দেশে মারাত্মক আকার ধারণ করেছে ডেঙ্গু পরিস্থিতি। সংক্রমণের পাশাপাশি প্রাণহানিও ঘটছে অতীতের তুলনায় সবচেয়ে বেশি। রোগীদের চাপ সামলাতে গিয়ে হিমশিম খেতে হচ্ছে চিকিৎসকদের। এমতাবস্থায় স্বাস্থ্যে জরুরি অবস্থা (হেলথ ইমার্জেন্সি) ঘোষণার দাবি জানিয়েছেন জনস্বাস্থ্যবিদরা। তবে এর প্রয়োজন দেখছে না সরকার।
স্বাস্থ্য সচিবের পর এবার স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী জাহিদ মালেক স্বাস্থ্যে জরুরি অবস্থার প্রয়োজন দেখছেন না বলে জানিয়েছেন। তবে এই অবস্থায় ডেঙ্গু প্রতিরোধে সবাইকে সজাগ থাকার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।
আজ শনিবার দুপুর সাড়ে ১২টায় রাজধানীর মুগদা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ডেঙ্গু পরিস্থিতি দেখতে গিয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে মন্ত্রী এ মত প্রকাশ করেন।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ‘দেশে গত কিছুদিন যাবৎ আবারও ডেঙ্গু সংক্রমণ বাড়ছে। আগে ঢাকায় বেশি হলেও এখন ঢাকার বাইরে বাড়ছে। এজন্য সবাইকে সচেতন হতে হবে। সবার সহযোগিতায় পেলে আমরা দ্রুতই এই সংকট কাটিয়ে উঠতে পারব।’
মশা নির্মূলে সিটি করপোরেশনকে তৎপরতা আরও বাড়ানোর আহ্বান জানিয়ে জাহিদ মালেক বলেন, ‘ঢাকার দুই সিটির মধ্যে বেশ কিছু এলাকা ডেঙ্গুর হটস্পটে পরিণত হয়েছে। এই হটস্পটগুলোতে দ্রুততার সঙ্গে মশা নিয়ন্ত্রণ করুন। না হলে পরিস্থিতির আরও খারাপ হবে। আমাদের হাসপাতাল প্রস্তুত, তবে পরিস্থিতি মোকাবিলায় মশা মারার বিকল্প নেই। একই সঙ্গে নাগরিকদেরও আশেপাশের পরিবেশ পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে। বাসা বাড়ির ছাদ, আঙিনায় যেন পানি জমে না থাকে, সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘কলকারখানা এবং অফিসগুলোতেও লার্ভা জমছে, এগুলো ব্যক্তিগত উদ্যোগে স্প্রে করার উদ্যোগ নিতে হবে।’ এডিস মশা মারার ওষুধ কতটুকু কার্যকর হচ্ছে তা দেখারও আহ্বান জানান তিনি।
এ সময় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল বাশার মোহাম্মদ খুরশিদ আলম ছাড়াও অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আহমেদুল কবির, রোগ নিয়ন্ত্রণ শাখার পরিচালক অধ্যাপক ডা. নাজমুল ইসলামসহ অনেকে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্যমতে, দেশে এখন পর্যন্ত ডেঙ্গু নিয়ে এ বছর হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ২৮ হাজার ৪৪৩ জন মানুষ। এর মধ্যে মারা গেছেন ১৫৬ জন।
এদিকে শুধু বাংলাদেশ নয়, লাতিন আমেরিকার ব্রাজিল, পেরু, আর্জেন্টিনাসহ এশিয়ার সিঙ্গাপুর, ফিলিপাইনসহ বহু দেশে ডেঙ্গুর মারাত্মক পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। এমতাবস্থায় বিশ্বব্যাপী ডেঙ্গু মহামারি আকার ধারণের শঙ্কা করছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। ইতিমধ্যে প্রতিটি দেশকে সতর্ক করেছে সংস্থাটি।