পাওয়ার প্লেতে দুই উইকেটে বাংলাদেশের ৪৪

Slider খেলা

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

বাংলাদেশ ১০ ওভারে ৪৪/২, লক্ষ্য ১৫৭ (মেহেদী হাসান মিরাজ ১৮*, নাজমুল হোসেন শান্ত ৩*; তানজিদ তামিম ৫, লিটন দাস ১৩)

‘জীবন’ পেলেন মিরাজ

৮.৪ ওভারে ফারুকী আরেকটি উইকেটও পেতে পারতেন। মিরাজ তার বল পয়েন্টে খেলতে গিয়ে ক্যাচ তুলেছিলেন। কিন্তু নাজিবউল্লাহ জাদরান সহজ ক্যাচটা হাতে নিয়েও সেটি ফেলে দিয়েছেন! মিরাজ তখন ১৬ রানে ব্যাট করছিলেন।

ফারুকীর বলে বোল্ড লিটন

জুনিয়র তামিমের বিদায়ের পর প্রতিরোধ গড়তে পারেননি লিটন দাসও। বরং যে ফারুকীর বোলিং নিয়ে এত আলোচনা। সেই আফগান পেসারের বলেই বাংলাদেশের আরেক অভিজ্ঞ ওপেনার বোল্ড হয়েছেন। তাকে ১৩ রানে থামিয়েছেন ফারুকী।

রান আউটে পড়লো বাংলাদেশের প্রথম উইকেট

১৫৭ রানের মামুলি লক্ষ্যে শুরুটা প্রত্যাশা মতো হয়নি বাংলাদেশের। বরং অযথা রানের তাড়া দেখাতে গিয়ে পঞ্চম ওভারে প্রথম উইকেট হারিয়েছে। ফারুকীর পঞ্চম ওভারে পয়েন্টে বল ঠেলে শুরুতে রান নেওয়ার কল করেছিলেন লিটন। কিন্তু বল ছিল ফিল্ডারের হাতে। পরক্ষণে তানজিদকে ফেরার নির্দেশ দিলেও বেশি দেরি হয়ে গেছে। তানজিদ নিজেও ধীর গতিতে ফিরছিলেন। ততক্ষণে সরাসরি আঘাতে স্টাম্প ভাঙেন নাজিবউল্লাহ জাদরান।

আফগানিস্তান ৩৭.২ ওভারে ১৫৬/১০ (ফজল হক ফারুকী ০*; ইব্রাহিম জাদরান ২২, রহমত শাহ ১৮, হাশমতউল্লাহ শহীদী ১৮, রহমানউল্লাহ গুরবাজ ৪৭, নাজিবউল্লাহ জাদরান ৫, মোহাম্মদ নবী ৬, রশিদ খান ৯, আজমতউল্লাহ ওমরজাই ২২, মুজিব উর রহমান ১, নাভিন ০)

শুরুর ব্রেক থ্রুটাই এনে দিয়েছেন সাকিব।শুরুর ব্রেক থ্রুটাই এনে দিয়েছেন সাকিব।
আফগানদের ১৫৬ রানে গুটিয়ে দিয়েছে বাংলাদেশ

টস হেরে ব্যাট করতে নামলেও ১১২ রান পর্যন্ত ছিল ২ উইকেট। তার পর বাংলাদেশের বোলিং তোপে খেই হারায় আফগানদের ইনিংস। বিশ্বকাপে নিজেদের প্রথম ম্যাচে তাদের ১৫৬ রানে গুটিয়ে দিয়েছে সাকিব বাহিনী।

অবশ্য শুরুতে পেসাররা মোটেও সাফল্য পাননি। প্রথম ব্রেক থ্রুটাই এনে দেন অধিনায়ক সাকিব। দ্বিতীয় উইকেটটিও তুলে নেন তিনি। তার পর মূল সর্বনাশটা করেছেন মিরাজ-মোস্তাফিজ। দ্রুত সময়ে শহীদী ও গুরবাজকে আউট করে বাংলাদেশকে ম্যাচে ফেরান তারা। গুরবাজ যতক্ষণ ছিলেন রানের চাকা সচল রেখেছিলেন। কিন্তু ৪৭ রান করা এই ব্যাটার মোস্তাফিজের বলে ফিরতেই দৃশ্য বদলায় ইনিংসের। বাংলাদেশের বোলিং তোপে তার পর আফগানদের আর কেউ মাথা তুলে দাঁড়াতে পারেনি। নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারিয়েছে।

সফল ছিলেন দুই স্পিনার সাকিব আল হাসান ও মেহেদী হাসান মিরাজ। ২৫ রানে মিরাজ নিয়েছেন তিনটি। ৩০ রানে সমসংখ্যক উইকেট নেন অধিনায়ক সাকিব আল হাসানও। ৩৪ রানে দুটি নিয়েছেন শরিফুল। একটি করে নিয়েছেন তাসকিন আহমেদ ও মোস্তাফিজুর রহমান।

মিরাজের তৃতীয় শিকার মুজিব

৩৭তম ওভারে তৃতীয় উইকেট শিকার করেন মিরাজ। মুজিব উর রহমানকে দারুণ এক ডেলিভারিতে বোল্ড করেছেন।

শরিফুলের আঘাতে পড়লো অষ্টম উইকেট

শুরুতে না পারলেও শেষটায় উইকেট উৎসবে যোগ দিয়েছেন শরিফুল। বাংলাদেশের বোলিং তোপে আজমতউল্লাহ ওমরজাইও থিতু হতে পারেননি। শরিফুলের বলে বোল্ড হয়েছেন ২২ রানে।

রশিদকে ফেরালেন মিরাজ

নবীর আউটের পর পুরো নিয়ন্ত্রণ চলে আসে বাংলাদেশের হাতের মুঠোয়। তার পর দেখার অপেক্ষা ছিল লেজের দিকের ব্যাটাররা কতটা প্রতিরোধ গড়তে পারে। কিন্তু সেখানেও অপ্রতিরোধ্য বাংলাদেশ। কয়েকটি বাউন্ডারি মেরে রশিদ খান স্কোর দেড়শ ছাড়াতে ভূমিকা রাখলেও তাকে বোল্ড করেছেন মেহেদী হাসান মিরাজ। তার ঘূর্ণি বল ইনসাইড এজ হয়ে আঘাত করে স্টাম্পে। রশিদ ফেরার আগে করতে পেরেছেন ৯ রান।

তাসকিনের আঘাতে বোল্ড মোহাম্মদ নবী

প্রথম দিকে সাফল্য পাননি তাসকিন। আফগানদের চেপে ধরার মুহূর্তে ৩০তম ওভারে অবশেষে কাঙ্ক্ষিত সাফল্য পেয়েছেন। যার জ্বলে ওঠার সম্ভাবনা ছিল সেই মোহাম্মদ নবীকে মাত্র ৬ রানেই তাসকিন বোল্ড করেছেন। এই উইকেটে পুরো ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ চলে আসে বাংলাদেশের হাতে।

আফগানদের আরও বিপদে ফেললেন সাকিব

দ্রুত দুই উইকেট তুলে বাংলাদেশকে ম্যাচে ফিরিয়েছেন মিরাজ-মোস্তাফিজ। তাদের আরও চেপে ধরার মুহূর্তটা কাজে লাগিয়েছেন সাকিব। প্রতিষ্ঠিত জুটি ভাঙার পর বামহাতি স্পিনার এবার নতুন নামা নাজিবউল্লাহ জাদরানকে সাজঘরে পাঠিয়ে তৃতীয় উইকেট তুলে নিয়েছেন। সাকিবের লেংথ বলে বোল্ড হয়েছেন আফগান ব্যাটার। ফিরেছেন মাত্র ৫ রানে।

মিরাজ-সাকিবতিনটি উইকেট নিয়েছেন মিরাজ।
মিরাজ-মোস্তাফিজের আঘাতে চাপে আফগানিস্তান

পেসাররা সাফল্য পাননি। তবে প্রয়োজনের সময় হাত ঘুরিয়ে সাফল্য পাচ্ছেন স্পিনাররা। সাকিবের পর মেহেদী হাসান মিরাজের আঘাতে পড়েছে তৃতীয় উইকেট। তাতে অধিনায়ক হাশমতউল্লাহ শহীদী-রহমানউল্লাহ গুরবাজের জুটিও বেশিক্ষণ স্থায়ী হয়নি। মিরাজের বোলিংয়ে সেভাবে সুবিধা করতে পারছিলেন না শহীদী। মেরে খেলতে গিয়ে ক্যাচ তুলে দিয়েছেন। শহীদী ফেরার আগে ৩৮ বলে ১৮ রান করেছেন। তার ইনিংসে ছিল দুটি চার। তাকে আউট করার পরের ওভারে প্রান্ত আগলে খেলতে থাকা গুরবাজকে মোস্তাফিজ তালুবন্দি করালে মুহূর্তেই চাপে পড়ে যায় আফগানরা। কারণ, প্রান্ত আগলে রানের চাকা সচল রাখছিলেন তিনি। গুরবাজ ফেরার আগে ৬২ বলে ৪৭ রান করেছেন। তার ইনিংসে ছিল ৪টি চার ও ১টি ছয়।

সাকিবের দ্বিতীয় শিকার রহমত

৪৭ রানে পড়েছে আফগানদের প্রথম উইকেট। তার পরেও বাংলাদেশ আফগানদের চাপে ফেলার মতো অবস্থার সৃষ্টি করতে পারেনি। সাকিব অবশ্য রহমত-গুরবাজ জুটিকে টিকতে দেননি বেশিক্ষণ। বামহাতি স্পিনারের বলে সুইপ করতে গিয়ে টপ এজে ক্যাচ আউট হয়েছেন রহমত শাহ। লিটনের হাতে তালুবন্দি হওয়ার আগে ২৫ বলে ১৮ রান করেছেন তিনি। তাতে ছিল একটি চার। দ্বিতীয় উইকেটে এই জুটিতে যোগ হয়েছে ৩৬।

পাওয়ার প্লেতে আফগানিস্তানের ৫০

টস হেরে ব্যাট করতে নামলেও শুরুটা খারাপ ছিল না আফগানিস্তানের। ওপেনিং জুটিতে যোগ হয়েছে ৪৭ রান। সাকিব এসে ওপেনিং জুটি ভেঙে প্রতিপক্ষকে চাপে ফেলার চেষ্টা করেছেন। তার পরেও পাওয়ার প্লেতে এক উইকেট হারিয়ে ৫০ রান তুলেছে তারা।

সাকিবের উদযাপনওপেনিং জুটি ভেঙে সতীর্থদের সঙ্গে সাকিবের উদযাপন।
ওপেনিং জুটি ভাঙলেন সাকিব

তাসকিন-শরিফুল নতুন বলে শুরু করলেও আফগানদের ওপেনিং জুটিকে পরীক্ষায় ফেলতে পারছিলেন না। বরং দ্রুত রান তুলছিলেন গুরবাজ-জাদরান। শেষ পর্যন্ত সপ্তম ওভারে আক্রমণে আসেন সাকিব। অধিনায়ক হওয়ায় ব্রেক থ্রু এনে দেওয়ার কাজটা করেও দেখান নিজের দ্বিতীয় ওভারে। নবম ওভারে মাথা ব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়ানো এই জুটি ভাঙেন ওপেনার ইব্রাহিম জাদরানকে তানজিদের ক্যাচ বানিয়ে। সুইপ করতে গিয়ে জাদরান টপ এজে ২৫ বলে ২২ রানে ক্যাচ আউট হয়েছেন। তার ইনিংসে ছিল ৩টি চার ও ১টি ছয়।

দুই দিন আগে বিশ্বকাপ শুরু হলেও বাংলাদেশের মিশন শুরু হচ্ছে আজ। ভারতের ধর্মশালার হিমাচল প্রদেশ ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশন স্টেডিয়ামে টসও জিতেছে তারা। আফগানিস্তানকে শুরুতে ব্যাট করার আমন্ত্রণ জানিয়েছে। একাদশে বাংলাদেশ আজ তিন পেসার নিয়ে নামছে। সঙ্গে স্পিনার হিসেবে আছেন সাকিব, মিরাজ ও মাহমুদউল্লাহ।

টস জিতে সাকিব বলেছেন, ‘রান তাড়া করার জন্য এটা উপযুক্ত মাঠ। শুরুর দিকে পেসারদের ভালো সুবিধাও পাওয়ার কথা’

আফগান দলে দুই পেসার নাভিন আর ফারুকীসহ আছেন পেস বোলিং অলরাউন্ডার ওমরজাই। স্পিনার হিসেবে রশিদ, মুজিব, নবীরা তো আছেনই।

বাংলাদেশ একাদশ: লিটন দাস, তানজিদ হাসান, নাজমুল হোসেন শান্ত, মেহেদী হাসান মিরাজ, সাকিব আল হাসান, মুশফিকুর রহিম, তাওহীদ হৃদয়, মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ, তাসকিন আহমেদ, শরিফুল ইসলাম ও মোস্তাফিজুর রহমান।

আফগানিস্তান একাদশ: রহমানউল্লাহ গুরবাজ, ইব্রাহিম জাদরান, রহমত শাহ, হামশতমউল্লাহ শহীদী, মোহাম্মদ নবী, নাজিবউল্লাহ জাদরান, আজমতউল্লাহ ওমরজািই, রশিদ খান, মুজিব উর রহমান, নাভিন উল হক, ফজল হক ফারুকী।

পরিসংখ্যানে এগিয়ে বাংলাদেশ

আফগানদের চেয়ে অভিজ্ঞতায় এগিয়ে থাকলেও, শক্তির বিচারে দুই দলই প্রায় সমানে সমান। যদিও পরিসংখ্যানে অনেকখানি এগিয়ে বাংলাদেশ। ৫০ ওভারের ক্রিকেটে বাংলাদেশের বিপক্ষে আফগানদের ছয় জয়ের বিপরীতে বাংলাদেশ জিতেছে ৯ ম্যাচ। সবশেষ এশিয়া কাপে রশিদ-নবীদের হারিয়েছে সাকিবরা। তার আগে অবশ্য নবীদের কাছেই দেশের মাটিতে বাংলাদেশ সিরিজে হেরেছে!

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *