সাধারণত কোনো ওয়ানডে ম্যাচে বোলিং পক্ষে শুরু ও শেষের দিকের দায়িত্ব সামলান পেসাররা। মাঝখানে রানের লাগাম টানার সঙ্গে উইকেট এনে দেয়ার দায়িত্ব থাকে স্পিনারদের। খেলা ভারতীয় উপমহাদেশে হলে সেটি যেন আরও প্রাসঙ্গিক। এশিয়া কাপে ভারত-পাকিস্তান মহারণে পাকিস্তানের পেসাররা তাদের ‘দায়িত্ব’ সূচারুভাবে পালন করতে পারলেও ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছেন স্পিনাররা।
এশিয়া কাপে নিজেদের দ্বিতীয় ম্যাচে ভারতকে নির্ধারিত ৫০ ওভারের ৭ বল আগেই ২৬৬ রানে অলআউট করে পাকিস্তান। সবগুলো উইকেটই নেন পেসাররা, শাহিন শাহ ৪টি এবং হারিস রউফ ও নাসিম শাহ ৩টি করে।
পাকিস্তানের স্পিনারদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি, ৯ ওভার করেছেন শাদাব খান। ৫৭ রানের বিনিময়ে কোনো উইকেট পাননি এই লেগ স্পিনার। ৮ ওভারে ৫৫ রান দিয়েছেন মোহাম্মদ নওয়াজ। দুইজনের ইকোনমিই ছয়ের ওপরে। অন্যদিকে শাহিন ও নাসিমের ইকোনমি ছিল চারের আশেপাশে।
স্পিনাররা লাগাম টানতে না পারাতেই মাঝের ওভারে দুর্দান্ত ব্যাটিং করে ভারত। ১৫ ওভার থেকে ৪০ ওভার পর্যন্ত ১৫০ বলে ১৪৯ রান করে দলটি, হারায় মাত্র ১ উইকেট।
এদিন ভারতের ইনিংসের ৪ ওভার ২ বল খেলা হতেই নামে বৃষ্টি, রান তখন বিনা উইকেটে ১৫। বৃষ্টির কারণে প্রায় আধা ঘণ্টা খেলা বন্ধ থাকার পর আবারও খেলা শুরু হয়। তবে কোনো ওভার কাটা যায়নি। ভেজা পিচে খেলতে নেমেই শাহীন আফ্রিদির তোপের মুখে পড়ে ভারত। তার আগুনে বোলিংয়ে উইকেটে টিকতে পারেননি ভারত অধিনায়ক রোহিত শর্মা এবং দলের সেরা ব্যাটার বিরাট কোহলি।
পঞ্চম ওভারের শেষ বলে দলীয় ১৫ রানের মাথায় শাহীনের দুর্দান্ত বলে ব্যাটের কানায় লেগে বোল্ড হন রোহিত (১১)। সপ্তম ওভারে এসে আবারও শাহীনের আঘাত। ২৭ রানের মাথায় বিরাট কোহলিকেও (৫) বোল্ড করেন শাহীন। দশম ওভারে আবারও ভারতীয় শিবিরে আঘাত। ঘুরে দাঁড়ানোর ইঙ্গিত দেওয়া শ্রেয়াস আইয়ারকে ফেরান হারিস রউফ। ৯ বলে ১৪ রান করা আইয়ারকে মিডউইকেটে ক্যাচে পরিণত করেন ফখর জামান।
আবহাওয়ার পূর্বাভাস আগেই বলা হয়েছিল এই ম্যাচে বৃষ্টির বাধা আসবে। সেটিই হয়েছে। ১২তম ওভারে দুইটি বল হতেই আবারও হানা দেয় বৃষ্টি। তবে বেশিক্ষণ থাকেনি, ২০ মিনিট পরই খেলা শুরু হয়। কিছুক্ষণ পর আবারও হারিসের আঘাত। ১৫তম ওভারের প্রথম বলে উইকেটে টিকে থাকতে সংগ্রাম করা গিলকে ফেরান তিনি। ৩২ বলে ১০ রান করা গিলও আউট হন রোহিতের মতো, ব্যাটের কানায় লেগে সরাসরি স্টাম্পে। এরপরই জুটি বাধেন ইশান ও পান্ডিয়া। মাত্র ১৪০ বল থেকে ১৬৮ যোগ করেন এই দুজন। ২০৪ রানের মাথায় হারিসের বলে ফেরেন ইশান। যাওয়ার আগে ৮১ বলে ৯ চার ও ২ ছক্কায় ৮২ রান করেন তিনি।
এরপর ২৩৯ রানের মাথায় ফেরেন ৯০ বলে ৭ চার ও ১ ছক্কায় ৮৭ রান করা হার্দিক। শাহীন শাহ আফ্রিদির বলে ক্যাচ তুলে দেন এই ব্যাটার। বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি জাদেজাও। ২৪২ রানের মাথায় তাকে ফেরান শাহীনই। তার পরের ওভারেই শার্দূলকে ফেরান নাসিম শাহ। শেষের দুই ব্যাটার কুলদ্বীপ যাদব এবং জাসপ্রিত বুমরাহকেও নিজের শিকারে পরিণত করেন নাসিম।
শ্রীলংকার পাল্লেকেলে স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত হচ্ছে ‘এ’ গ্রুপের এই ম্যাচ। টুর্নামেন্টে পাকিস্তানের এটি দ্বিতীয় ম্যাচ। প্রথম ম্যাচে বড় ব্যবধানে তারা হারিয়েছে নেপালকে। অন্যদিকে আসরের প্রথম ম্যাচে পাকিস্তানের বিপক্ষে খেলতে নেমেছে রোহিত শর্মার দল।