নিউইয়র্কে ঘটে যাওয়া শামীম ওসমান ইস্যুতে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। দেশটি বলেছে- গণতন্ত্রে এ ধরনের রাজনৈতিক সহিংসতার কোনো স্থান নেই।
গতকাল সোমবার যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার নিয়মিত ব্রিফিং করেন। এ সময় তাকে বাংলাদেশ বিষয়ে বিভিন্ন প্রশ্নের পাশাপাশি শামীম ওসমানের ঘটনাটি নিয়ে প্রশ্ন করলে তিনি এ মন্তব্য করেন।
মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের প্রেস ব্রিফিংয়ে জানতে চাওয়া হয়, গত বুধবার রাতে যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে আওয়ামী লীগের সফররত এক সংসদ সদস্যের (শামীম ওসমান) সামনে বিক্ষোভ দেখান এক বিরোধী কর্মী। ঘটনার কয়েক ঘণ্টার মাথায় এই বিরোধী কর্মীর বাংলাদেশে থাকা পরিবারের সদস্যরা হামলার শিকার হন। ক্ষমতাসীন দলের নেতা-কর্মীদের হামলার ঘটনাটি ফেসবুক লাইভে প্রচার করা হয়। লাইভে বলা হয়, দেশের বাইরে যারা ক্ষমতাসীনদের বিরুদ্ধে কথা বলেন, তাদের বাড়িতে হামলা করে জবাব দেওয়া হচ্ছে। সুতরাং কেউ যদি যুক্তরাষ্ট্রে বসে ক্ষমতাসীন দলের বিপক্ষে কথা বলে, প্রতিবাদ করে, তাহলে দেশে তার পরিবার নিরাপদ নয়। এ ব্যাপারে তাদের মন্তব্য কী?
প্রশ্নের জবাবে মিলার বলেন, ‘যে ধরনের হামলার কথা বলা হলো, গণতান্ত্রিক নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় তার কোনো স্থান নেই।’
সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রে সফররত নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সংসদ সদস্য এ কে এম শামীম ওসমানের সামনে নিউইয়র্কে বাংলাদেশি ব্যবসায়ীদের প্রাণকেন্দ্র জ্যাকসন হাইটসের ৭৩ স্ট্রিটে বিক্ষোভ করেন একদল বিরোধী কর্মী। এরপর বাংলাদেশে তাদের একজনের বাড়িতে হামলা হয়।
এদিকে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের এ প্রেস ব্রিফিংয়ে এক সাংবাদিক প্রশ্ন করেন- সম্প্রতি বাংলাদেশ সফর শেষে ফিরেছেন যুক্তরাষ্ট্রের আন্ডার সেক্রেটারি। এরই মধ্যে বিরোধী দলের বিরুদ্ধে শাসকগোষ্ঠীর হামলা ফিরে এসেছে। সবেমাত্র সোমবার একটি উপনির্বাচন হয়েছে। তা বর্জন করেছে প্রধান বিরোধী দল। এমনকি সেখানে স্বতন্ত্র একজন প্রার্থীর ওপর হামলা হয়েছে। তাকে হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে। এই নির্বাচনে শতকরা ১০ ভাগেরও কম ভোট পড়েছে। সুতরাং কিভাবে আপনি বিশ্বাস করবেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অধীনে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন হবে, যেহেতু ২০১৪ ও ২০১৮ সালের নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু ছিল না। আর এখন উপনির্বাচনও অবাধ ও সুষ্ঠু হয়নি। প্রার্থী তো হামলার শিকার হয়েছেন। এর প্রেক্ষিতে আপনাদের অবস্থান কী? আপনারা কি এ বিষয়টি ফলো করছেন?
এ প্রশ্নের জবাবে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ম্যাথু মিলার বলেন, ‘আমি বলব, গণতান্ত্রিক নির্বাচনে এ ধরনের রাজনৈতিক সহিংসতার কোনো স্থান নেই। আমরা বাংলাদেশ সরকারকে সহিংসতার যেকোনো ঘটনা পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে, স্বচ্ছভাবে ও নিরপেক্ষভাবে তদন্ত করতে উৎসাহিত করি। যারা এ হামলার সঙ্গে জড়িত, তাদের বিচারের আওতায় আনতে বলি।’
মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র আরও বলেন, ‘আমি যেটা বলব, যেমনটা আগেও আমরা বলেছি, বাংলাদেশ সরকার অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের আয়োজন করবে বলে আমরা আশা করব। আমরা বিষয়টি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করে যাব।’