শিক্ষাজীবনের বিভিন্ন স্তরে শিক্ষার্থীর তথ্য সংক্রান্ত ফরম (এসআইএফ) সংশোধনের মাধ্যমে ‘বাবা’, অথবা ‘মা’ অথবা ‘আইনগত অভিভাবকের’ নাম যুক্ত করতে নির্দেশনা দিয়ে রায় প্রকাশ করেছেন হাইকোর্ট। আজ বুধবার বিচারপতি নাইমা হায়দার ও বিচারপতি মো. খায়রুল আলমের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ ১৪ পৃষ্ঠার এ রায় প্রকাশ করেন।
প্রকাশিত রায়ে রায়ে হাইকোর্ট বলেছেন, ‘বাবা’ অথবা ‘মা’ অথবা ‘আইনগত অভিভাবকের’ যেকোনো একজনের নাম উল্লেখ করে রেজিস্ট্রেশনসহ শিক্ষাক্ষেত্রে সব ফরম পূরণ করা যাবে। শিক্ষা মন্ত্রণালয়সহ সব শিক্ষা বোর্ডের প্রতি এ নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ফলে ‘বাবা’ অথবা ‘মা’ অথবা ‘আইনগত অভিভাবক’ হিসেবে যেকোনো একটি পরিচয় উল্লেখ করে ফরম পূরণ করা যাবে।
এর আগে গত ২৪ জানুয়ারি শিক্ষাক্ষেত্রে শিক্ষার্থীর তথ্য সংক্রান্ত ফরম সংশোধনের মাধ্যমে ‘বাবা’ অথবা ‘মা’ অথবা ‘আইনগত অভিভাবক’-এর নাম যুক্ত করতে নির্দেশ দিয়ে রায় দিয়েছিলেন হাইকোর্ট। ১৪ বছর আগে এ সংক্রান্ত করা এক রিটের চূড়ান্ত শুনানি শেষে রায়টি দিয়েছিলেন বিচারপতি নাইমা হায়দার ও বিচারপতি মো. খায়রুল আলমের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ।
রিট আবেদনকারীদের আইনজীবী আইনুন নাহার সিদ্দিকা বলেন, ‘এই রায়ের ফলে মায়ের অধিকারও আংশিক প্রতিষ্ঠিত হলো। আর মা-বাবার পরিচয়হীন যেকোনো শিশুর শিক্ষার অধিকার নিশ্চিত হলো।’
২০০৭ সালের ২৮ মার্চ ‘বাবার পরিচয় নেই, বন্ধ হলো মেয়ের লেখাপড়া’ শিরোনামে একটি জাতীয় দৈনিকে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। বাংলাদেশ লিগ্যাল এইড অ্যান্ড সার্ভিসেস ট্রাস্ট (ব্লাস্ট), বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ ও নারীপক্ষ ২০০৯ সালে ওই প্রতিবেদনটি নজরে এনে হাইকোর্টে রিট করে। প্রাথমিক শুনানি নিয়ে ওই বছরের ৩ আগস্ট রুলসহ আদেশ দেন হাইকোর্ট। রুলের ওপর চূড়ান্ত শুনানি শেষে রায় দেওয়া হয়।
আদালতে রিটের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন আইনজীবী আইনুন নাহার সিদ্দিকা, এস এম রেজাউল করিম ও আয়শা আক্তার। আর রাষ্ট্রপক্ষের শুনানিতে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল অমিত দাশগুপ্ত।