যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা নিষেধাজ্ঞার আওতায় গণমাধ্যমকে অন্তর্ভুক্ত করা ‘সঠিক সিদ্ধান্ত’ বলে মনে করছেন না পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম।
তিনি বলেন, ‘এখানে, আপনাদেরও একটা কথা আছে। আমরা আশা করি তারা এমন কোনো পদক্ষেপ নেবে না যা গণমাধ্যমের স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ করবে বা এর স্বাধীনতাকে সীমিত করবে।’
বৃহস্পতিবার এক সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
ঢাকায় নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাস কেন ভিসা নিষেধাজ্ঞার বিষয়ে কথা বলার সময় গণমাধ্যমের কথা উল্লেখ করেছেন তা মার্কিন প্রশাসন খতিয়ে দেখবে বলে আশা প্রকাশ করেন প্রতিমন্ত্রী।
তবে তিনি বলেন, এটি এমন কোনো বিষয় নয় যা সাধারণ মানুষকে উদ্বিগ্ন করবে।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ আশা করে, যুক্তরাষ্ট্রের নতুন ভিসা নীতি নির্বিচারে বা উদ্দেশ্যহীনভাবে প্রয়োগ করা হবে না।
যুক্তরাষ্ট্র বলেছে, বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক নির্বাচনকে ‘ক্ষুণ্ন’ করে এমন যেকোনো ব্যক্তির ক্ষেত্রে ভিসা নিষেধাজ্ঞা নীতি প্রযোজ্য হতে পারে।
মার্কিন দূতাবাসের মুখপাত্র ব্রায়ান শিলার এর আগে এক প্রশ্নের জবাবে ইউএনবিকে বলেন, ‘এর মধ্যে ভোট কারচুপি, ভোটারদের ভয় দেখানো, সহিংসতার মতো বিষয়গুলো থাকবে। এ ছাড়া রাজনৈতিক দল, ভোটার, সুশীল সমাজ বা গণমাধ্যমকে নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় অংশ নেয়া বা তাদের মতামত প্রকাশ থেকে বিরত রাখার জন্য পরিকল্পিত পদক্ষেপ অন্তর্ভুক্ত থাকতে পারে।’
সাংবাদিকরাও ভিসা নিষেধাজ্ঞার আওতায় আসতে পারেন কিনা- জানতে চাইলে তিনি এ মন্তব্য করেন।
বিষয়টি আরো স্পষ্ট করে মার্কিন দূতাবাস এক ফেসবুক পোস্টে বলেছে, ‘সরকারপন্থী, বিরোধী দল, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য, বিচার বিভাগের সদস্য বা গণমাধ্যমকর্মী নির্বিশেষে বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক নির্বাচন প্রক্রিয়াকে ক্ষুণ্ণ কারী যে কারোর বিরুদ্ধে ভারসাম্যপূর্ণভাবে ভিসা নিষেধাজ্ঞা নীতি প্রয়োগ করছি আমরা।’
দূতাবাসের মুখপাত্র বলেন, ভিসা নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হবে কি না- তা নির্ধারণের জন্য মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বাংলাদেশে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে দুর্বল করে দেয়া ব্যক্তিদের সম্পর্কে প্রতিটি ঘটনার বিশ্বাসযোগ্য তথ্যের বিস্তৃত, তথ্যবহুল ও পর্যালোচনার ওপর নির্ভর করে।
ভিসা নিষেধাজ্ঞার আওতায় বাংলাদেশে অবস্থানরত ব্যক্তিদের নাম বা সংখ্যা প্রকাশ করা হবে না বলেও জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।
মার্কিন দূতাবাসের মুখপাত্র ব্রায়ান শিলার ইউএনবিকে বলেন, ‘মার্কিন আইন অনুযায়ী ভিসা রেকর্ড গোপনীয়।’
তবে তিনি বলেন, এই নীতি ঘোষণার পর থেকে ঘটনাগুলো খুব নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করেছে মার্কিন সরকার।
ব্রায়ান শিলার বলেন, ‘তথ্য-উপাত্ত পর্যালোচনার পর আমরা আইন প্রয়োগকারী সংস্থা, ক্ষমতাসীন দল ও রাজনৈতিক বিরোধী দলের সদস্যদের ওপর ভিসা নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছি।’
চলতি বছরের মে মাসে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিনকেন বাংলাদেশের অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানের লক্ষ্যে অভিবাসন ও জাতীয়তা আইনের ২১২ (এ) (৩) (সি) (“৩সি”) ধারার অধীনে নতুন ভিসা নীতি ঘোষণা করেন। সূত্র : ইউএনবি