পিরোজপুরে পৌঁছেছে মাওলানা দেলাওয়ার হোসেন সাঈদীর মরদেহ। আজ মঙ্গলবার সকালে শহরের কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনালের পাশে থাকা সাঈদী ফাউন্ডেশনে জানাজা শেষে সেখানকার কবরস্থানে তাকে দাফন করা হবে।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন জামায়াতে ইসলামীর পিরোজপুর নেতা জহিরুল ইসলাম। তিনি বলেন, জানাজা শেষে মাওলানা সাঈদীর মরদেহ সমাহিত করা হবে বড় ছেলে মাওলানা রাফীক সাঈদীর কবরের পাশে।
উল্লেখ্য, গত রোববার বিকেলে কাশিমপুর কারাগারের ভেতরে বুকের ব্যথায় অসুস্থ হয়ে পড়েন মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে আমৃত্যু কারাদণ্ডপ্রাপ্ত মাওলানা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী। কারা কর্তৃপক্ষ তাকে কারাগারের অ্যাম্বুলেন্সে করে গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে অবস্থার অবনতি হলে তাকে ঢাকার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে পাঠানো হয়।
গতকাল সোমবার রাত ৮টা ৪০ মিনিটে বিএসএমএমইউতে হার্ট অ্যাটাকে মারা যান মাওলানা সাঈদী। তার মৃত্যুর খবর পেয়ে শাহবাগ এলাকায় জামায়াতে ইসলামীর নেতাকর্মীরা জড়ো হন। রাতে জামায়াতের পক্ষ থেকে ঘোষণা দেওয়া হয়, মঙ্গলবার বাদ জোহর জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমে মাওলানা সাঈদীর জানাজা অনুষ্ঠিত হবে।
এদিকে বিএসএমএমইউ হাসপাতাল চত্বরে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করতে থাকেন জামায়াত-শিবিরের নেতাকর্মীরা। তারা ঢাকায় মাওলানা সাঈদীর জানাজা অনুষ্ঠানের দাবিতে নানা স্লোগান দেন।
ভোর রাত তিনটার দিকে মাওলানা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর মরদেহ অ্যাম্বুলেন্সে করে পুলিশ বের করতে চাইলে জামায়াত-শিবির কর্মীরা গাড়ির সামনে শুয়ে পড়েন এবং দাঁড়িয়ে যান। এক পর্যায়ে পুলিশ সদস্যরা জামায়াত-শিবির কর্মীদের প্রতিরোধের মুখে গাড়ির পাশ থেকে চলে যান।
ফজরের নামাজের পর অ্যাকশনে যায় পুলিশ। ভোর ৫টার কিছু পর হাসপাতালে বাইরে থেকে টিয়ারগ্যাস এবং রাবার বুলেট ছোড়ে পুলিশ। এতে জামায়াতের নেতাকর্মীরা ছত্রভঙ্গ হয়ে এদিক-ওদিক ছুটোছুটি করতে থাকে। পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল ছুড়তে থাকে জামায়াত কর্মীরা। একপর্যায়ে পুলিশের অ্যাকশনের মুখে পিছু হটে জামায়াত-শিবির নেতাকর্মীরা।
এ সময় মাওলানা সাঈদীর মরদেহ বের করতে গেলে অ্যাম্বুলেন্সের চাকা পাঙচার হয়ে যায়। ভোর সাড়ে ৫টার দিকে পুলিশ সদস্যরা পাঙচার হওয়া অ্যাম্বুলেন্সটি নিজেরা ঠেলে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালের ভেতর থেকে বাইরে নিয়ে আসেন। শাহবাগ মোড় পেরিয়ে বারডেম হাসপাতালের সামনে ঠেলে আনার পর অন্য একটি অ্যাম্বুলেন্সে মাওলানা সাঈদীর মরদেহ তুলে দেন। পরবর্তী সময়ে সেই অ্যাম্বুলেন্সটি পুলিশি নিরাপত্তায় পিরোজপুরের উদ্দেশে রওনা দেয়।