ইউরোপের বাজারে তৈরি পোশাক রপ্তানিতে প্রথমবারের মতো চীনকে পেছনে ফেলে শীর্ষে পৌঁছেছে বাংলাদেশ। ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের (ইইউ) পরিসংখ্যান বিষয়ক সংস্থা ইউরোস্ট্যাটের বরাতে এই তথ্য জানিয়েছে তৈরি পোশাক শিল্প মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএ।
ইউরোস্ট্যাটের তথ্য অনুযায়ী, ইউরোপের বাজারে চীনের চেয়ে বাংলাদেশের তৈরি পোশাকের রপ্তানি মূল্য কেজিপ্রতি ৫ ডলার ৮২ সেন্ট কম। এ কারণে ইউরোপে চীনের তৈরি পোশাক রপ্তানি বাংলাদেশের তুলনায় ৭২৬ কোটি ডলার বেশি।
পরিসংখ্যান বলছে, গত বছর ইউরোপীয় ইউনিয়নের বাজারে অন্যান্য দেশের তুলনায় বাংলাদেশ সর্বোচ্চ ১৩৩ কোটি কেজির সমপরিমাণ তৈরি পোশাক রপ্তানি করে। একই সময়ে চীনের রপ্তানির পরিমাণ ছিল ১৩১ কোটি কেজির সমপরিমাণ। ২০২১ সালের তুলনায় গত বছর পোশাক রপ্তানির পরিমাণের দিক থেকে বাংলাদেশের পোশাক রপ্তানি ২১ দশমিক ২০ শতাংশ বাড়ে। একই সময়ে অর্থাৎ গত বছরে চীনের বেড়েছে ১১ দশমিক ৮৬ শতাংশ।
বিজিএমইএ জানায়, ইউরোপীয় ইউনিয়ন গত বছর বিভিন্ন দেশ থেকে মোট ১০ হাজার ৩১০ কোটি ডলারের তৈরি পোশাক আমদানি করেছে। ২০২১ সালের তুলনায় গত বছর ইউরোপের বাজারে পোশাক আমদানি বেড়েছে ২০ দশমিক ৯৭ শতাংশ।
তথ্য বলছে, রপ্তানি হওয়া পোশাকের পরিমাণে এগিয়ে গেলেও অর্থের হিসাবে এখনো চিনের নিচে রয়েছে বাংলাদেশ। গত বছর ইউরোপের বাজারে চীন ৩ হাজার ১৫ কোটি ডলারের তৈরি পোশাক রপ্তানি করে, তাদের রপ্তানি বেড়েছে ১৭ শতাংশ। একই সময়ে বাংলাদেশ রপ্তানি করেছে ২ হাজার ২৮৮ কোটি ডলারের তৈরি পোশাক, যা ২০২১ সালের তুলনায় ৩৫ দশমিক ৬৯ শতাংশ বেশি।
গত বছর ইউরোপের বাজারগুলোয় বাংলাদেশ ও চীনের পর তৃতীয় সর্বোচ্চ ১ হাজার ১৯৮ কোটি ডলারের পোশাক রপ্তানি করেছে তুরস্ক। ভারতের রপ্তানি ছিল ৪৮৪, ভিয়েতনামের ৪৫৭, পাকিস্তানের ৩৯৪, কম্বোডিয়ার ৩৮১, মরক্কোর ৩১২, শ্রীলঙ্কার ১৬২ এবং ইন্দোনেশিয়ার রপ্তানি ছিল ১৩৬ কোটি ডলারের।
বাংলাদেশ দ্বিতীয় সর্বোচ্চ কম দামে ইউরোপের বাজারে পোশাক রপ্তানি করে। গত বছর বাংলাদেশের রপ্তানি হওয়া প্রতি কেজি পোশাকের গড় মূল্য ছিল ১৭ দশমিক ২৭ ডলার, ২০২১ সালে ছিল ১৫ দশমিক ৪২ ডলার। গত বছর বাংলাদেশের রপ্তানি হওয়া পোশাকের গড় মূল্য বেড়েছে। গত বছর ইউরোপে বাংলাদেশের চেয়ে কম মূল্যে পোশাক রপ্তানি করেছে পাকিস্তান। দেশটির পোশাকের প্রতি কেজির গড় মূল্য ছিল সাড়ে ১৪ ডলার।