গাজীপুরের শ্রীপুরের কাওরাইদ ইউনিয়নের হয়দেবপুর গ্রামে বুধবার দুপুরে জমি সংক্রান্ত গ্রাম্য সালিসে প্রতিপক্ষের হামলায় মায়ের কোলে থাকা ফাহিতা নামের দুই বছর বয়সী এক শিশুকে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। এ সময় ওই শিশুর বাবা-মাও আহত হয়েছেন। এ সংক্রান্ত একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে।
নিহত শিশু ফাতিহা (২) শ্রীপুরের কাওরাইদ ইউনিয়নের হয়দেবপুর গ্রামের আব্দুস সাত্তারের মেয়ে। হামলায় লিয়াকত আলীর ছেলে শিশুর বাবা আব্দুস সাত্তার (৪০) ও তার স্ত্রী কুলছুম (২৪) আহত হয়েছেন।
৩৭ সেকেন্ডের ওই ভিডিওতে দেখা যায়, এক ব্যক্তি লাঠি হাতে কুলছুম বেগমের ওপর হামলা করছে। এসময় ওই লাঠির আঘাত শিশুটির মাথায় লাগলে শিশুসহ মা ও বাবা আহত হয়। পরে তাদের উদ্ধার করা হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানেই চিকিৎসাধীন অবস্থায় শিশুটির মৃত্যু হয়।
নিহত শিশুর দাদা লিয়াকত আলী জানান, দশ বছর যাবৎ তার চাচাতো ভাই লাল মিয়ার সঙ্গে জমি সংক্রান্ত বিরোধে আদালতে মামলা চলছিল। আদালতে মামলা চলমান অবস্থায় চাচাতো ভাইয়েরা জোরপূর্বক গ্রাম্য সালিসের আয়োজন করে। সালিসে কথা-কাটাকাটির এক পর্যায়ে লাল মিয়ারা আমাদের ওপর হামলা করে। হামলায় আমার ছেলে আব্দুস সাত্তার, তার স্ত্রী কুলসুম ও দুই বছরের শিশু নাতনি ফাতিহা গুরুতর আহত হয়। তাৎক্ষণিক তাদেরকে উদ্ধার করে শ্রীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স নিয়ে চিকিৎসা দেওয়া হয়। পরে বিকেল পৌনে চারটার দিকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ফাতিহা মারা যায়।
কাওরাইদ ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য মো. মমিনুল কাদের বলেন, দুই পক্ষের লোকজন নিয়ে সালিসে কথাবার্তা হচ্ছিল। এক পর্যায়ে লাল মিয়ার পরিবার লিয়াকত আলীর পরিবারের ওপর হামলা করে। এতে তিনজন গুরুতর আহত হলে তাদেরকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পাঠানো হয়। চিকিৎসাধীন অবস্থায় শিশুটির মৃত্যু হয়েছে।
শ্রীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক শারমিন আক্তার বলেন, দুপুর দেড়টার দিকে আব্দুস সাত্তার কুলসুম ও ফাতিহা আক্তার নামে তিনজনকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ফাতিহা মারা যায় এবং গুরুতর আহত দুইজনকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় উন্নত চিকিৎসার জন্য ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
শ্রীপুর মডেল থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল ফজল মোহাম্মদ নাসিম বলেন, হাসপাতাল থেকে নিহতের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহ গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দিন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। এ বিষয়ে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।