জাতিসংঘের নিয়মিত ব্রিফিংয়ে উঠে এসেছে বাংলাদেশে জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়কারীর টুইটের পর তাঁকে ডেকে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অসন্তোষ প্রকাশের বিষয়টি। ঢাকা-১৭ আসনের উপনির্বাচনে স্বতন্ত্রপ্রার্থী আশরাফুল হোসেনের (হিরো আলম) ওপর হামলার ঘটনায় উদ্বেগ জানিয়ে টুইট করার পর জাতিসংঘ কর্মকর্তাকে তলব করেছিল সরকার।
গত মঙ্গলবার বাংলাদেশে জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়কারী গোয়েন লুইস ঢাকা-১৭ আসনের উপনির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিরো আলমের ওপর হামলার ঘটনায় উদ্বেগ জানিয়ে টুইট করেন। ওই টুইটে তিনি বলেন, ‘নির্বাচনে অংশগ্রহণের ক্ষেত্রে প্রত্যেকের যে মৌলিক মানবাধিকার, তা নিশ্চিত ও সুরক্ষিত করতে হবে।’ এরপর জাতিসংঘের ভারপ্রাপ্ত আবাসিক সমন্বয়কারী শেলডন ইয়েটকে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে তলব করে অসন্তোষ প্রকাশ করেছে সরকার। এ সময় অসন্তোষ প্রকাশের পাশাপাশি ভবিষ্যতে বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে জাতিসংঘ যেন প্রকাশ্যে এ ধরনের মন্তব্য করা থেকে বিরত থাকে, সরকারের এমন প্রত্যাশার কথা জানিয়ে দেওয়া হয়।
গতকাল শুক্রবার জাতিসংঘের ব্রিফিংয়ে এই বিষয়ে সংস্থাটির মহাসচিবের মুখপাত্র স্টিফেন দুজারিকের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয়। ব্রিফিংয়ে একজন সাংবাদিক জানতে চান, কোনো ইস্যুতে উদ্বেগ জানিয়ে টুইট করার প্রতিক্রিয়ায় অসন্তোষ জানাতে কোনো সদস্যরাষ্ট্র জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়কারীকে তলব করতে পারে কি না এবং বিষয়টি সম্পর্কে জাতিসংঘ মহাসচিব অবগত কি না।
জবাবে স্টিফেন দুজারিক বলেন, বাংলাদেশে জাতিসংঘের যে দলটি কর্মরত রয়েছে, তাদের ওপর মহাসচিবের পূর্ণ আস্থা রয়েছে। তিনি বলেন, `সদস্যদেশের সরকার পক্ষ থেকে জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়কারীকে তলব করাটা অস্বাভাবিক কোনো বিষয় নয়। সমন্বয়কারীর বলা কোনো কথার সঙ্গে সে দেশের দ্বিমত থাকলে তলব করতেই পারে। এটাই যথাযথ প্রক্রিয়া। যখন কোনো বিষয় নিয়ে অসন্তোষ থাকে, তখন সদস্য দেশগুলো এ প্রক্রিয়া মেনে চলে। তবে বাংলাদেশে কর্মরত জাতিসংঘের দলের প্রতি আমাদের পূর্ণ আস্থা রয়েছে।’
স্টিফেন দুজারিকের কাছে আবারও জানতে চাওয়া হয়, ‘ঢাকাসহ বাংলাদেশের বিভিন্ন শহরে সরকারবিরোধী হাজার হাজার মানুষ বিক্ষোভ করেছেন। অন্তত দুজনের প্রাণ গেছে। আহত হয়েছেন কয়েক শ মানুষ। জাতিসংঘের পক্ষ থেকেও অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন আয়োজনের আহ্বান জানানো হয়েছে। এ পরিস্থিতিতে আপনি কি মনে করেন, বাংলাদেশে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন আয়োজনের পরিবেশ রয়েছে?’
জবাবে স্টিফেন দুজারিক বলেন, ‘আমি মনে করি, মানুষের কথা বলার, শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদ করার অধিকার রয়েছে। আর মানুষের এসব অধিকার রক্ষায় সহায়তা করা প্রশাসনের দায়িত্ব। তবে এসব প্রশ্ন আমাদের বহুবার করা হয়েছে। তাই নির্বাচনের আগে আমি আর এমন কোনো পূর্বাভাস দিতে চাচ্ছি না।’