বিএনপির ১২২ নেতাকর্মী কারাগারে, রিমান্ডে ২৮

Slider রাজনীতি


রাজধানীতে গতকাল শনিবার পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষের মামলায় বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুস সালাম আজাদসহ ১২২ নেতাকর্মীকে কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত। অপর ২৮ জন আসামির ১ দিন করে রিমান্ডে পাঠানো হয়েছে।

বাসে অগ্নিসংযোগ, ভাঙচুর ও বিস্ফোরকের ঘটনায় সাতটি থানার ১১ মামলায় গ্রেপ্তার বিএনপির মোট ১৩৭ নেতাকর্মীকে আজ রোববার আদালতে হাজির করা হয়। তাদের মধ্যে পুরান ঢাকার ধোলাইখাল মোড়ে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষের মামলায় বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুস সালাম আজাদের জামিনের আবেদন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন আদালত।

একই মামলায় গ্রেপ্তার অপর চার বিএনপি নেতাকর্মীর এক দিনের রিমান্ডও মঞ্জুর করেন সিএমএম আদালত। রিমান্ডে যাওয়া আসামিরা হলেন কেরানীগঞ্জের জিনজিরা ইউনিয়ন যুবদলের সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুল মমিন, বিএনপির সক্রিয় কর্মী কবির, সোহাগ গাজী ও মো. রিয়াজ উদ্দিন রাজু।

এ ছাড়া উত্তরা পশ্চিম থানার তিন মামলায় ৩৩ জন, দারুসসালাম থানার এক মামলায় ৫২ জন, কদমতলী থানার এক মামলায় ২ জন, শ্যামপুর এক থানার মামলায় ২ জন ও বংশাল থানার এক মামলায় ৫ জন কারাগারে পাঠান আদালত।

অন্যদিকে যাত্রাবাড়ী থানার দুই মামলায় ১৬ জনের এক দিনের রিমান্ড ও দুজনকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন আদালত। এ ছাড়া উত্তরা পূর্ব থানায় দুই মামলায় ২২ জনকে আদালতে হাজির করা হয়। শুনানি শেষে আদালত আটজনের এক দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। একইসঙ্গে ১৪ আসামিকে জেলগেটে জিজ্ঞাসাবাদের আদেশ দিয়ে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।

গতকাল রাজধানীর ধোলাইখালে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষ হয়। সূত্রাপুর থানার এসআই নাসির উদ্দিন হাওলাদার বাদী হয়ে একটি মামলা করেন। মামলায় এজাহারনামীয় আসামি করা হয়েছে বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুস সালাম আজাদ ও কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য অ্যাডভোকেট নিপুণ রায় চৌধুরীসহ ২৪ নেতাকর্মীকে। অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছে আরও ৩০০-৪০০ নেতাকর্মীকে।

মামলার অভিযোগ থেকে জানা যায়, গতকাল ধোলাইখাল গোয়ালঘাট নাসির উদ্দিন সর্দার লেনের মনসুর মার্কেটের সামনে পাকা রাস্তায় বিএনপির নেতাকর্মীরা জড়ো হয়ে রাস্তা বন্ধ করে কর্মসূচি পালন করেন এবং যানচলাচলসহ সাধারণ জনগণের চলাচলের বিঘ্ন সৃষ্টি করতে থাকেন। বিএনপির সিনিয়র নেতা গয়েশ্বর রায় চৌধুরী, নিপুণ রায় চৌধুরী ও ইশরাক হোসেনদের অনুমতিবিহীন অবস্থান কর্মসূচি পালন থেকে বিরত থাকার জন্য বারবার অনুরোধ করে পুলিশ। নেতাকর্মীদের সঙ্গে কথা বলার একপর্যায়ে বেলা সাড়ে ১১টার সময় নিপুণ রায় চৌধুরীর নির্দেশে এজাহারনামীয় ও পলাতক আসামিসহ পাশে থেকে আসা অজ্ঞাতনামা আরও আসামিরা পুলিশের ওপর ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করতে থাকেন। তখন পুলিশ লাঠিচার্জ করে ছত্রভঙ্গ করার চেষ্টা করে কিন্তু অবস্থান কর্মসূচিতে থাকা বিশৃঙ্খলাকারী আসামিরা পুলিশের ওপর ইট-পাটকেলসহ সঙ্গে নিয়ে আসা প্লাস্টিকের শক্ত পাইপ, কাঠের লাঠি ও বাঁশের লাঠি দিয়ে আক্রমণ করেন।

একপর্যায়ে সূত্রাপুর থানায় কর্মরত এসআই মো. নাহিদুল ইসলামের ওপর প্লাস্টিকের শক্ত পাইপ, কাঠের লাঠি ও ইট-পাটকেল এলোপাতাড়িভাবে নিক্ষেপ করায় হেলমেট খুলে যায় এবং মাথায় ও শরীরের বিভিন্ন স্থানে রক্তাক্ত জখম হয়। সরকারি সম্পত্তি ও জানমাল রক্ষার্থে অতিরিক্ত পুলিশ সদস্যরা এপিসিসহ ঘটনাস্থলে থাকা আসামিদের ছত্রভঙ্গ করার জন্য লাঠিচার্জ ও টিয়ারশেল নিক্ষেপ করেন। অবস্থান কর্মসূচিতে থাকা উচ্ছৃঙ্খল আসামিরা বিভিন্ন দিক থেকে পুলিশের ওপর হিংস্র ও আক্রমণত্মাকভাবে চড়াও হয়ে ইট-পাটকেল ও একাধিক ককটেল বিস্ফোরণ ঘটাতে থাকেন এবং আশপাশের দোকান ও বাড়িতে ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করে ও লাঠি দিয়ে আঘাত করে দোকান ও বাড়িঘরের ভাঙচুর করে ক্ষতিসাধন করতে থাকেন। একপর্যায়ে পুলিশ সরকারি সম্পত্তি, জানমাল রক্ষার্থে ও আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখার জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে ঘটনাস্থলে থাকা পুলিশ সদস্যদের ইস্যুকৃত অস্ত্র শর্টগানের কার্তুজ ও গ্যাসশেল নিক্ষেপ করে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *