চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংকে আঞ্চলিক স্থিতিশীলতার বার্তা দিতে চান বলে জানালেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন। আজ সোমবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকের সঙ্গে আলাপকালে এ কথা জানান তিনি।
দক্ষিণ আফ্রিকার জোহানেসবার্গে অনুষ্ঠেয় ব্রিকস শীর্ষ সম্মেলনের ফাঁকে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সাক্ষাতের কথা রয়েছে। এ বিষয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, চীনের প্রেসিডেন্টের সঙ্গে সাক্ষাতের সম্ভাবনা রয়েছে। এখনো সময় চূড়ান্ত হয়নি। হেড অব গভর্মেন্টের সাক্ষাতের সিদ্ধান্ত শেষ মিনিটে দেয়।
দুই দেশের সরকারপ্রধানের আলোচনার বিষয়ে জানতে চাইলে ড. এ কে আব্দুল মোমেন বলেন, ‘আলোচনার শেষ নেই। চীন আমাদের উন্নয়ন সহযোগী। আমরা অনেকগুলো প্রজেক্ট সই করেছি, এমওইউ সই করেছি, প্রায় ২৩ বিলিয়ন ডলারের সই। আর প্রাইভেটে ১৩ মিলিয়ন। তার থেকে আট বছরে ৪ বিলিয়ন পেয়েছি, সেগুলো যেন ত্বরান্বিত হয়; সেটা আলোচনা হতে পারে। এটা একটা গুরত্বপূর্ণ ইস্যু।’
চীন থেকে নেওয়া ঋণের ব্যাপারেও আলোচনা হবে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘আমরা ঋণের সুদের হার কম চাই। এটার ওপর আলোচনা হবে। দুনিয়াব্যাপী তাদের ঋণের সুদের হার বেড়ে গেছে। আমরা বলব- সস্তায় বিবেচনা করলে ভালো হয়। জলবায়ু ইস্যু থাকবে, আমাদের নিয়মিত অভিবাসন থাকে, আমাদের অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য বিনিয়োগ চাই। বাণিজ্য বাড়াতে চাই।’
ড. মোমেন বলেন, ‘চায়না বাণিজ্য বাড়ানোর জন্য আমাদের অনেক ছাড় দিয়েছে। তবুও বাণিজ্য একপেশে হয়ে গেছে। আমরা বলব বাণিজ্য আরও বাড়াও, বিনিয়োগ কর।’
বন্ধু রাষ্ট্রগুলো বাংলাদেশে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা নিয়ে উদ্বেগের বার্তা দিচ্ছে। এ অবস্থায় ঢাকা-বেইজিংয়ের সরকারপ্রধানের আলোচনায় আঞ্চলিক স্থিতিশীলতার বিষয়টি থাকছে কি না- এমন প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘এটা আমাদেরও কনসার্ন। পুরো অঞ্চলে শান্তি ও স্থিতিশীলতা দরকার। আমি যেখানে যাই এটা বলি। আমি বৈঠকে থাকলে আঞ্চলিক শান্তি ও স্থিতিশীলতার বার্তা দেব।’
শেখ হাসিনাকে আবার ক্ষমতায় রাখা গেলে এ অঞ্চলের জন্য মঙ্গল হবে দাবি করে তিনি বলেন, ‘শান্তি ও স্থিতিশীলতা সবচেয়ে জরুরি। শেখ হাসিনা হচ্ছে, শান্তি ও স্থিতিশীলতার প্রতীক। প্রধানমন্ত্রীকে যদি রাখা যায় পুরো অঞ্চলের জন্য, আমাদের জন্য; ভারত, নেপাল ও ভুটান প্রত্যেকের জন্য মঙ্গল হবে।’
তিনি বলেন, ‘ছোটখাটো ইস্যু নিয়ে শান্তি বিঘ্নিত হয়। আমাদের বেসিক পলিসি শান্তি ও স্থিতিশীলতা। শুধু ভারতের জন্য না, সারা অঞ্চলের জন্য শান্তি ও স্থিতিশীলতা দরকার।’
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘২০০১ থেকে ২০০৬ পর্যন্ত আমরা দেখেছি- সন্ত্রাস, দুর্নীতি, জিহাদি এগুলো তো প্রমোট হয়েছে। দেশটা তখন রসাতলে গেছে। আফগানিস্তানে ২৯ মিলিয়ন লোক, ওখানে জিহাদি হয়েছে। দুনিয়াকে কাঁপিয়ে দিয়েছে। বাধ্য হয়ে আমেরিকা আফগানিস্তান দখল করেছে। এখানে ১৭০ মিলিয়ন লোক, যদি এখানেও এ রকম জিহাদি হয় সারা অঞ্চলের ভবিষ্যৎ অন্ধকার। বাঙালিদের ১২টা বাজবে তখন। এই যে সুন্দর ভবিষ্যৎ দেখতেছেন, ওগুলো তখন ভুলে যাবেন। তখন আফগানিস্তানের মতো কষ্টে থাকবেন।’