ময়মনসিংহ: ময়মনসিংহের একটি জর্দা কারখানা থেকে জাকাতের কাপড় নিতে গিয়ে পদপৃষ্ট হয়ে প্রথমে ২০ জন ও পরে আরো তিনজন নিহত হলে মৃতের সংখ্যা ২৩ জনে উন্নীত হয়েছে।
এ ছাড়া এ ঘটনায় আরো চারজন আহত হয়েছেন।
এ ঘটনায় কারখানার মালিকসহ আট কর্মচারীকে আটক করেছে পুলিশ।
ময়মনসিংহ জেলা প্রশাসক মুস্তাকিন বিল্লাহ ফারুকী ও পুলিশ সুপার মঈনুল হক ২৩ জন নিহত হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
শুক্রবার ভোর ৫টার দিকে ময়মনসিংহ শহরের নূরানী জর্দা কারখানায় এ মর্মান্তিক দুর্ঘটনাটি ঘটে।
যাদের মরদেহ মর্গে রাখা হয়েছে, তারা হলেন- ফাতেমা বেগম (৪২), সুফিয়া বেগম (৬০), খোদেজা বেগম (৫০), সিদ্দিক (১২), লাল মিয়া (০৫), ছমিলা (৪০), শামীমা (৫০), ফজিলা বেগম (৭৫), হাজেরা বেগম (৪০), মেঘনা বসাক (৩৫) ও মরিয়ম বেগম (৫০)। বাকিদের নাম-ঠিকানা তাৎক্ষণিকভাবে পাওয়া যায়নি।
এ ঘটনায় আহত হেনা বেগম (৫৫), রাত (২০), ময়না (৭০), রাসেলকে (২৫) ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী ভ্যানচালক দুলাল জানান, নূরানী জর্দা ফ্যাক্টরির মালিক মো. শামীম প্রতি বছরই জাকাত দেন। এরই ধারাবাহিকতায় শুক্রবার সেহরির পর পরই জাকাতের কাপড় বিতরণের উদ্দেশ্যে জর্দা কারখানার গেট খোলা হয়।
এ সময় কয়েক হাজার নারী-পুরুষ এক সঙ্গে হুড়োহুড়ি করে গেটের ভেতর ঢুকতে চাইলে শতাধিক মানুষ পদপৃষ্ট হন। এতে ঘটনাস্থলে ২০ জন নিহত ও আরো চারজন আহত হন।
অপর প্রত্যক্ষদর্শী মনোয়ারা খাতুন বলেন, ‘ফজরের নামাজের পর কয়েক হাজার মানুষ জাকাত নিতে জর্দা ফ্যাক্টরির গেটে এক সঙ্গে ঢুইক্যা পড়লে জাতাজাতি কইরা মানুষ মরছে।’
ঘটনার পর নূরানী জর্দা কারখানার সামনে মানুষের ছেঁড়া জুতা, স্যান্ডেল পড়ে থাকতে দেখা যায়।
এ ঘটনার পর জর্দা কারখানার মালিক মো. শামীমসহ তার আট কর্মচারীকে আটক করে থানায় নিয়ে গেছে পুলিশ।
এ বিষয়ে কোতোয়ালি থানার এএসপি আব্দুর রহিম বলেন, কারখানার মালিক-কর্মচারীদের আটক করা হয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
বিষয়টি তদন্ত করে দোষীদের বিচারের আওতায় আনা হবে।
এদিকে, এ ঘটনায় সরকারের পক্ষ থেকে দুটি তদন্ত কমিটি গঠন করো হয়েছে। আগামী পাঁচ কর্মদিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।