বাংলাদেশেই প্রথম ‘ডেঙ্গু ডাব’ আবিষ্কার হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (ডিজি) এ এইচ এম সফিকুজ্জামান।
আজ সোমবার জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের প্রধান কার্যালয়ের সভাকক্ষে যৌক্তিক মূল্যে ডাব ক্রয়-বিক্রয় বিষয়ক সচেতনতামূলক সভায় সভাপতির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
ডাবের দাম নিয়ে কাজ করার বিষয়টি নিয়ে বিস্ময় প্রকাশ করে ভোক্তা অধিকারের ডিজি বলেন, ‘আমি কখনো ভাবিনি ডাব নিয়ে আলোচনা সভা করতে হবে। ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাবে ডাবের চাহিদা বাড়ায় বর্তমানে প্রতিটি ডাব দ্বিগুণের বেশি দামে বিক্রি করা হচ্ছে। বাংলাদেশেই প্রথম আবিষ্কার হয়েছে “ডেঙ্গু ডাব”। এখানে (ডাব নিয়ে) কাজ করতে হবে আমি কখনো ভাবিনি। তাই ডাবের বাজার নিয়ন্ত্রণে এখন থেকে ডাব ব্যবসায়ীদের মূল্য তালিকা টাঙিয়ে রাখতে হবে।’
ভোক্তার ডিজি আরও বলেন, ‘অন্যান্য পণ্যের ক্ষেত্রে দাম বাড়ায় ডলার সংকট বা বৈশ্বিক প্রভাবের কারণ বলা হয়ে থাকে। কিন্তু ডাবের মূল্য বৃদ্ধির কোনো যৌক্তিকতা আছে বলে আমি মনে করি না। ডাবের দাম বৃদ্ধির সুযোগ এই ব্যবসার সঙ্গে জড়িত প্রত্যেকে নিচ্ছে। তাই এখন থেকে ব্যবসায়ীদের ক্রয়-বিক্রয়ের রশিদ, পাকা ভাউচার ও ডাবের মূল্য তালিকা টাঙিয়ে রাখতে হবে। আগামীকাল থেকে আমরা সারা দেশে এটি পরীক্ষা করব। এগুলো করার পর বাজারে যদি প্রভাব না পড়ে, তাহলে পরবর্তীতে আমরা আরও কাজ করব। ডাবের বাজার যতদিন স্থিতিশীল না হবে, ততদিন আমরা কাজ করব।’
বৈঠকে ডাবের পাইকারি ব্যবসায়ীরা দাবি করেন, ডেঙ্গু রোগের প্রাদুর্ভাবের কারণে ডাবের চাহিদা আগের চেয়ে অনেক বেশি। যোগান কম থাকায় ডাবের দাম বেড়েছে।
খুচরা ব্যবসায়ীরা বলেন, ‘আমরা সাইজ ভেদে আড়ত থেকে ডাব কিনে থাকি। ভালো মানের ডাবগুলো গত দুই মাস আগে কিনেছি প্রতিটি ৮০ টাকা দরে। বর্তমানে সেগুলো কিনতে হচ্ছে ১২০ টাকা থেকে ১৪০ টাকায়। এগুলোতে আমাদের সব খরচ রেখে বিক্রি করি ১৫০ থেকে ১৮০ টাকা। এতে আমাদের প্রতি ডাবে সর্বোচ্চ ১০-১৫ টাকা লাভ হয়।’
বৈঠকে আড়তদাররা জানান, সারা দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে ঢাকায় প্রতিদিন প্রায় আড়াই লাখ পিস ডাব আসে। ক্রয়মূল্য ও পরিবহন খরচসহ ডাব আড়ৎদারের ঘরে পৌঁছাতে প্রতি পিসে অন্তত ৮০-৮৫ টাকা খরচ হয়। তারা খরচ ও লাভ রেখে সাইজ ভেদে ডাবের পিস ১২০-১৪০ টাকায় বিক্রি করেন। আর খুচরা ব্যবসায়ীরা বিক্রি করেন প্রতি পিস ১৫০-১৮০ টাকা পর্যন্ত।
সভায় অধিদপ্তরের পরিচালক মনজুর মোহাম্মদ শাহরিয়ার বলেন, ‘আমরা কখনো চাই না ব্যবসায়ীদের জরিমানা করতে। আমরা ব্যবসায়ীদের বারবার বলি, প্রচলিত আইন মেনে ব্যবসা করতে। ক্রয়-বিক্রয়ের পাকা রশিদ রাখতে। যাতে আমরা পণ্যের দামটা শনাক্ত করতে পারি। ডাব ব্যবসায়ীরা যদি নিয়মের মধ্যে না আসেন, তাহলে আমাদের তদারকি অভিযান একটানা চলতে থাকব।’
এ সময় কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) সাধারণ সম্পাদক অ্যাড. হুমায়ুন কবিরসহ এফবিসিসিআইয়ের প্রতিনিধি, ভোক্তা অধিদপ্তরের কর্মকর্তা ও ডাব ব্যবসায়ীরা উপস্থিত ছিলেন।