টঙ্গী: মঙ্গলবার(১৯ সেপ্টেম্বর) কেন্দ্রিয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে টঙ্গীতে অনুষ্ঠিত হয় বিএনপির সমাবেশ। এই সমাবেশে দাবীর প্রতি আগতদের দৃষ্টিভঙ্গির চেয়ে বেশী উচ্ছাস ছিল আসন্ন নির্বাচনে গাজীপুর-২ আসনে কে হবে বিএনপির প্রার্থী। সমাবেশে অশগ্রহনকারীরা ভাগে ভাগে বিভক্ত হয়ে শ্লোগান দিচ্ছিল এই মূহুর্তে দরকার উমুক সরকার। উমুক ভাইয়ের তুলনা কারো সাথে চলে না।
সমাবেশটি বৃষ্টির কারণে নির্ধাতি সময় বিকাল আড়াইটায় শুরু না হয়ে শুরু হয় সাড়ে ৩টায়। প্রধান অতিথির বক্তব্য শেষ হয় বিকাল সাড়ে ৫টায়। পুরো সময় জোড়ে থেমে থেমে ছিল বৃষ্টি। বৃষ্টির কারণে প্রধান অতিথির বক্তব্যের সময় লোক কমে যাওয়ায় ক্ষোভও ঝেড়েছেন প্রধান অতিথি বাবু গয়েশ^র রায়। শেষ পর্যন্ত লোক সমাবেশে অনেক কম কেন ছিল তা অনুন্ধানে জানা গেছে নানা উত্তর।
সরেজমিন দেখা যায়, সমাবেশ শুরুর আগেই মঞ্চে পালাক্রমে দলীয় এমপি প্রার্থীরা বড় বড় চেয়ারে বসে ছবি তুলছেন। ডাইসে গিয়ে মাইক্রোফোনের সামনে দাঁড়িয়ে ছবি তোলার হিড়িক পড়ে ছিল। ছবিগুলো তোলার সময় এবং ছবি ও ভিডিও করার সময় নাম ধরে শ্লোগান দিতে দেখা যায়। এই মুহূর্তে দরকার উমুক সরকার, এই মুহূর্তে দরকার উমুক ভাই, উমুক ভাইয়ের তুলনা কারো সাথে চলে না।
গাজীপুর-২ আসনটি গাজীপুর-টঙ্গী নিয়ে গঠিত। কোন প্রার্থী গাজীপুরের না টঙ্গীর তা নিয়েও প্রশ্ন দেখা দেয় এই আসনে। এই আসনে আঞ্চলিকতার প্রশ্ন একটি জটিল সমীকরণ। মঙ্গলবারের সমাবেশে যাদের নামে শ্লোগন দিয়ে প্রার্থী হিসেবে জানান দেয়া হয়েছে তাদের সংখ্যা এক ডজনেরও বেশী। যাদের নামে শ্লোগান হয়েছে তারা হলেন, টঙ্গী থেকে গাজীপুর মহানগর বিএনপির সাবেক সভাপতি, সাবেক এমপি আলহাজ¦ হাসান উদ্দিন সরকার, হাসান উদ্দিন সরকারের ভাই জাতীয়তাবাদী শ্রমিক দলের কেন্দ্রিয় সভাপতি সালাউদ্দিন সরকার, তাদের ভাতিজা গাজীপুর মহানগর বিএনপির সাবেক যুগ্ম সম্পাদক রাকিবুল ইসলাম পাপ্পু সরকার, কারাবন্দি বিএনপির নেতা নুরুল ইসলাম সরকারের ছেলে হাসান সরকারের ভাতিজা শাহনূর সরকার রনি, গাজীপুরের কাশিমপুর এলাকার বিএনপি মনোনয়ন প্রত্যাশী এমপি প্রার্থী গাজীপুর মহানগর বিএনপির সভাপতি শওকত হোসেন সরকার, গাজীপুরের সালনা এলাকার প্রার্থী বিএনপির প্রয়াত নেতা সাবেক মন্ত্রী অধ্যাপক এম এ মান্নানের ছেলে গাজীপুর মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এম মঞ্জুরুল করিম রনি, গাজীপুর সদরের বিএনপির কেন্দ্রিয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ডা: মাজহারুল আলম। প্রার্থী হিসেবে প্রচারণা আছে কিন্তু সমাবেশে আসেননি এমন আরো ৫/৭ জন প্রার্থী রয়েছেন। সব মিলিয়ে গাজীপুর-২ আসনে বিএনপির দলীয় প্রার্থী এক ডজনেরও বেশী।
মঙ্গলবারের সমাবেশ শুধু নয়, প্রায় প্রতিটি সভা সমাবেশে দলীয় কর্মসূচি থেকে প্রার্থী পরিচিতি অনেক বেশী আকারে উপস্থাপিত হয়। এছাড়া প্রতিদিন সকাল ও বিকেলে গাজীপুর বিএনপি অফিসে নানা অজুহাতে নেতা-কর্মীদের নিয়ে ছুতি তোলার হিড়িক রয়েছে। বিএনপি দলীয় এমপি প্রার্থী হিসেবে জানান দিতে এই আয়োজন বলেছে কর্মীরা। এগুলো ছাড়াও বিএনপি নেতারা আদালতে হাজিরা দিয়ে দলীয় অফিসে গিয়ে নেতা-কর্মীদের নিয়ে ছবি তোলে প্রার্থীতা জানান দিচ্ছেন।
এই সকল বিষয়ে যে সকল প্রার্থীদের নামে শ্লোগান হয় তাদের প্রত্যেকের বক্তব্য প্রায় একই। দল যদি নির্বাচনে অংশ নেয় তবে তারা প্রার্থী। তবে সবাই ধানের শীষের পক্ষে বলে দাবী তাদের।
এ দিকে গাজীপুর-২ আসনের সব জায়গায় বিএনপির এমপি প্রার্থীদের অসংখ্য পোষ্টার লক্ষ্য করা যায়। রাস্তার দুই পাশে আনাচে কানাচে দেয়ালে তোরণে প্রায় সব জায়গায় প্রার্থীরা মাঠে নেমে গেছে বলে প্রচারণা বিদ্যমান।
এ সকল বিষয়ে সাধারণ কর্মীরা বলছেন, দলীয় মনোনয়ন অনেকেই চাইবেন। দল যাকে দিবে তার পক্ষেই থাকব আমরা। দল অংশ গ্রহন করলে দেখা যাবে শেষ পর্যন্ত কে থাকে।