তারা ফেরাউনের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছে: চরমোনাই পীর

Slider বাংলার মুখোমুখি


ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমির ও চরমোনাই পীর সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করীম বলেছেন, দেশপ্রেমিক-ঈমানদার মানুষ আজ একত্রিত হয়েছেন। ক্ষমতাসীন সরকারের কথা শুনলে মনে হয় তারা ফেরাউনের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছে। অবাধ সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন দাবি করা কোনো অন্যায় দাবি নয়।

আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে পুরানা পল্টনের হাউস বিল্ডিং চত্বরের দলীয় কার্যালয়ের সামনে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ ঢাকা মহানগরের উদ্যোগে আয়োজিত প্রতিবাদ সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

চরমোনাই পীর বলেন, ‘সরকার সমর্থকরা লুটপাট করে কানাডায় বেগমপড়া তৈরি করছে। ছাত্রলীগ নেতা হয়ে ২ হাজার কোটি টাকা বিদেশে পাচার করেছে। সরকারদলীয় লোকেরা লুটপাট করে দেশে-বিদেশে সম্পদের পাহাড় গড়ছে। যারা শান্তিপূর্ণভাবে আন্দোলন করছে আমি তাদের অভিনন্দন জানাচ্ছি।’

তিনি বলেন, ‘আমাদের পিঠ দেয়ালে ঠেকে গেছে। দেশের মানুষের জান, মাল-ইসলাম ঈমানের নিরাপত্তা আজ নেই। জালেম সরকার ক্ষমতায় থাকতে আমরা ঘরে বসে থাকব না।’

মোড়েলগঞ্জে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের সিনিয়র নায়েবে আমীর মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ ফয়জুল করীমের বক্তব্য প্রদানকালে পুলিশের বাধা ও অসৌজন্যমূলক আচরণের প্রতিবাদ, নির্বাচন কমিশন বাতিল, সংখ্যানুপাতিক নির্বাচন পদ্ধতির প্রবর্তন, বিদ্যমান রাজনৈতিক সংকট উত্তরণে সংসদ ভেঙে দিয়ে জাতীয় সরকারের অধীনে সুষ্ঠু নিরপেক্ষ জাতীয় নির্বাচনের দাবিতে এই প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।

দলের প্রেসিডিয়াম সদস্য প্রিন্সিপাল মাওলানা সৈয়দ মুহাম্মদ মোসাদ্দেক বিল্লাহ আল মাদানি বলেন, ‘দেশে একটি সংকট সৃষ্টি হয়েছে। অন্যদের ন্যায় আমরাও আওয়ামী লীগ সরকারের পদত্যাগ চাই। বর্তমান সরকার আসন্ন জাতীয় নির্বাচনে কারচুপির মাধ্যমে ক্ষমতায় আসার ষড়যন্ত্র করছে। মানুষের ভোটাধিকার আদায়ে জাতীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন দিতে হবে। বর্তমানে মানুষের ক্রয়-ক্ষমতা সাধ্যের বাইরে চলে গেছে।’

দলের মহাসচিব অধ্যক্ষ হাফেজ মাওলানা ইউনুছ আহমাদ বলেন, ‘সাম্প্রতিক সময়ে প্রশাসনের কিছু লোকের কর্মকাণ্ড বলে দেয় তারা সম্মানিত মানুষকে সম্মান দিতে পারে না। নির্বাচনে প্রার্থীর ওপরে হামলা করে বর্তমান সরকার স্মার্ট বাংলাদেশের মডেল দেখিয়েছে। আওয়ামী লীগের ডানা গজিয়েছে ধ্বংসের জন্য। এই সরকারের বিদায় না হওয়া পর্যন্ত চরমোনাই পীরের নেতৃত্বে আন্দোলন চলতে থাকবে।’

প্রেসিডিয়াম সদস্য অধ্যাপক আশরাফ আলী আকন বলেন, ‘মিথ্যা অভিযোগে যারা মানুষকে গ্রেপ্তার করে তারা জালেম। বিরোধী দলের কোনো কোনো নেতার বিরুদ্ধে শত শত মামলা দিয়ে রাখা হয়েছে। ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ সব দলের চেয়ে ভালো দল। এই দলে চোর, ডাকাত, দুর্নীতিবাজ নেই।’

দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা গাজী আতাউর রহমান বলেন, ‘বিএনপি, আওয়ামী লীগ সমাবেশ করলে আমরা ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশও মাঠে থাকব। বিএনপি-আওয়ামী লীগ শক্তি দেখালে আমরাও শক্তি দেখাব। ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ ৩৫ বছরে গঠনমূলক রাজনীতি করে দেখিয়ে দিয়েছে। ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ দেশপ্রেমিক রাজনৈতিক দল। আমাদের শান্তিপূর্ণ সভা-সমাবেশে বাধা দেওয়া হলে রাজধানীতে প্রতিবাদ করব। প্রয়োজনে আমরা প্রতিদিন রাজপথে নামব।’

সভাপতির বক্তব্যে দলের সহকারী মহাসচিব ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণ সভাপতি মাওলানা ইমতিয়াজ আলম বলেন, ‘যে সংবিধান মানুষের ভোটের অধিকার দিতে পারে না, সেই সংবিধান আমরা চাই না।’

প্রতিবাদ সমাবেশে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের যুগ্ম মহাসচিব মোহাম্মদ আমিনুল ইসলাম, ইঞ্জিনিয়ার আশরাফুল আলম, সহকারী মহাসচিব ও ঢাকা মহানগর উত্তর সভাপতি প্রিন্সিপ্যাল মাওলানা শেখ ফজলে বারী মাসউদ, মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ্ব আবুল কাশেম, মাওলানা এবিএম জাকারিয়া প্রমুখ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *