দীর্ঘদিন প্রেমের পর ২০১০ সালের আজকের এদিনে বিয়ে করেন জনপ্রিয় নির্মাতা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী ও অভিনেত্রী নুসরাত ইমরোজ তিশা। দেখতে দেখতে বিবাহিত জীবনের ১৩ বছর অতিক্রম করেছেন এই দম্পতি। তাদের পরিবারে আছে ফুটফুটে এক কন্যা ইলহাম নুসরাত ফারুকী। শোবিজে সুখী পরিবারের তকমাও আছে তাদের। তবে তিশা-ফারুকীর প্রেমকে পরিণয়ে রূপ দেওয়ার জার্নিটা মোটেও সহজ ছিল না।
মোস্তফা সরয়ার ফারুকী বলেন, ‘আমাদের সম্পর্কের ক্ষেত্রে, তিশার মা হেনরি কিসিঞ্জারের চরিত্র প্লে করতেন! যেমন কূটনৈতিকরা হয় আরকি! তারা সামনে একরকম আর পেছনে অন্যরকম! আমি যখন তিশার বাসায় যেতাম, তখন তিনি আমাকে খুব আদর-যত্ন করতেন, খাওয়াতেন। বাবা-বাবা বলে ডাকতেন। তার কথাবার্তা, ব্যবহার দেখে আমি ভাবতাম- তিনি আমাদের সম্পর্কে রাজি। কিন্তু আমার পেছনে তিশার উপরে তিনি প্রচন্ড চাপ সৃষ্টি করতেন।’
ফেলে আসার দিনগুলোর কথা স্মরণ করে তিনি আরও বলেন, ‘তিনি তিশাকে বলতেন, “তুমি ফারুকীকে কেন বিয়ে করবা? ছেলের গাড়ি নাই, ডিগ্রি নাই, তারপরও তুমি কেনো ওর সঙ্গে সম্পর্ক করছ! এটা কি করতেছো?” কিন্তু এখন আমার শাশুড়ির সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক। আমাদের বড় চ্যালেঞ্জ ছিল- আমার শাশুড়িকে রাজি করানো।’
কীভাবে সে রাজি হলেন? জানতে চাইলে ফারুকী বলেন, ‘এটা আমি করিনি, করেছে তিশা।’
এ প্রসঙ্গে তিশা বলেন, ‘শুধু আমার মাকেই নয়, আমার শাশুড়িকেও (ফারুকীর মা) আমি রাজি করিয়েছি। আমি যখন ওকে বলতাম, আমার কথা তোমার বাসায় বলো না কেন? আমাকে তোমার বাসায় নিয়ে যাওনা কেন? একথা শুনে ও বলতো, না না, আরো পরে, আরো পরে। কারণ আমার আগের অভিজ্ঞতা ভালো না।’
একদিন হুট করেই ফারুকীর বাসায় চলে যান তিশা। সেই ঘটনার কথা জানিয়ে এই অভিনেত্রী বলেন, ‘আমি একদিন নিজ থেকেই ওর বাড়িতে চলে যাই। বাড়িতে গিয়ে ওর মাকে বললাম, আপনার ছেলে আমাকে পছন্দ করে। আমাকে গ্রহণ করুন প্লিজ। আমার শাশুড়ি তখন ওকে ফোন দিয়ে বলল, “অ্যাক্টিং করে তিশা নামে একটা মেয়ে আছে না, ও তো বাসায় এসে এরকম কথা বলছে। তুই বাসায় আয়।” এই কথা শুনে সঙ্গে সঙ্গে ও আমাকে ফোন করে বলে, “তুমি বাসায় এসেছ কেন?” আমি বললাম, আপনি তো পরিচয় করিয়ে দেবেন না, তাই আমি নিজেই পরিচিত হতে আসলাম। যাই হোক, আমার শাশুড়ি তখনই রাজি হয়ে যান। তিনি অনেক ভালো মনের একজন মানুষ।’
এবার নিজের মাকে রাজি করানোর প্রসঙ্গে তিশা বলেন, ‘আসলে আম্মুর মাথায় ছিল, আমার মেয়ে তো ছোট। তাই তিনি সিদ্ধান্ত নিতে পারছিলেন না। ওই সময়ে মিডিয়াতে অনেক ভাঙন (সংসার) চলছিল। মা’র রাজি না হওয়ার পেছনে এটাও একটা বড় কারণও ছিল। যাই হোক, পাঁচ বছর লেগেছিল আম্মুকে রাজি করাতে। পাঁচ বছর পরে একদিন আম্মু বললেন, “আর না। বুঝছি- এই সম্পর্ক ভাঙবে না, যা খুশি কর!” আম্মু যেদিন এ কথা বলেন ঠিক তার পর দিনই আমি বিয়ের ঘোষণা দেই।’