প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বলেছেন, এ ঘটনায় ‘ভারত লজ্জিত’

Slider সারাবিশ্ব

ভারতের মনিপুরে জাতিগত দাঙ্গার জেরে দুই নারীকে বিবস্ত্র করে হাঁটানোর একটি ভিডিও দুই মাস পর আলোচনায় এসেছে। ভিডিওটি ভাইরাল হওয়ার পর গতকাল একজন অভিযুক্তকে আটক করেছে পুলিশ। এনডিটিভি জানিয়েছে, ওই সময় দুই নারীকে দলবদ্ধ ধর্ষণ করা হয়, বাধা দেওয়ায় পিটিয়ে হত্যা করা হয় দুই যুবককে। সংসদে গতকাল ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বলেছেন, এ ঘটনায় ‘ভারত লজ্জিত’। কিন্তু এর আগে দিল্লিতে চলন্ত বাসে নির্ভয়া ধর্ষণকা- ও এর পর আরও অনেক ধর্ষণকা-ে জোরালো বিক্ষোভ হওয়া সত্ত্বেও ভারতে এ ধরনের জঘন্য অপকর্ম ও সন্ত্রাস বন্ধ হয়নি।

মিয়ানমার সীমান্তসংলগ্ন রাজ্য মণিপুরে মে মাসের প্রথম সপ্তাহে জাতিগত দাঙ্গা ভয়াল রূপ নেয়। সংখ্যাগরিষ্ঠ হিন্দু মেইতি ও সংখ্যালঘু খ্রিষ্টান কুকি সম্প্রদায়ের মধ্যে এই দাঙ্গা। এরই মধ্যে ১৩০ জন প্রাণ হারিয়েছে এবং ৬০ হাজার মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে।

যে দুজন নারী ধর্ষণের শিকার হয়েছেন, তারা কুকি। আর যারা ধর্ষণ করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে তারা হলে মেইতি।

বিবিসি নিউজের দিল্লি প্রতিনিধি গীতা পান্ডে এক প্রতিবেদনে বলেছেন, ভারতে নারীদেহ যেন যুদ্ধক্ষেত্র হয়ে উঠেছে। জাতিগত দাঙ্গায় বা সংঘাত-সংঘর্ষে নারীদের শারীরিক লাঞ্ছনা নিগ্রহের শিকার হতে হয়।

মনিপুরের ঘটনা সম্পর্কে পুলিশ জানিয়েছে, ওই ধর্ষণের ঘটনা ৪ মের। কেন্দ্রীয় সরকার সামাজিক মাধ্যমের সব প্ল্যাটফরম কর্তৃপক্ষকে ওই ভিডিওটি সরিয়ে নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে। ইন্ডিজেনিয়াস ট্রাইবাল লিডারস ফোরাম (আইটিএলএফ) এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, কাংপোকপি গ্রামে এ ঘটনা ঘটেছে। গ্রামটি পুড়িয়ে দিয়েছিল দুর্বৃত্তরা। আর দুজনকে পিটিয়ে হত্যা করেছে তারা।

পুলিশের কাছে করা অভিযোগনামায় অবশ্য এক মেয়েকে দলবদ্ধ ধর্ষণের কথা বলা হয়েছে। তৃতীয় আরেক নারীকে বিবস্ত্র করা হয়েছিল, তবে তাকে ভিডিওতে দেখা যায়নি।

কেন্দ্রীয় মন্ত্রী স্মৃতি ইরানি এ ঘটনা ‘একদম অমানবিক’ বলে অভিহিত করেছেন। তবে বেশ কয়েকজন বিরোধীদলীয় নেতা ক্ষমতাসীন ভারতীয় জনতা পার্টি সরকারকে দুষছেন; তাদের অভিযোগ মণিপুরে জাতিগত দাঙ্গা থামাতে কোনো কার্যকর পদক্ষেপ নেয়নি মোদির সরকার।

কংগ্রেসের নেতার প্রিয়াংকা গান্ধী ভদ্র বলেছেন, মনিপুরে নারীদের বিরুদ্ধে যৌন সহিংসতরা যে ছবি ছড়িয়ে পড়েছে, তা হৃদয়বিদারক।

দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল বলেন, ‘ভারতীয় সমাজে এ ধরনের জঘন্য কা-কে কিছুতেই বরদাশত করা হবে না।’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *