আফগানিস্তানের বিপক্ষে আগের খেলা দুই টি-টোয়েন্টি সিরিজের একটি হোয়াইটওয়াশ এবং একটিতে ড্র করে বাংলাদেশ। তবে এবার ঘরের মাঠে দুই ম্যাচের সিরিজের দুটিতেই হারিয়ে আফগানিস্তানের বিপক্ষে সিরিজ জিতে নিল বাংলাদেশ।
বৃষ্টিবিঘ্নিত ম্যাচে প্রথমে ব্যাট করে ১৭ ওভারে ১১৬ রান করে আফগানিস্তান। বৃষ্টি আইনে বাংলাদেশের সামনে লক্ষ্য দাঁড়ায় ১১৯ রানের। এই রান ৫ বল ও ৬ উইকেট হাতে রেখেই পার করে ফেলে বাংলাদেশ।
১১৯ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে দারুণ সূচনা করে বাংলাদেশ। আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারে এই প্রথম ওপেনিংয়ে নেমেছেন আফিফ হোসেন। তিনি ও লিটন দাস মিলে পাওয়ার প্লেতেই তোলেন ৫৪ রান। তবে পাওয়ার প্লের পর ধীর হয়ে আসে রানের গতি। পরের ৩ ওভারে মাত্র ১৩ রান যোগ করেন এই দুজন। এই চাপেই দশম ওভারের প্রথম বলে উইকেট দিয়ে বসেন লিটন। মুজিব-উর-রহমানের বলে দুর্দান্ত ক্যাচে লিটনকে (৩৫) ফেরান রশিদ খান।
লিটনের বিদায়ের ২ বল পর ফেরেন আফিফ হোসেনও (২৪)। স্লগ সুইপ করতে গিয়ে ডিপ মিডউইকেটে করিম জানাতের হাতে ধরা পড়েন তিনি। দলের বিপদ বাড়িয়ে পরের ওভারের শেষ বলে ফেরেন নাজমুল হোসেন শান্তও। আজমাতুল্লাহ ওমারজাইয়ের বলে সরাসরি বোল্ড হন তিনি।
এরপর সাময়িক চাপে পড়া বাংলাদেশকে চাপমুক্ত করেন আগের ম্যাচের নায়ক তাওহীদ হৃদয় ও অধিনায়ক সাকিব আল হাসান। ৩১ রানের জুটি। জয় থেকে দল যখন ১২ রান দূরে তখন এগিয়ে এসে খেলতে গিয়ে ক্যাপ উঠিয়ে দেন হৃদয় (১৯)। জয়ের জন্য বাকি পথটুকু স্বাচ্ছন্দ্যেই পার করেন সাকিব ও শামীম হোসেন। ছক্কা মেরে ম্যাচ শেষ করেন শামীম।
সন্ধ্যা ৬টায় শুরু হয় দুই ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজের শেষ ম্যাচটি। টস জিতে ফিল্ডিং বেছে নেওয়া বাংলাদেশকে প্রথম ওভারেই সাফল্য এনে দেন তাসকিন আহমেদ। বড় শট খেলতে গিয়ে ক্যাচ উঠিয়ে দেন আফগান ওপেনার রাহমানুল্লাহ গুরবাজ। তাসকিনের অফ স্টাম্পের বাইরে করা শর্ট লেংথের ডেলিভারিতে পুল করতে গিয়ে টাইমিং মিস করেন তিনি। বল আকাশে উঠে গেলে নিজের বলে নিজেই ক্যাচ নেন তাসকিন। এর মাধ্যমে টি-টোয়েন্টিতে নিজের ৫০ উইকেট পূরণ করেন এই পেসার।
নিজের দ্বিতীয় ওভারে আবারও তাসকিনের আঘাত। দলীয় তৃতীয় ওভারের চতুর্থ বলে এবার তিনি ফেরান হজরতউল্লাহ জাজাইকে। স্লিপ দিয়ে বল সীমানাছাড়া করতে গিয়ে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দেন জাজাই।
ম্যাচে ৭ ওভার ২ বল হওয়ার পর শুরু হয় বৃষ্টি। আফগানিস্তানের রান তখন ২ উইকেট হারিয়ে ৩৯, উইকেটে ইব্রাহিম জাদরান এবং মোহাম্মদ নবি। দেড় ঘণ্টারও বেশি বন্ধ থাকার পর আবার খেলা শুরু হয় সোয়া আটটায়। বৃষ্টির কারণে অনেকটা সময় নষ্ট হওয়ায় প্রত্যেক দলের ইনিংস থেকে ৩ ওভার কমানো হয়।
বৃষ্টির পর এলোমেলো শট খেলতে থাকেন আফগান ব্যাটাররা। নাসুম আহমেদের বলে পরপর জীবন পান মোহাম্মদ নবি। তবে জীবন পেয়েও কাজে লাগাতে পারেননি এই ব্যাটার। মোস্তাফিজুর রহমানের করা দশম ওভারের প্রথম বলেই ফেরেন তিনি। পরের ওভারে এসে ২ উইকেট নেন সাকিব আল হাসান। ১১তম ওভারের প্রথম বলে ইব্রাহিম জাদরানকে (২২) ফেরানোর পর শেষ বলে বিদায় করেন নাজিবুল্লাহ জাদরানকেও।
৬৭ রানে ৫ উইকেট হারিয়ে বিপর্যয়ে পড়া দলকে টেনে তোলেন আজমাতুল্লাহ ওমারজাই এবং করিম জানাত। তাদের ৪২ রানের জুটিতে একশ পার করে আফগানরা। ১৬তম ওভারের পঞ্চম বলে ১০৯ রানের মাথায় ওমারজাইকে (২৫) ফেরান মোস্তাফিজ। শেষ ওভারে একই রানে করিম জানাতও ফেরেন। ২০ রান করা জানাতকে ফেরান তাসকিন আহমেদ। শেষ পর্যন্ত ৭ উইকেট হারিয়ে ১১৬ রান তুলতে সক্ষম হয় আফগানরা।
বাংলাদেশের হয়ে ৩টি উইকেট নেন তাসকিন আহমেদ। দুইটি করে উইকেট শিকার সাকিব ও মোস্তাফিজুরের।