শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজে (শেবাচিম) ছাত্রী র্যাগিংয়ের ঘটনার সংবাদ সংগ্রহ করতে গিয়ে হামলার শিকার হয়েছেন বরিশালের সাত সাংবাদিক। পরে সিনিয়র সাংবাদিক এবং চিকিৎসকদের মধ্যে বৈঠকে বিষয়টির সমঝোতা হয়।
আজ শনিবার দুপুরে কলেজ ক্যাম্পাসে সংবাদ সংগ্রহের সময় অধ্যক্ষসহ দুই শিক্ষকের নেতৃত্বে সাংবাদিকদের ওপর হামলা চালানো হয়।
হামলার শিকার সাংবাদিকরা হলেন- চ্যানেল টোয়েন্টিফোরের বরিশাল ব্যুরো প্রধান কাওছার হোসেন রানা, ক্যামেরাপারসন রুহুল আমিন, এশিয়ান টেলিভিশনের ব্যুরো প্রধান ফিরোজ মোস্তফা, ক্যামেরাপারসন আজিম, বাংলানিউজ টোয়েন্টিফোর ডট কম এর নিজস্ব প্রতিবেদক মুশফিক সৌরভ, সময় টেলিভিশনের প্রতিবেদক শাকিল মাহমুদ এবং ক্যামেরা পারসন সুমন হাসান।
চ্যানেল টোয়েন্টিফোরের ক্যামেরা পারসন রুহুল আমিন বলেন, ‘মেডিকেল কলেজে র্যাগিংয়ের শিকার এক ছাত্রী অধ্যক্ষের কক্ষে অভিযোগ দিতে গিয়েছিলেন। এই খবর পেয়ে আমরা সেখানে গিয়ে ওই ছাত্রীর বক্তব্য নিচ্ছিলাম। কোনো কিছু বুঝে ওঠার আগেই হঠাৎ কলেজের কমিউনিটি মেডিসিন বিভাগের ডা. বাকিউল্লাহ ও প্যাথলজি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক প্রবীর কুমার সাহার নেতৃত্বে ৪ থেকে ৫ জন জন চিকিৎসক হামলা করেন। তারা আমাদের ক্যামেরা ভাঙচুর করেন এবং মারধর করেন।’
এশিয়ান টেলিভিশনের ব্যুরো প্রধান ফিরোজ মোস্তফা বলেন, ‘র্যাগিংয়ের শিকার তৃতীয় বর্ষের ওই ছাত্রীর অভিভাবকও সেখানে উপস্থিত ছিলেন। তাদের সামনেই হঠাৎ সাংবাদিকদের ওপর হামলা চালানো হয়। অধ্যক্ষের সঙ্গে এ হামলায় অংশ নেন কয়েকজন চিকিৎসক ও অফিস সহকারী।’
র্যাগিংয়ের সঙ্গে জড়িতদের রক্ষা করতেই এই হামলা চালানো হয়েছে বলে মনে করেন চ্যানেল টোয়েন্টিফোরের ব্যুরো প্রধান কাওছার হোসেন রানা।
খবর পেয়ে বরিশালের বিভিন্ন স্থান থেকে সিনিয়র সাংবাদিকরা মেডিকেল কলেজে ছুটে আসেন। পরে উপাধ্যক্ষের কক্ষে সমঝোতা বৈঠক হয়।
অধ্যক্ষ ফয়জুল বাশার, উপাধ্যক্ষ জিএম নাজিমুল হক, উপপুলিশ কমিশনার আশরাফ হোসেন, অতিরিক্ত উপপুলিশ কমিশনার ফজলুল হক, সিনিয়র সাংবাদিক হুমায়ন কবির, মুরাদ আহমেদ, আকতার ফারুক শাহীন, প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক জাকির হোসেন প্রমুখ এতে অংশ নেন। বৈঠকে অধ্যক্ষ ক্ষমা প্রার্থনা করেন এবং পরে দুপক্ষের মধ্যে সমঝোতা হয়।
কলেজের কয়েকজন শিক্ষার্থী জানিয়েছেন, দুদিন আগে ৫০তম ব্যাচের নীলিমা হোসেন জুঁইসহ কয়েকজন তৃতীয় বর্ষের এক ছাত্রীকে র্যাগ দেন। এতে ভুক্তভোগী ছাত্রী অসুস্থ হয়ে পড়েন। এ ঘটনায় ওই ছাত্রীকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে ওই ঘটনার অভিযোগ দিতেই ভুক্তভোগী ছাত্রী অধ্যক্ষের কাছে গিয়েছিলেন। সে সময়ই সাংবাদিকদের ওপর হামলা চালানো হয়।
শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ ফয়জুল বাশার বলেন, ঘটনা তদন্তে কমিটি গঠন করা হয়েছে। র্যাগিংয়ের সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
তবে সাংবাদিকদের সঙ্গে যে বিষয়টি ঘটেছে তাকে ‘অনাকাঙ্ক্ষিত’ উল্লেখ করে তিনি বলেন, ভুল বোঝাবুঝির কারণে এই ঘটনা ঘটেছে। বৈঠকে বিষয়টির সমাধান হয়েছে।