গাজীপুরের শ্রীপুরে জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মো. নাসির মোড়ল ও তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে যুবলীগ নেতা আজিজুর রহমান জনের ওপর হামলা, ককটেল বিস্ফোরণ, ফাঁকা গুলি ও গাড়ি ভাঙচুরের অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী যুবলীগ নেতা জনের মা বাদী হয়ে থানায় একটি অভিযোগ দিয়েছেন। পরে ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে দুজনকে আটক করেছে পুলিশ।
এ ঘটনায় আটককৃতরা হলেন- জেলা ছাত্রলীগের পদ প্রত্যাশি মো. শিহাব (২৫) ও উপজেলা ছাত্রলীগের যুগ্ম সম্পাদক মো. হৃদয় শেখ (২২)।
আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে যুবলীগের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য আজিজুর রহমান জনের মা থানায় এ অভিযোগ করেন। অভিযোগে হামলাকারী হিসেবে জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মো. নাসির মোড়ল, তার ১১ সহযোগীর নামসহ অজ্ঞাত ৮ থেকে ১০ জনের কথা উল্লেখ করা হয়।
এর আগে গতকাল বুধবার রাত সোয়া ১১টার দিকে উপজেলার কেওয়া পশ্চিম খন্ড গ্রামের প্রশিকা মোড় এলাকার মাহবুব কার সেন্টারের সামনে এ ঘটনা ঘটে। এতে তিনজন আহতসহ তিনটি গাড়ি ভাঙচুর করা হয়।
অপর দিকে এ ঘটনায় জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক নাসির মোড়ল বাদী হয়ে আজিজুর রহমান জনসহ তিন জনের বিরুদ্ধে শ্রীপুর থানায় পাল্টা অভিযোগ দিয়েছেন।
ভুক্তভোগী মো. আজিজুর রহমান জন শ্রীপুর পৌরসভার ৮ নম্বর ওয়ার্ডের মৃত মাহবুবর রহমানের ছেলে। তিনি গাজীপুর জেলা যুবলীগের আহবায়ক কমিটির সদস্য ও শ্রীপুর উপজেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক পদপ্রার্থী।
ভুক্তভোগী আজিজুর রহমান জন বলেন, ‘রাত সোয়া ১১টার দিকে আমি আমাদের মাহবুব কার সেন্টারের পাশে হাঁটাহাটি করছিলাম। হঠাৎ করে জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক নাসির মোড়ল এসে আমাকে রাস্তায় পেয়ে হুমকি দিয়ে বলেন, আমি নাকি তার গাড়ি ভাঙচুর করেছি। অনুমানিক ১০ মিনিট পর নাসির মোড়লের সহযোগী শিহাব ও হৃদয় শেখের নেতৃত্বে ১০টি মোটরসাইকেল নিয়ে ঘটনাস্থলে কয়েকজন এসে এলোপাতাড়ি ককটেল বিস্ফোরণ ও ফাঁকা গুলি ছোড়ে। আমি গাড়ির এক পাশে মাটিতে শুয়ে প্রাণে বেঁচে যাই। হামলাকারীরা আমাদের তিনটি গাড়ি ভাঙচুর করেন।’
থানায় দেওয়া জনের মায়ের অভিযোগ থেকে জানা যায়, নাসির মোড়ল তার বাহিনী নিয়ে আমার ছেলে জনকে হত্যা করতে ককটেল বিষ্ফোরণ ও গুলি ছোড়ে। হামলাকারীরা ঢাকা মেট্রো ঘ- ১১- ৫৩৯৮, ঢাকা মেট্রো গ-৩৫ -৩৮৭৬ ও ঢাকা মেট্রো ঘ-০২ -০৮২৫ নম্বরের তিনটি গাড়ি ভাঙচুড় করে প্রায় সাড়ে ৮ লাখ টাকার ক্ষতি করেন। এ সময় মারধরের শিকার হয়ে আহত হন আল আমীন (৪৬), মইনুল (২২) ও তাইজুদ্দিন (৪৫)।
গাজীপুর জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মো. নাছির মোড়ল অভিযোগ অস্বীকার করে এক ভিডিও বার্তায় বলেন, ‘যুবলীগ নেতা জনের লোক আমার গাড়ি ভাঙচুর করার বিষয়ে জানতে চেয়েছিলাম। জন তা অস্বীকার করেন। কে বা কাহারা জনের গাড়ি ভাঙচুর করেছে তা বলতে পারব না।’
ঘটনার পর ব্যক্তিগত ফেসবুক থেকে যুবলীগ নেতা আজিজুর রহমান জন লাইভে এসে ছাত্রলীগের ওপর দোষ চাপানোর বিষয়ে জানতে চাইলে জবাব নাসির মোড়ল বলেন, সেটা তার একান্তই ব্যক্তিগত বিষয়।
কালিয়া কৈর সার্কেলের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) আজমীর হোসেন বলেন, গতকাল বুধবার রাতে তাৎক্ষনিক পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়েছে। এ ঘটনায় জড়িত অভিযোগে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ দুজনকে আটক করেছে। দুপক্ষই অভিযোগ-পাল্টা অভিযোগ দিয়েছে। গুলিসহ হামলার বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। অপরাধীরা কেউ ছাড় পাবে না।