সিলেট: সিলেটে শিশু শেখ সামিউল আলম রাজনকে (১৪) হত্যার আগে নির্মমভাবে নির্যাতনের ভিডিওচিত্র প্রকাশ নিয়ে সারাদেশে তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে। ভিডিওচিত্রটি এখন মোবাইলের মাধ্যমে সর্বত্র ছড়িয়ে পড়েছে।
মঙ্গলবার (০৮ জুলাই) দুপুর পৌনে ১টার দিকে হত্যার পর একটি মাইক্রোবাস যোগে (ঢাকা মেট্টো-চ-৫৪-০৫১৬) শিশু রাজনের মরদেহ গুম করার চেষ্টা করা হয়।
এ সময় শহরতলীর কুমারগাঁও এলাকা থেকে স্থানীয়দের সহায়তায় এ খুনের ঘটনায় জড়িত অভিযোগে মুহিত আলমকে আটক করে জালালাবাদ থানা পুলিশ। আটকের পর তিনি পুলিশের কাছে ১৬১ ধারায় জবানবন্দিতে রাজন হত্যার রোমহর্ষক বর্ণনা দেন।
এদিকে, হত্যার আগে রাজনকে চুরির অপবাদে নির্মম নির্যাতনের ভিডিওচিত্র প্রকাশ নিয়ে সিলেটসহ সারাদেশে তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে।
ভিডিওচিত্রে দেখা যায়, নীল সার্টারের একটি দোকানের সামনে ও পরবর্তীতে একটি গ্যারেজে নিয়ে রাজনকে খুঁটির সঙ্গে হাত পেছনে বেঁধে জিআই পাইপ দিয়ে পেটানো হচ্ছে।
পানির জন্য হাহাকার করছেন রাজন। কিন্তু ঘাতকরা তাকে নিয়ে হাসিঠাট্টা করছেন। উপস্থিত কেউ একজন বলছেন, টাইগার এনার্জি ড্রিংস এনে খাওয়াতে। আবার অন্যজন বিয়ার আনতে বলছেন।
নির্যাতনের এক পর্যায়ে মুমূর্ষু রাজন তাকে পুলিশ হেফাজতে দিতে আর্তি জানায়। তখন ঘাতকদের একজন অশ্রাব্য ভাষায় গালি দিয়ে বলেন, ‘তুই আমারে চিনিস’। রাজনকে নির্যাতনের ২৮ মিনিটের ভিডিও ফুটেজটির এমন দৃশ্য এখন সর্বত্র ছড়িয়ে পড়েছে।
রাজন হত্যা মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা জালালাবাদ থানার ওসি (তদন্ত) আলমগীর হোসেন বলেন, নির্মম নির্যাতনের ভিডিওচিত্রের একটি সিডি তাদের হেফাজতে এসেছে।
ভিডিওচিত্রটি নিহতের বাবার কাছ থেকে পেয়েছেন উল্লেখ করে তিনি বলেন, আসামিদের কেউ একজন এ দৃশ্যটি ধারণ করেছে। এখন সবস্থানে এটি ছড়িয়ে গেছে।
নিহত রাজন কুমারগাঁও বাসস্টেশন সংলগ্ন সিলেট সদর উপজেলার কান্দিগাঁও ইউনিয়নের বাদেআলী গ্রামের মাইক্রোবাস চালক শেখ আজিজুর রহমানের ছেলে।
এ বিষয়ে প্রথমে জালালাবাদ থানাপুলিশ বাদী হয়ে একটি হত্যা মামলা দায়ের করে। পরে নিহতের বাবা বাদী হয়ে আরেকটি মামলা দায়ের করেন। এ মামলার তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয় ওসি (তদন্ত) মো. আলমগীর হোসেনকে।
মামলায় গ্রেফতার হওয়া মুহিত আলম ছাড়াও অন্য আসামিরা হলেন- তার ভাই কামরুল ইসলাম, সহযোগী আলী হায়দার ওরফে আলী ও চৌকিদার ময়না মিয়া ওরফে বড় ময়না।