বিএনপিতে শকুন পড়েছে—– টঙ্গীতে গয়েশ্বর রায়

Slider গ্রাম বাংলা


টঙ্গী: বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য বাবু গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেছেন, বিএনপিতে শকুন পড়েছে। রাজনৈতিক বেচা-কেনার হাট শুরু হয়েছে। সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে। এখন আমাদের এক দফার আন্দোলন। এই আন্দোলনে সবাইকে ঝাপিয়ে পড়তে হবে।

মঙ্গলবার( ১৯ সেপ্টেম্বর) বিকেলে টংগীর কলেজ গেট এলাকায় বিএনপি নেতা সালাউদ্দিন সরকারের বাড়ির আঙিনায় অনুষ্ঠিত গাজীপুর মহানগর বিএনপি আয়োজিত জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে গয়েশ^র রায় এসব কথা বলেন।

গয়েশর বলেন, বাংলাদেশের মানুষ এখন আর শেখ হাসিনাকে বিশ্বাস করেনা। কারণ বাংলাদেশের ১৫ লাখ কোটি টাকা পাচার হয়েছে। হাসিনার সাথে যারা আছে তারা এসব পাচার করেছে। দেশে অর্থনৈতিক দশ নেমেছে। এ অবস্থা চলতে থাকলে মনুষ মানুষের মাথা খাবে। সরকারি গোয়েন্দা সংস্থা ও আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর প্রতি আহবান জানিয়ে তিনি বলেন, আপনারা অবৈধ সরকারের কথা শুনছেন। মানুষের বুকে গুলি করছেন। জনগন আর এই সরকারকে মানবে না। আগামীতে কোন সভা সমাবেশে সরকারের অনুমিত নেয়া হবে না। ১৩/১৪ বছর কিংবা যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত আসামী জামিন পায় আর খালেদা জিয়া জামিন পায় না। খালেদা জিয়া গুরুতর অসুস্থ দাবী করে তিনি বলেন, খালেদা জিয়া কিছু হলে এই সরকারকে দায় নিতে হবে।

গয়েশ^র বলেন, সারা বিশ্ব আমাদের দেশে সকল দলের অংশগ্রহণে একটা সুষ্ঠু নির্বাচন চায়। নির্বাচনে জনগন সিদ্ধান্ত নিবে কে সরকার হবে। জনগন সিদ্ধান্ত নিবে কাকে সরকার বানাবেন। তিনি বলেন ডু অর ডাই। হয় বাঁচবো, না হয় মরে যাব। লক্ষ্য একটাই শেখ হাসিনা সরকারের পতন।
তিনি আরো বলেন, প্রধানমন্ত্রী বিদেশে গেছে তার ছেলে মেয়েদের জন্য। তার ছেলে মেয়েরা বিদেশে যেতে পারে না। তার ছেলে মেয়েদের সম্পদ বাজেয়াপ্ত হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী ছেলে মেয়েদের জন্য বিদেশে গেছেন।

প্রধান বিচারপতির সমালোচনা করে গয়েশ^র বলেন, ওবায়দুল হাসান সাহেব যখন হাইকোর্টের বিচারক ছিলেন তখন খালেদা জিয়ার জামিন দেন নি বরং তিনি বলেছিলেন জামিন দেয়া না দেয়া আমার বিষয়। আদালতে সাত দিন পর পর যাওয়াকে তিনি স্কুলে লেখাপড়ার সাথে তুলনা করে বলেন, স্কুলে যেমন যেতে হয় তেমনি আমাদের নিয়মিত আদালতে যেতে হয়। সরকার নিজে নিজেই পড়ে যাবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, সময় হয়ে গেছে। সরকার পড়ে যাবে। তাই এখনি উচিত খালেদা জিয়াকে নি:শর্ত মুক্তি দিয়ে নিরপেক্ষ সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করা।
বৃষ্টির জন্য সমাবেশে দেরীতে শুরু হওয়ায় অনেক লোকজন চলে যাওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করে এই নেতা বলেন, ঝড় বৃষ্টিতেই চার ভাগের তিন ভাগ লোক চলে গেলেন। আপনার সরকার পতনের আন্দোলন করবেন কি করে। তাই সবাইকে যে কোন পরিস্থিতিতে মাঠে থাকতে হবে।
প্রধান বক্তার বক্তব্য দিতে গিয়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, বলেন, এক দফার আন্দোলনে শুরু হয়েছে। এক দফা বলতে- শেখ হাসিনার পতন, স্বৈরাচারীর পতন, নিরপেক্ষ সরকারের প্রবর্তণ, নির্বাচন কমিশন বাতিল, খালেদা জিয়ার মুক্তি। তিনি বলেন, ভোট চুরের দিন শেষ, জনগণের বাংলাদেশ।

তিনি আরো বলেন, সেলফি দিয়ে কাজ হবেনা। আমি সেলফি দেখে খুশি হয়েছি। একটা দেশের প্রধানমন্ত্রীকে কত কষ্ট করে ছবি উঠাতে হয়েছে। একটা দল কত দেওলিয়া হলে সেলফি উঠাতে চায়।

বিএনপির কেন্দ্রিয় নির্বাহী কমিটির সদস্য হাসান উদ্দিন সরকার আদম তমিজী হকের বিষয় উল্লেখ করে বলেন, পত্রিকায় দেখছেন না, কি উঠতেছে। গাজীপুরে আমি অনেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান করেছিলাম। আজ সব ধ্বংস হয়ে গেছে। একজন মন্ত্রীর নামে সব নামকরণ হয়ে গেছে। তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, আপনারা সারা বাংলাদেশে নামকরণ করে ফেলেন।

বিএনপির আরেক নির্বাহী কমিটির সদস্য ডা: মাহহারুল আলম বলেন, ১৮৫৭ সালের সিপাহী বিপ্লবের মত জেগে উঠতে হবে। এই অবৈধ সরকারের পতন ছাড়া ঘরে ফিরব না।

বিএনপির সাবেক কেন্দ্রিয় সাংগঠনিক সম্পাদক ফজলুল হক মিলন বলেন, মুরাদকে নিয়ে কথা বলেছিলাম। মুরাদ যে মন্ত্রনালয়ের প্রতিমন্ত্রী ছিলেন সে মন্ত্রনালয়ের মন্ত্রী মুরাদের গুরু হাছান মাহমুদ। তারা তো নারীদের নিয়ে কথা বলবেই। অথচ সাম্প্রতিক সময়ে কত কোলাকোলি আমরা দেখছি। কিন্তু কিছু বলি না।

সুলতান সালাউদ্দিন টুুকু বলেন, আমাদের এক দফা দাবী হল এই সরকারের পদত্যাগ। তিনি সবাইকে দিয়ে শ্লোগান ধরিয়ে বলেন, চোর চোর বিশ^ চোর। শেখ হাসিনা ভোট চোর।

গাজীপুর মহানগর বিএনপির সভাপতি শওকত হোসেন সরকারের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক এম মঞ্জুরুল করিম রনির সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত সমাবেশে আরো বক্তব্য রাখেন, বিএনপি কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সাবেক এমপি হাসান উদ্দিন সরকর বলেন, বিএনপির কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক এডভোকেট সালাম আজাদ, সহ সাংগঠনিক সম্পাদক বেনজির আহমেদ টিটু, যুব দলের কেন্দ্রীয় সভাপতি সুলতান সালাউদ্দিন টুকু গাজীপুর জেলা বিএনপির সভাপতি ফজলুল হক মিলন, বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ডা: মাজহারুল আলম, কাজী ছাইদুল আলম বাবুল ও জাতীয়তাবাদী শ্রমিক দলের কেন্দ্রীয় সভাপতি সালাউদ্দিন সরকার প্রমূখ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *