বিএনপিকে সন্ত্রাসী সংগঠনের রায় দেননি কানাডার আদালত : রিজভী

Slider রাজনীতি

কানাডার আদালত বিএনপিকে সন্ত্রাসী সংগঠন বলে আখ্যায়িত করেছে মর্মে সরকারের পৃষ্ঠপোষকতায় বিভিন্ন এজেন্সি ও গোয়েন্দা সংস্থা মিথ্যা প্রতিবেদন প্রকাশে গণমাধ্যমের ওপর চাপ প্রয়োগ করছে অভিযোগ করে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, প্রকৃত সত্য হলো, বিএনপি সন্ত্রাসী সংগঠন উল্লেখ করে রায় দেয়নি কানাডার আদালত। কানাডার আদালতের ২৬ পৃষ্ঠার সম্পূর্ণ রায়ের দ্বিতীয় পৃষ্ঠার ৩ নম্বর সেকশনে বলা হয়েছে, ইমিগ্রেশন ডিপার্টমেন্ট এমন কোনো যুক্তিসঙ্গত কারণ পায়নি, যাতে প্রতীয়মান হয় যে বিএনপি সন্ত্রাসবাদের সাথে যুক্ত কোনো সংগঠন।

মঙ্গলবার (১ অক্টোবর) রাতে বিএনপির নয়াপল্টন কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।

রিজভী বলেন, ২৬ পাতার সম্পূর্ণ রায়টি কানাডার ফেডারেল কোর্টের ওয়েবসাইটে এখনো বিদ্যমান আছে। কিছু কিছু গণমাধ্যম প্রকৃত বিষয়টি যাচাই না করে ফ্যাসিস্ট সরকারের হুকুমে মিথ্যা প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে, যা সত্যানুসন্ধানী গণমাধ্যমের মূলনীতির সাথে সামঞ্জস্যহীন। জনগণকে বিভ্রান্ত করতে ওপরের চাপে এহেন পরিবেশিত সংবাদ গণমাধ্যমের বিশ্বাসযোগ্যতাকে প্রশ্নের মুখে ফেলে দেয়। যাচাই-বাছাইহীন মিথ্যা রিপোর্টের জন্য জনমনে সমালোচনার ঝড় বইছে।

তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ এমন একটি রাজনৈতিক সংগঠন, যারা মালিন্যের ঊর্ধ্বে উঠে সুস্থ রাজনৈতিক পরিবেশ বজায় রাখতে পারে না। কারণ এদের রাজনৈতিক দর্শনে বিকৃত ক্ষমতা চর্চার দৃষ্টান্ত ছাড়া জনগণের ক্ষমতার ওপর আস্থার ইতিহাস নেই। এরা স্বৈরতন্ত্রকে অন্তরঙ্গ বন্ধু বলে মনে করে নিজেরা যেনতেনভাবে ক্ষমতায় এসে ভয়ঙ্কর স্বৈরাচার হয়ে ওঠে। তাই গণতন্ত্রকামী রাজনৈতিক শক্তির বিরুদ্ধে ক্রমাগত অসত্য প্রচার, অপবাদ ও বানোয়াট আষাঢ়ে গল্পের ওপরই ভর করে টিকে থাকার যাবতীয় ভয়াল চক্রান্তে লিপ্ত থাকে।

তিনি বলেন, পদে পদে ব্যর্থতায় অবৈধ আওয়ামী সরকার এখন দিশেহারা। তাই রাষ্ট্রযন্ত্রকে পীড়নযন্ত্রে পরিণত করে একদিকে বিএনপিসহ গণতন্ত্রকামী বিরোধী দলের ওপর নামিয়ে আনা হয়েছে পৈশাচিক বর্বরতা। অন্যদিকে ভিত্তিহীন ও কাল্পনিক কাহিনী বানিয়ে জনগণের দৃষ্টিকে ঝাপসা করার জন্য একের পর এক বিভ্রান্ত করার অপচেষ্টা করছে। দুঃশাসনের সঙ্কট অনেক ঘন হয়ে এসেছে বলেই এরা অপপ্রচার আর ভুয়া তথ্যকে রাজনৈতিক ইশতেহার বানিয়েছে। অন্য দেশের আদালতের রায়কেও বিকৃত করতে তারা দ্বিধা করেনি। শেখ হাসিনা জানেন, দেশে-বিদেশে তিনি এখন বন্ধুহীন এবং তার গ্রহণযোগ্যতা শূন্যেরও নিচে।

বিএনপির এই নেতা বলেন, শেখ হাসিনা জনসমর্থনের এখন আর তোয়াক্কা করেন না। এই কারণে দেশকে ধ্বংসের অতলে ঠেলে দিয়েও নিজের অবৈধ ক্ষমতাকে ধরে রাখতে এক মানবতাহীন, মনুষ্যত্বহীন স্বৈরশাসকের অবয়ব ধারণ করেছেন। জাল-জালিয়াতি ও লুণ্ঠনের নীতি বাস্তবায়নে নিজেদেরকে অপ্রতিদ্বন্দ্বী মনে করছে। এদের পতন এখন সন্নিকটে। তাই বিদায়ের আগ মুহূর্ত পর্যন্ত পৃথিবীর সব নির্দয় স্বৈরশাসকরা নিজেদের ক্ষমতাকে চিরস্থায়ীই মনে করে। সেজন্য অবৈধ শাসকগোষ্ঠী অবলীলায় কানাডার আদালতের রায়কেও জাল করতে দ্বিধা করেনি। আমি দিনে দুপুরে কানাডার আদালতের রায়কে ‘টেম্পারিং’ করে বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রচার করার সরকারের হীন ষড়যন্ত্রের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *