে তিনি একজন। আমরা তাই জানতাম। কিন্তু তার কী করুণ অবস্থা হয়েছে! সেটা জানতাম না। ইউরেনিয়াম কী জিনিস তাই জানেন না। এটার জন্য তো বিশেষ কোনো জ্ঞানের প্রয়োজন হয় না। এটা হচ্ছে, এর আগে তিনি উল্টা-পাল্টা কথা বলেছেন না? তলে তলে আপস হয়েছে। এটার জন্য মনে হয় তার মনিব ক্ষুব্ধ হয়েছেন। সেটার জন্য হয়তো তারচেয়ে বেশি বক্তব্য দিচ্ছেন। এটাই হয় আর কি। এসব দল ও সরকারগুলোতে তোষামোদি এমন পর্যায়ে চলে যায় যে তখন তা হাস্যরসে পরিণত হয়।’
ফখরুল বলেন, ‘আমার এক জুনিয়র ফ্রেন্ড বাইরে থাকে। ও আমাকে বলেছে, এ ধরনের কথা বলেছে, আপনি কিন্তু এর প্রতিবাদ করতে যাবেন না। কথাগুলো কিন্তু আমাদের জন্য বিনোদনের ব্যাপার হয়ে গেছে। এটা আমাদের জন্য বিনোদন। আমাদের জীবন তো দুর্বিষহ। এটুকু বিনোদন থেকে আমাদেরকে বঞ্চিত করবেন না। আর এ সমস্ত কথা শুনে অতি দুঃখেও খুবই হাসি পায়।’
রাজনৈতিক নেতাকর্মীদের উদ্দেশে তিনি আরো বলেন, ‘আপনারা এমন কোনো কাজ করবেন না যাতে আমাদের ঐক্যের ক্ষতি হয়। অনেকের মধ্যে আমরা এই প্রবণতাটা দেখেছি- অনেক সময় মনগড়া কথা সমাজিক যোগাযোগমাধ্যমে লেখেন। এটা করবেন না। এটা যারা করেন তারা আন্দোলনের জন্য কোনো কাজ করছেন না। আন্দোলনের পেছনে ছুরি মারছেন।’
বিগত নির্বাচনের চিত্র তুলে ধরে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘নির্বাচন যখন সামনে আসছে তখন একই কায়দায় আজকে আবার বলতে শুরু করেছেন, আমার অধীনে নির্বাচন হবে। ওটাই সংবিধান। সংবিধানে তো কাটাছেঁড়া করে কিছুই রাখেন নাই।’
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘ঘরের মধ্যে সভা করার এখন আর সময় নেই। এখন সময় এসেছে বাইরে রাজপথে আমাদের কথাগুলোকে সামনে নিয়ে আসা এবং এই সরকারের বিরুদ্ধে স্বোচ্চার হয়ে আন্দোলন ছাড়া জাতীয় সামনে আর কোনো বিকল্প নাই।’
তিনি বলেন, ‘ঢাকায় লোকের চেয়ে গ্রোমের লোকেরা আরো বেশি ক্ষিপ্ত হয়ে উঠেছে। গ্রাম ও মফস্বলের মানুষ এই সরকারকে এক মুহূর্তও দেখতে চায় না।’