৩৮তম ওভারের প্রথম বলে চার মারেন ডেভিড মালান। জো রুটের সঙ্গে তার জুটি পৌঁছায় ১৫০ রানে। পরের বলেই তাকে থামান শেখ মেহেদী হাসান। ১০৭ বলে ১৬ চার ও ৫ ছয়ে ক্যারিয়ার সেরা ১৪০ রানে বোল্ড হন ইংলিশ ওপেনার। ভেঙে যায় ১৫১ রানের জুটি।
বিশ্বকাপে ইংল্যান্ডের হয়ে সর্বোচ্চ রানের রেকর্ড গড়লেন জো রুট। ১৯ ম্যাচ খেলে তার রান ৮৯৮। পেছনে ফেলেছেন গ্রাহাম গুচকে (৮৯৭)
মালানের সেঞ্চুরি, রুটের হাফ সেঞ্চুরিতে অস্বস্তিতে বাংলাদেশ
১১৫ রানে বাংলাদেশ প্রথম উইকেট পায়। তবে ডেভিড মালান শক্ত হাতে দাঁড়িযে গেছেন। জো রুট তার সঙ্গে পঞ্চাশ রানের জুটি গড়ে ফেলেছেন। ৩৯ বলে হাফ সেঞ্চুরিকে সেঞ্চুরি বানাতে মালান খেলেছেন আরও ৫২ বল। ৯১ বলে ১২ চার ও ২ ছয়ে শতক হাঁকান তিনি। এই বছর এটি তার চতুর্থ সেঞ্চুরি। এক বর্ষপঞ্জিকায় ইংল্যান্ডের জার্সিতে সর্বোচ্চ সেঞ্চুরি হাঁকানোর তালিকায় ডেভিড গাওয়ার (১৯৮৩) ও জনি বেয়ারস্টোর (২০১৮) সঙ্গে যৌথভাবে শীর্ষে বসলেন তিনি। ২৩ ইনিংস খেলে সবচেয়ে দ্রুততম ছয় সেঞ্চুরির কীর্তি গড়লেন মালান। ৩৩তম ওভারের পঞ্চম বলে ছক্কা মেরে দ্বিতীয় উইকেটে শতরানের জুটি অতিক্রম করেন তিনি। তার দুটি করে চার ও ছয়ে মেহেদী হাসান মিরাজের এই ওভারে ২২ রান তোলে ইংল্যান্ড।
পরের ওভারে শরিফুল ইসলামের তৃতীয় বলে স্কয়ার লেগ দিয়ে চার মেরে হাফ সেঞ্চুরি করেন রুট। ৪৪ বলে চারটি চার ও একটি ছয়ে ফিফটি করেন তিনি। পরের ওভারে তাওহীদ হৃদয়ের হাত ফসকে জীবন পান রুট।
সাকিবের হাত ধরে এলো প্রথম সাফল্য
অবশেষে বাংলাদেশ পেয়ে গেলো অতি প্রয়োজনীয় উইকেট। ১৮তম ওভারে সাকিব আল হাসান ভেঙে দিলেন ১১৫ রানের উদ্বোধনী জুটি। জনি বেয়ারস্টো ফ্লিক করতে গিয়ে বল ইনসাইড এজ হয়ে লেগস্টাম্পে আঘাত করে। ৪৯ বলে ৮ চারে ৫২ রানে বিদায় নেন ইংলিশ ব্যাটার।
শততম ম্যাচে বেয়ারস্টোর হাফ সেঞ্চুরি
১৬তম ওভারে সাকিব আল হাসানের শেষ বলে দুটি রান নিয়ে হাফ সেঞ্চুরি করলেন জনি বেয়ারস্টোও। নিজের শততম ওয়ানডে স্মরণীয় করে রাখলেন ১৬তম ফিফটিতে। ৫৪ বলে ৮ চার মেরেছেন তিনি।
বিশ্বকাপে মালানের প্রথম হাফ সেঞ্চুরি
এবারের বিশ্বকাপে ডেভিড মালানকে নিয়ে প্রত্যাশা কম নয়। নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে মাত্র ১৪ রানে আউট হয়ে হতাশ করেন তিনি। তবে দ্বিতীয় ম্যাচেই ঝকঝকে ইনিংস খেলে পেয়ে গেলেন বিশ্বকাপে নিজের প্রথম ফিফটি। ১৪তম ওভারে সাকিব আল হাসানের বলে সিঙ্গেল নিয়ে পঞ্চাশ ছোঁন তিনি। এজন্য তাকে খেলতে হয়েছে ৩৯ বল, ছিল সাত চার ও দুই ছয়।
১০ ওভারের খেলা শেষ। পাওয়ার প্লেতে নেই বাংলাদেশের বোলারদের কোনও সাফল্য। জনি বেয়ারস্টো ও ডেভিড মালানের পঞ্চাশ ছাড়ানো জুটি বাংলাদেশকে অস্বস্তিতে রেখেছে। ৬১ রান নিয়েছে তারা।
পঞ্চম ওভারের প্রথম বলে ডেভিড মালানের বিরুদ্ধে কট বিহাইন্ডের আপিল করে উল্লাসে মাতে। আম্পায়ার আহসান রাজা আউট দেননি। দ্রুত রিভিউ নেন সাকিব আল হাসান, কিন্তু আগের সিদ্ধান্ত বহাল থাকে। রিভিউ হারায় বাংলাদেশ। একই ওভারের তৃতীয় ও চতুর্থ বলে চার ও ছক্কা মেরে মালান সাকিবদের হতাশ করেন।
মোস্তাফিজের চমৎকার বোলিংয়ে বাংলাদেশের শুরু
প্রথম বলটি ব্লক করেন জনি বেয়ারস্টো। নিজের শততম ওয়ানডেতে রানের খাতা খোলেন দ্বিতীয় বলে। স্ট্রাইকে গিয়ে টানা তিন বল ব্যাটেই লাগাতে পারেননি ডেভিড মালান। ষষ্ঠ বল থেকে কভার দিয়ে চার রান আদায় করেন ইংলিশ ওপেনার। প্রশ্নবিদ্ধ আউটফিল্ডের কারণে শরিফুল ইসলাম ডাইভ দিয়ে বল ঠেকানোর ঝুঁকি নেননি। বাঁহাতি কাটার মাস্টার তার পরের ওভারে মাত্র এক রান দেন। মাঝে তাসকিন আহমেদের ওভার থেকে ৫ রান বের করে নেয় ইংলিশরা।
বিশ্বকাপের দ্বিতীয় ম্যাচে বাংলাদেশ ও ইংল্যান্ড মুখোমুখি। ধর্মশালায় টস জিতেছেন সাকিব আল হাসান এবং ফিল্ডিংয়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তিনি। একাদশ থেকে বাদ পড়েছেন মাহমুদউল্লাহ, জায়গা করে নিয়েছেন শেখ মেহেদী হাসান। ইংল্যান্ড দলেও একটি পরিবর্তন। মঈন আলীকে বাদ দিয়ে নেওয়া হয়েছে রিচি টপলিকে।
বিশ্বকাপে ইংল্যান্ড ও বাংলাদেশ মুখোমুখি লড়াইয়ে সমানে সমান, চার ম্যাচ খেলে দুটি করে জয় পেয়েছে দুই দলই। ২০০৭ সালে প্রথম দেখায় হারলেও পরের দুই আসরে বাংলাদেশ জিতেছে। ২০১৯ সালের আসরে বড় ব্যবধানে হেরে যায় তারা।
ধর্মশালায় আগের ম্যাচে আফগানিস্তানকে হারানোয় বাংলাদেশ কিছুটা সুবিধা পাবে। কারণ আউটফিল্ড নিয়ে নানান সমালোচনা হলেও তাদের সুর ভিন্ন। এটার সঙ্গে মানিয়ে নিয়েই খেলতে বদ্ধপরিকর। অন্যদিকে ইংল্যান্ড অধিনায়ক জস বাটলার আউটফিল্ড নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। এ কারণে বেন স্টোকসকে নামানোর ঝুঁকি নিচ্ছে না তারা।
বাংলাদেশ একাদশ: তানজিদ হাসান তামিম, লিটন দাস, নাজমুল হোসেন শান্ত, সাকিব আল হাসান (অধিনায়ক), মেহেদী হাসান মিরাজ, মুশফিকুর রহিম (উইকেটকিপার), তাওহীদ হৃদয়, মেহেদী হাসান, তাসকিন আহমেদ, শরিফুল ইসলাম, মোস্তাফিজুর রহমান।
ইংল্যান্ড একাদশ: জনি বেয়ারস্টো, ডেভিড মালান, জো রুট, হ্যারি ব্রুক, জস বাটলার (উইকেটকিপার), লিয়াম লিভিংস্টোন, স্যাম কারান, ক্রিস ওকস, আদিল রশিদ, মার্ক উড, রিচি টপলি।