ঢাকা-১৭ আসনের উপনির্বাচনে ‘জালভোট ও অনিয়ম’ হয়েছে দাবি করে পুনর্নির্বাচন চেয়েছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী আশরাফুল হোসেন আলম ওরফে হিরো আলম। সেইসঙ্গে প্রার্থীর নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থতার জন্য ঢাকার পুলিশ কমিশনারের সমালোচনা করেছেন তিনি।
আজ রোববার প্রধান নির্বাচন কমিশনারের কাছে একটি চিঠি দিয়েছেন হিরো আলম। আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনে ওই চিঠি পৌঁছে দেওয়ার পর তিনি সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন।
উপনির্বাচনে হিরো আলমকে নিরাপত্তা দিতে না পারার বিষয়টি স্বীকার করে ঢাকার পুলিশ কমিশনার খন্দকার গোলাম ফারুক শনিবার বলেছিলেন, এই প্রার্থী যে দ্বিতীয়বার ওই কেন্দ্রে গেছেন, সেটি তাদের জানা ছিল না।
পুলিশ কমিশনারের ওই বক্তব্যকে ‘দুঃখজনক’ হিসেবে বর্ণনা করে হিরো আলম সাংবাদিকদের বলেন, ‘কমিশনার ফারুক স্যার যে কথাটা বলেছে তা খুবই দুঃখজনক, লজ্জাজনক। তার লজ্জা থাকলে এই কথা বলতেন না। কারণ একটাই, উনি বলেছেন আমি নাকি একই কেন্দ্রে দুইবার গেছি। ভিডিও ফুটেজগুলো দেখেন- আমি ওই কেন্দ্রে দুইবার গেছি কিনা। একবারই গিয়েছিলাম।’
ডিএমপি কমিশনারের ওই যুক্তি খণ্ডন করে হিরো আলম আজ বলেন, শুধু ভোটকেন্দ্র নয়, পুলিশের দায়িত্ব পুরো দেশের নিরাপত্তা দেওয়া।
গত ১৭ জুলাই ঢাকা-১৭ আসনে ভোটের দিন কেন্দ্রে কেন্দ্রে ভোটের পরিস্থিতি দেখছিলেন হিরো আলম। ভোটগ্রহণের শেষ দিকে বিকাল সোয়া ৩টার দিকে বনানী বিদ্যানিকেতন স্কুল অ্যান্ড কলেজ কেন্দ্রে তিনি হামলার শিকার হন।
তখন কেন্দ্রটির দায়িত্বে থাকা পুলিশ সদস্যরা হিরো আলমকে ঘিরে ধরে স্কুলের গেটের বাইরে দিয়ে আসেন। এরপর হিরো আলমকে সড়কে ফেলে বেধড়ক পেটানো হয়।
ওই ঘটনায় বনানী থানায় মামলা হওয়ার পর পুলিশ ৯ জনকে গ্রেপ্তার করে। তাদের মধ্যে চারজন বর্তমানে পুলিশ রিমান্ডে রয়েছেন।
শনিবার দুপুরে রাজধানীর পল্টনে এক অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে ঢাকার পুলিশ কমিশনার খন্দকার গোলাম ফারুক বলেন, নির্বাচনের দিন তিন ভাগে পুলিশের দায়িত্ব ভাগ করা থাকে। কেন্দ্রের ভেতরে একটি দল ব্যালট বাক্স পাহারা দেয় এবং নির্বাচনী কর্মকর্তাদের নিরাপত্তার বিষয়টি দেখে। বাইরে মোবাইল ডিউটিতে যারা থাকেন, তারা দেখেন কেউ (কোন ভোটার) বাধাপ্রাপ্ত হচ্ছেন কিনা, মারামারি হচ্ছে কিনা। আর কেন্দ্রের বাইরে বা ভেতরে যে দল আছে, তারা কিছু সামাল দিতে না পারলে তখন ‘স্ট্রাইকিং ফোর্স’ সেখানে যায়। হিরো আলমের ঘটনাটা, ওই কেন্দ্রে যখন সমস্যা হচ্ছিল, কেন্দ্রের পুলিশ তাকে বের করে দিয়েছে। বাইরে কী পরিস্থিতি ছিল, খুব সম্ভব তিনি (পুলিশ কর্মকর্তা) জানত না বাইরে কী অবস্থা। সে ভেতরেরটা দেখেছে। বাইরে পরিস্থিতি তার হয়ত ওভাবে জানা ছিল না। তারপরেও আমরা তদন্ত করে দেখছি আসলে তার বাইরের পরিস্থিতি জানা ছিল কি না।’