বহুল প্রতীক্ষিত ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের একাংশ যানবাহন চলাচলের জন্য খুলে দেওয়া হচ্ছে আজ শনিবার। এর মধ্য দিয়ে সড়ক পরিবহনে নতুন মাত্রা পাচ্ছে বাংলাদেশ। বিকেল ৪টায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এক্সপ্রেসওয়েটির হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কাওলা থেকে ফার্মগেট অংশ যানচলাচলের জন্য উদ্বোধন করবেন।
উদ্বোধনের পর বিমানবন্দর প্রান্তে টোল দিয়ে তিনি এ সড়কে উঠবেন। এরপর তেজগাঁও কলেজের সামনের র্যাম্প দিয়ে নেমে তিনি যোগ দেবেন পুরনো বাণিজ্যমেলার সুধী সমাবেশে।
বিভিন্ন জায়গা থেকে ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে ওঠা যাবে এবং নামা যাবে। যানজট পেরিয়ে একবার উঠতে পারলে খুব কম সময়ে পৌঁছে যাওয়া যাবে ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের আরেক প্রান্তে।
যারা ফার্মগেট, ধানমন্ডি, মোহাম্মদপুর, কাঁঠালবাগান, গ্রিনরোড অথবা শাহবাগ, সেগুনবাগিচা ও পুরান ঢাকা থেকে এসে ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়েতে উঠতে চান, তাদের যেতে হবে বিজয় সরণি ওভারপাস অথবা তেজগাঁও এলাকায়। বিজয় সরণি হয়ে র্যাংগস ভবন ভেঙে যে ওভারপাসটি তৈরি হয়েছে, সেটিতে উঠে তেজগাঁওয়ে যাওয়ার আগেই ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের সঙ্গে সংযোগ রয়েছে। তেজগাঁও থেকে বিজয় সরণির দিকে আসতে ওভারপাসে আরেকটি সংযোগ রয়েছে ওঠার জন্য।
রাজধানীর দক্ষিণ, পশ্চিম ও দক্ষিণ-পূর্বাংশের মানুষের জন্য ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়েতে ওঠার এই পথটিই সহজ। মিরপুর, মোহাম্মদপুর, ধানমন্ডি, নিউমার্কেটগামী যানবাহনের ইন্দিরা রোডে নামাই সুবিধাজনক।
ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়েতে ওঠানামার আরও পথ রয়েছে।
দক্ষিণ অভিমুখী যানবাহন ওঠার স্থান
১. হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের দক্ষিণে কাওলা।
২. প্রগতি সরণি এবং বিমানবন্দর সড়কের আর্মি গলফ ক্লাব।
দক্ষিণ অভিমুখী যানবাহন নামার স্থান
১. বনানী কামাল আতাতুর্ক অ্যাভিনিউ।
২. মহাখালী বাস টার্মিনালের সামনে।
৩. ফার্মগেট প্রান্তে ইন্দিরা রোডের পাশে।
উত্তর অভিমুখী যানবাহন ওঠার স্থান
১. বিজয় সরণি ওভারপাসের উত্তর ও দক্ষিণ লেন।
২. বনানী রেলস্টেশনের সামনে।
উত্তর অভিমুখী যানবাহন নামার স্থান
১. মহাখালী বাস টার্মিনালের সামনে।
২. বনানী কামাল আতাতুর্ক অ্যাভিনিউর সামনে বিমানবন্দর সড়ক।
৩. কুড়িল বিশ্বরোড
৪. বিমানবন্দর তৃতীয় টার্মিনালের সামনে।
সেতু বিভাগের এক গণবিজ্ঞপ্তিতে গতকাল শুক্রবার জানানো হয়, ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে দুই ও তিন চাকার যানবাহন চলাচল করতে পারবে না। তাই মোটরসাইকেল বা অটোরিকশা নিয়ে ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়েতে ওঠার সুযোগ নেই। গাড়ি নিয়ে গিয়ে ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়েতে দাঁড়ানো ও যানবাহন থেকে নেমে দাঁড়িয়ে ছবি তোলা সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। পথচারীরা ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়েতে উঠতে ও চলাচল করতে পারবেন না।
সেতু বিভাগ বলছে, মূল ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে ঘণ্টায় সর্বোচ্চ ৬০ কিলোমিটার গতিতে যানবাহন চলাচল করতে পারবে। আর ওঠা-নামার স্থানে (র্যাম্প) সর্বোচ্চ গতিসীমা ঘণ্টায় ৪০ কিলোমিটার।
টোল কত
এ সড়কে চার ক্যাটাগরিতে টোল আদায় হবে। ক্যাটাগরি ১-এ থাকছে কার, ট্যাক্সি, জিপ, স্পোর্টস ইউটিলিটি ভেহিক্যাল, মাইক্রোবাস (১৬ আসনের কম) ও হালকা ট্রাক (তিন টনের কম); টোল ৮০ টাকা। ক্যাটাগরি ২-এ থাকছে মাঝারি ট্রাক (ছয় চাকা পর্যন্ত), টোল ৩২০ টাকা। ক্যাটাগরি ৩-এ থাকা ট্রাকের (ছয় চাকার বেশি) জন্য দিতে হবে ৪০০ টাকা। ক্যাটাগরি ৪-এ সব ধরনের বাসের (১৬ আসন বা তার বেশি) টোল ১৬০ টাকা।
ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের দক্ষিণে কাওলা থেকে কুড়িল, বনানী, মহাখালী, তেজগাঁও, মগবাজার, কমলাপুর, সায়েদাবাদ ও যাত্রাবাড়ী হয়ে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কুতুবখালী এলাকা পর্যন্ত যাবে। সড়কটির মোট দৈর্ঘ্য ১৯ দশমিক ৭৩ কিলোমিটার। এতে ওঠা-নামার জন্য ২৭ কিলোমিটারের ৩১টি র্যাম্প রয়েছে। এসব র্যাম্পসহ এক্সপ্রেসওয়েটি প্রায় ৪৭ কিলোমিটার দীর্ঘ। বর্তমানে প্রকল্পের বিমানবন্দরের দক্ষিণে কাওলা থেকে ফার্মগেট পর্যন্ত অংশ প্রস্তুত।