এবার বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির ভাইস চেয়ারম্যান নিতাই রায় চৌধুরীকে আপ্যায়ন করালেন ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা বিভাগের (ডিবি) অতিরিক্ত কমিশনার মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ। গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে রাজধানীর মিন্টো রোডের ডিবি কার্যালয়ে তিনি দুপুরের খাবার খান।
এর আগে গত ২৯ জুলাই ডিবিতে খাবার খান বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়। নিতাই রায়ের মেয়ে ও গয়েশ্বরের পুত্রবধূ নিপুণ রায় চৌধুরীও দলটির নির্বাহী কমিটির সদস্য।
ডিবির দায়িত্বশীল একজন কর্মকর্তা জানান, নিতাই রায় চৌধুরী ব্যক্তিগত কাজে মঙ্গলবার দুপুরে ডিবি অফিসে হারুন অর রশীদের সঙ্গে দেখা করেন। সেখানে বেশ কিছু সময় অবস্থান করেন তিনি। পরে তারা দুজনে একসঙ্গে দুপুরের খাবার খান।
বিএনপি নেতাকে আপ্যায়নের জন্য বাইরে থেকে খাবার আনান ডিবির অতিরিক্ত কমিশনার হারুন অর রশীদ। খাবার মেন্যুতে ফলের পাশাপাশি মাছ, মাংস ও ভাতের ব্যবস্থা ছিল। ডিবির হারুন নিজে হাতে খাবার তুলে দিয়ে বিএনপি নেতাকে আপ্যায়ন করান।
এর আগে গত ২৯ জুলাই বিএনপির কর্মসূচিতে পুরান ঢাকায় পুলিশের হামলার শিকার হন দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়। পরে তাকে পুলিশ নিয়ে যায়। সেদিন মিন্টো রোডে ডিবির হারুনের সঙ্গে খাবার গ্রহণ করেছিলেন তিনি। হরেক পদের খাবার দিয়ে গয়েশ্বরকে আতিথেয়তা করা হয়। সেদিন খাবারের মেন্যুতে বিভিন্ন রকমের ফলের পাশাপাশি ভাত, মাছ ও মাংসের ব্যবস্থা ছিল।
ওই ঘটনার ভিডিও ও ছবিতে দেখা যায়, ডিবির অতিরিক্ত কমিশনার তাকে আন্তরিকভাবে খাবার তুলে দিচ্ছেন। সেদিন বাসার খাবারের পাশাপাশি পাঁচ তারকা হোটেল সোনারগাঁও থেকেও খাবার আনা হয়েছিল। ওই ঘটনার ভিডিও ও ছবি ভাইরাল হলে দেশজুড়ে আলোচনা-সমালোচনার ঝড় ওঠে।
এরপর অবশ্য আরও অনেককে আপ্যায়ন করতে দেখা যায় ডিবি কার্যালয়ে। এই নিয়ে বিরোধী রাজনৈতিক দলসহ ট্রল, মিম চলতে থাকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমগুলোতে। বলা হয়, ডিবির কার্যালয় ভাতের হোটেল। এই কটাক্ষের কড়া জবাবও দিয়েছেন হারুন অর রশীদ।
গত ২৮ আগস্ট নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের ডিবির অতিরিক্ত কমিশনার বলেন, ‘আমরা শুধু ভাতই খাওয়াই না, অস্ত্রও উদ্ধার করি। যেখানেই ঘটনা ঘটুক, আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা চালিয়ে অপরাধীদের শনাক্ত করে সাধারণ মানুষকে স্বস্তি দেওয়ার চেষ্টা করি। অনেকেই মনে করতে পারেন, ডিবি কার্যালয় একটা ভাতের হোটেল। এতে আমরা ডিমরালাইজড বা হতাশ হবো না। এটা আমাদের মানবিক দিক।’
তিনি আরও বলেন, ‘অনেক ভুক্তভোগী ও সাধারণ মানুষ ডিবির কাছে আসে। তখন আমরা তাদের সমস্যাগুলো দ্রুত সমাধানের চেষ্টা করি। কিন্তু অনেক সময় সমস্যা সমাধানে সময় লেগে যায়। এ সময় আমাদের অফিসাররা মানবিকভাবে তাদের নাস্তা কিংবা ভাত খেতে বলেন। এটা আমাদের মানবিকতা।’
‘আলামত যা-ই হোক না কেন, সাধারণ মানুষের নিরাপত্তার স্বার্থে, আসন্ন জাতীয় নির্বাচনে ঘিরে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখার স্বার্থে, অস্ত্র কারবারিরা যে দলেরই হোক না কেন, আমাদের ডিবি পুলিশের প্রতিটি টিম আইনগত প্রক্রিয়ায় তাদের গ্রেপ্তার করতে তৎপর রয়েছে। আমরা সাধারণ মানুষকে স্বস্তি দিতে চাই’, যোগ করেন হারুন অর রশীদ।