দরপত্রের স্পেসিফিকেশন অনুযায়ী মাঝারি আকারের একটি প্লাস্টিকের প্যাডেলযুক্ত ময়লা ফেলার ঝুড়ি (প্যাডেল ডাস্টবিন) কেনার কথা ৩৩৮ টাকায়; কিন্তু একেকটি ডাস্টবিন কেনা হয়েছে ১৩ হাজার টাকা দরে। একইভাবে বাড়াতি দাম দেখিয়ে ৪৮৬ টাকার প্রতিটি হ্যাকসো ফ্রেম (ধাতু কাটার করাত) কেনা হয়েছে ৩ হাজার ৪৫০ টাকা দরে। প্রতিটি স্লাই রেঞ্চ কেনার কথা ৮৭৮ টাকায়; কিন্তু কেনা হয়েছে ৪ হাজার ৪৫০ টাকা দরে। একই উপায়ে ৩৫০ টাকার একেকটি কোদাল কেনা হয়েছে ২ হাজার টাকায়, ৩১৩ টাকার বালতি ১ হাজার ৯০০ টাকায়, ২০০ টাকার তালা ৫ হাজার ৬০০ টাকায় এবং ১ হাজার ৬৫০ টাকার পর্দা ১৮ হাজার টাকায় কেনা হয়েছে। কয়েকটি প্যাকেজে কাল্পনিক দাম দেখিয়ে এরকম অনেক সুরক্ষাপণ্য (কনজারভেন্সি গুডস) ক্রয়ের নামে এই তেলেসমাতি কেনাকাটা করেছে বাংলাদেশ রেলওয়ের পশ্চিমাঞ্চল কর্তৃপক্ষ। ঠিকাদার ও সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের যোগাসাজশে হাতিয়ে নেওয়া হয়েছে কোটি কোটি টাকা।
পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের ২০১৮-১৯ অর্থবছরের কেনাকাটায় এই অনিয়ম ও দুর্নীতির চিত্র উঠে এসেছে মহাহিসাব নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রকের কার্যালয়ের প্রতিবেদনে। গত বছরের ২২ নভেম্বর অডিট প্রতিবেদন রাষ্ট্রপতির কাছে দাখিল করা হয়, যার একটি কপি সম্প্রতি দৈনিক আমাদের সময়ে আসে। অডিট প্রতিবেদনে সরকারের আর্থিক ক্ষতির জন্য দায়-দায়িত্ব নির্ধারণ করে ক্ষতির টাকা রাষ্ট্রীয় কোষগারে জমার সুপারিশ করা হয়েছে। তবে ঘটনা সংঘটিত হওয়ার চার বছর পর অডিট প্রতিবেদন তৈরি হওয়ায় এর কার্যকরিতা নিয়েও প্রশ্ন রয়েছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ওই সময়ের মধ্যে পশ্চিমাঞ্চল রেলের মহাব্যবস্থাপক হিসেবে দায়িত্ব পালনকারী কর্মকর্তাদের কেউই চাকরিতে নেই; অবসরে চলে গেছেন। একজন অবসর নিয়েই কানাডায় চলে গেছেন। এ ছাড়া তাদের পরিচালিত দপ্তরগুলোর সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারাও যে যার মতো বদলি হয়ে গেছেন কিংবা পদোন্নতি পেয়েছেন। তবে বর্তমান মহাব্যবস্থাপক এটিকে ‘দুর্নীতি’ বলতে নারাজ।
প্রতিবেদনটি ঘেঁটে দেখা গেছে, পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের সরঞ্জাম নিয়ন্ত্রকের দপ্তর, প্রধান মেডিক্যাল কর্মকর্তার (সিএমও) দপ্তর, প্রধান বাণিজ্যিক ব্যবস্থাপকের (সিসিএম) দপ্তর, লালমনিরহাট সহকারী যন্ত্রপ্রকৌশলীর দপ্তর, ডিটিএস লালমনিরহাট দপ্তর ও ডিসিও পাকশী কার্যালয়ের অধীনে আলাদা আলাদা প্যাকেজে এসব সুরক্ষাসামগ্রী কয়েকগুণ বেশি দামে কেনা হয়। কোনো ক্ষেত্রে মালামাল না কিনেও খরচ দেখানো হয়েছে বলে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।
প্রতিবেদনে দেখা যায়- রেলের পশ্চিমাঞ্চল সরঞ্জাম নিয়ন্ত্রকের দপ্তরের অধীনে ৮৮ লাখ ১১ হাজার টাকা মূল্যের মালামাল কেনা হয়েছে দুই কেটি টাকায়। এই প্যাকেজে এক কোটি ১১ লাখ ৮৮ হাজার টাকা লোপাট হয়েছে। কেনাকাটার নথিপত্র ঘেঁটে দেখা দেখা গেছে, প্রতিটি কাটা কোদাল ৩৫০ টাকায় কেনার কথা; কিন্তু কেনা হয়েছে ১ হাজার ৬৯৮ টাকায়। এভাবে ৪৩৮ টাকার বেলচা ১ হাজার ৫৩৮ টাকায়, ৩৫০ টাকার কোদাল ১ হাজার ৯৯৪ টাকায়, ৭৫ টাকার নিড়ানি ৬৯০ টাকায়, ৭৫ টাকার ল্যাট্রিন ব্রাশ ১৪৮ টাকায়, ৩১৩ টাকার বালতি ১ হাজার ৮৯৩ টাকায় এবং ৫৮ টাকা কেজি দরের ব্লিচিং পাউডার ২৭৪ টাকায়, ২০ টাকার বল সাবান ২৮৯ টাকায় এবং ৮১ টাকা লিটারের ডি-অয়েল ২৭৪ টাকায় কেনা হয়েছে। অতিরিক্ত দর দেখিয়ে কেনা হয়েছে এলইডি ইলেকট্রিক চার্জেবল সিগন্যাল লাইট ও ফ্লাশ। এই সরঞ্জামের দাম ৫২৫ টাকা; কিন্তু কেনা হয়েছে ১৯৪৯ টাকা দরে।
একই ধরনের দুর্নীতি হয়েছে পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের চিফ মেডিক্যাল অফিসারের (সিএমও) কার্যালয়েও। ফিনাইল ভিম ও ব্লিচিং পাউডার কে-অয়েল, ডি-অয়েল এবং হারপিক কেনাতে এক কোটি ১১ লাখ ৬৬ হাজার টাকা তসরুপ হয়েছে। প্রতিটি ভিজিটর চেয়ার কেনার কথা ৬ হাজার ৮৫০ টাকায়; কিন্তু কেনা হয়েছে ১৬ হাজার ৮৭০ টাকায়। এভাবে ২০টি ভিজিটিং চেয়ার কেনায় দুই লাখ ৯০০ টাকা হাতিয়ে নেওয়া হয়েছে। কাল্পনিক মূল্য নির্ধারণ করে আইপিএস কেনার নামে প্রায় ২৫ লাখ টাকা তসরুপ করা হয়েছে।
চিফ কমার্শিয়াল ম্যানেজারের (সিসিএম) কার্যালয়ের জন্য দুটি আইপিএস কেনা হয়। একেকটি আইপিএসের দাম পড়ার কথা এক লাখ ২৩ হাজার ৪৩৫ টাকা করে; কিন্তু দাম পরিশোধ করা হয়েছে দুই লাখ ৪৭ হাজার ৯৯৯ টাকা করে। দুটি আইপিএস কিনতে লোপাট হয়েছে আড়াই লাখ টাকা।
পশ্চিমাঞ্চল রেলের প্রধান যন্ত্রপ্রকৌশলীর কার্যালয়ের অধীনে লালমনিরহাট সহকারী যন্ত্রপ্রকৌশলীর (সিঅ্যান্ডডব্লিউ) দপ্তরে টুলস এবং ফটোকপিয়ার মেশিন কেনার জন্য ২০১৮ সালের ৪ ডিসেম্বর ঢাকার পূর্ব রামপুরার মেসার্স ইসলাম অ্যান্ড কোং নামে একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে চুক্তি করা হয়। প্রতিবেদনে দেখা যায়, প্রতিটি হ্যাকসো ফ্রেমের দাম হওয়ার কথা মাত্র ৪৮৬ টাকা; কিন্তু কেনা হয়েছে ৩ হাজার ৪৫০ টাকায়। প্রতিটি আট ইঞ্চি স্লাই রেঞ্চের দাম পড়ার কথা ৮৭৮ টাকা; কিন্তু কেনা হয় ৪ হাজার ৪৫০ টাকা দরে। এভাবে এ খাতে অতিরিক্ত ৫ লাখ ১ হাজার ৭২৫ টাকা ব্যয় করা হয়েছে।
ডিটিএস লালমনিরহাট কার্যালয়েও উচ্চমূল্যে ডাস্টবিন কেনা হয়েছে। মুনাফা, কর ও ভ্যাটসহ একেকটি প্যাডেল ডাস্টবিন ৩৩৮ টাকায় কেনার কথা। ৪২ ইঞ্চি উঁচু ও ২২ ইঞ্চি প্রস্থের ২০০টি প্যাডেল ডাস্টবিন সরবরাহে মেসার্স মডার্ন ট্রেডার্স নামে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে ২০১৯ সালের ১০ ফেব্রুয়ারি চুক্তি করা হয়। চুক্তি মোতাবেক প্রতিটি ডাস্টবিনের দাম ধরা হয় ৯ হাজার ৮৪৮ টাকা করে। এভাবে ২০০টি ডাস্টবিন কিনতে প্রকৃত খরচের চেয়ে অতিরিক্ত ১৯ লাখ টাকা হাতিয়ে নেওয়া হয়েছে।
ডিটিসি লালমনিরহাট বিভাগের বিভিন্ন লেভেল ক্রসিং গেটের জন্য নানা ধরনের মালামাল কেনা হয়। বদনা, বালতি, খুরপি, খুন্তি ও শিকল কিনতে ৮ লাখ ৫৪ হাজার ৯৫০ টাকা তসরুপ হয়েছে। এসব মালামাল সরবরাহ করেছে মেসার্স মডার্ন ট্রেডার্স। এ ছাড়া এ দপ্তরের জন্য আইপিএস কেনাকাটাতেও লোপাট করা হয়েছে সরকারি অর্থ। এক লাখ ৭৬ হাজার ৪২৫ টাকার আইপিএস কেনা হয়েছে চার লাখ ৭৪ হাজার ৯৯০ টাকা করে। এভাবে ১৩টি আইপিএস কেনার নামে অতিরিক্ত দাম ধরে পকেটে ভরা হয়েছে ১৮ লাখ ৯৪ হাজার টাকা। অডিট আপত্তির জবাবে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা লিখিতভাবে বলেছেন, ‘সর্বোত্তম সেবা প্রদানের জন্য বাজার থেকে সর্বোচ্চমানের পণ্য কেনা হয়েছে। এজন্য প্রচলিত বাজারমূল্যের তুলনায় এসব পণ্যের দাম বেশি।’ তবে রেল কর্মকর্তাদের এই যুক্তি গ্রহণ করা হয়নি প্রতিবেদনে।
ডিসিও পাকশী কার্যালয়ের কেনাকাটার অডিট প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০১৮-১৯ অর্থবছরে উন্নতমানের ১১৫ ইঞ্চি সাইজের ৫০টি ভিআইপি পর্দা কেনার জন্য ২০১৯ সালের ২০ ফেব্রুয়ারি চুক্তি করা হয় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে। চুক্তিতে প্রতি পিস পর্দার দাম ধরা হয় ১৭ হাজার ৯৮৭ টাকা। অথচ ঠিকাদারের লভ্যাংশ, কর ও ভ্যাটসহ প্রতি পিস পর্দার দাম পড়ার কথা মাত্র ১ হাজার ৬৫১টাকা। ৪২৬টি পর্দা কিনতে এভাবে অতিরিক্তি দাম দেখিয়ে ৪৪ লাখ ৪১ হাজার ৩৩০ টাকা পকেটে ভরেছেন সংশ্লিষ্টরা।
২০১৯ সালের ফেব্রুয়ারি থেকে মে মাসের মধ্যে ৩০০টি ডাস্টবিন কেনা হয়। অডিটে ধরা পড়েছে, প্রকৃত বাজারমূল্য, মুনাফা, কর ও ভ্যাটসহ প্রতিটি ডাস্টবিন কিনতে খরচ পড়ার কথা মাত্র ৭৮০ টাকা করে; কিন্তু ৫০টি ডাস্টবিন কেনা হয়েছে ১৩ হাজার টাকা দরে। আর বাকি ২৫০টি কেনা হয় ৯ হাজার টাকা দরে। ফলে ৩০০টি ডাস্টবিন কিনতে অতিরিক্ত ২৬ লাখ ৬৩ হাজার টাকা খরচ দেখানো হয়েছে। আইপিএস কেনার টাকা লোপাট হয়েছে ডিসিও পাকশী কার্যালয়েও। এক লাখ ২৩ হাজার টাকা মূল্যের আইপিএস কেনা হয় দুই লাখ ৯৯ হাজার টাকায়। এভাবে এখানে দুটি আইপিএস কিনতে অতিরিক্ত সাড়ে তিন লাখ টাকা খরচ দেখানো হয়।
প্রতিবেদনে আরও দেখা যায়, ডিসিও পাকশী বিভাগের বিভিন্ন স্টেশনে অবস্থিত লেভেল ক্রসিং গেটে ব্যবহারের জন্য ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে ২০১৮ সালের ১৬ এপ্রিল চুক্তি করা হয়। এ প্যাকেজে অন্যান্য পণ্যের মতো ১৯৫ টাকার তালা ৫ হাজার ৫৯০ টাকা দরে ২০০টি, ২০৭ টাকার হাতঝা-া ১ হাজার ৪৪০ টাকা দরে ৩০০টি এবং ৬৫ টাকার বাঁশি ৪১৫ টাকা দরে ২০০টি কেনা হয়েছে। এভাবে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে অতিরিক্ত দাম পরিশোধ দেখিয়ে ১৮ লাখ ১৮ হাজার টাকা লোপাট করা হয়েছে।
ডিসিও পাকশী কার্যালয় প্রাক্কলনে কাল্পনিক মূল্য নির্ধারণ করে ৫০০টি পাপোশ কেনার নামে ৫ লাখ ৪৩ হাজার টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে প্রতিটি পাপোশ ৩৯০ টাকা দরে কেনার কথা; কিন্তু কেনা হয়েছে ১ হাজার ৪৭৬ টাকা দরে। এই কার্যালয়ে প্লাস্টিকের হুইল ডাস্টবিন কেনাকাটাতেও সরকারি অর্থ হরিলুট হয়েছে। বাজারমূল্যে দাম পড়ার কথা ৬ হাজার ১১০ টাকা; কিন্তু ১২ হাজার ৯৭৬ টাকা দরে ৩০টি ও ৯ হাজার ৮৯৯ টাকা দরে ১২৫টি হুইল ডাস্টবিন কেনা হয়। ১৫৫টি ডাস্টবিন কিনতেই অতিরিক্ত খরচে দেখিয়ে ৬ লাখ ৭৯ হাজার টাকা সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।
২০১৯ সালে এই দপ্তরে উন্নতমানের মাইল্ড স্টিলের চেয়ার কেনায়ও প্রায় পৌনে এক কোটি টাকা তসরুপ করা হয়েছে বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়। স্পেসিফিকেশন অনুযায়ী প্রতিটি চেয়ার কেনার কথা ১৫ হাজার ৬০০ টাকা দরে; কিন্তু একেকটি কেনা হয়েছে ৫৭ হাজার ৪৯২ টাকা থেকে ৫৭ হাজার ৭৫০ টাকা পর্যন্ত দরে। এভাবে ১৭৫টি চেয়ার কিনতে অতিরিক্ত ৭৩ লাখ ৫৮ হাজার টাকা তুলে নেওয়া হয়। ডিসিও পাকশী বিভাগের জন্য ২০১৮ সালে ৫০টি অটবি চেয়ার কেনা হয়। প্রতিটি চেয়ারের দাম ১৪ হাজার ৫৮৬ টাকা হওয়ার কথা; কিন্তু প্রতিটি কেনা হয়েছে ৪৯ হাজার ৪৭০টাকা দরে।
অডিট প্রতিবেদনের ১৬ নম্বর অনুচ্ছেদে দেখা যায়- রেলওয়ের পশ্চিমাঞ্চলের (রাজশাহী) নানা ধরনের সরঞ্জাম কেনাকাটায় সাড়ে ৫ কোটি টাকার দুর্র্নীতি হয়েছে। এর মধ্যে পাকশী বিভাগীয় বৈদ্যুতিক প্রকৌশলীর কার্যালয়ের উদ্যোগে ২০১৮-১৯ অর্থবছরে বাজারদরের চেয়ে অতিক্তি দর দেখিয়ে ৫ লাখ ২৭ হাজার ৪৫৫ টাকায় ফায়ার এক্সটিংগুইশার কেনা ও রিফিল করা হয়। কয়েকগুণ বেশি টাকায় রেফ্রিজারেটরের গ্যাস কিনে অতিরিক্ত বিল নেওয়া হয়েছে ৫ লাখ ১৬ হাজার ৬২৩ টাকা।
জানা গেছে, ২০১৮-১৯ অর্থবছরের মধ্যে পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের মহাব্যবস্থাপক হিসেবে দায়িত্বে ছিলেন- মজিবুর রহমান, লুৎফর রহমান ও খন্দকার শহিদুল ইসলাম। তাদের সময়েই বিভিন্ন দপ্তরে এসব অনিয়ম ও দুর্র্নীতি হয়েছে। তবে তারা এখন কেউই চারকরিতে নেই; অবসর নিয়েছেন। এদের মধ্যে মজিবুর রহমান মারা গেছেন, লুৎফর রহমান গুরুতর অসুস্থ এবং খন্দকার শহিদুল ইসলাম কানাডায়। এ কারণে তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।
তবে যোগাযোগ করা হলে বর্তমান মহাব্যবস্থাপক অসীম কুমার তালুকদার বলেন, ‘এটিকে আমি এখনো দুর্নীতি বলতে চাই না। অনিয়ম হতে পারে। অডিট আপত্তি সংসদীয় কমিটিতে উঠলে আমরা ব্রডশিট আকারে জবাব দেব। এর পর পিএ কমিটি সিদ্ধান্ত নেবে। কেউ দোষী প্রমাণ হলে তার পেনশন থেকে ক্ষতিপূরণের টাকা কেটে নেওয়া হবে অথবা বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
তবে বেসরকারি গবেষণা সংস্থা সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) রাজশাহী বিভাগীয় কমিটির সভাপতি আহমদ সফিউদ্দিন আমাদের সময়কে বলেন, সামাজিকভাবে দুর্নীতির রাহুগ্রাস এমনভাবে বিস্তৃত হয়েছে যে, শতশত কোটি টাকার দুর্নীতিরও সুরাহা হচ্ছে না। এর ছাপ পড়ছে সর্বনিম্ন পর্যায়েও। দুর্নীতি নিয়ন্ত্রণ করতে যে দুই-চারটি উদাহরণ তৈরি হবে, অন্যরা ভয় পাবে- সেটিও উঠে গেছে। দুর্নীতি করলে কোনো দিন না কোনো দিন জবাবদিহি করতে হবে- এই ভয়টাও যদি থাকে, তা হলে লাগাম টেনে ধরা সম্ভব।’