আগামী ১৮ ও ১৯ জুলাই বিএনপির পদযাত্রা। একই দিনে ‘শান্তি ও উন্নয়ন সমাবেশ’ ব্যানারে রাজধানীজুড়ে শোভাযাত্রা করবে আওয়ামী লীগ। দুই দিনই শোভাযাত্রা সহযোগে এ সমাবেশে যোগ দেবেন নেতাকর্মীরা। সমাবেশ দুটিতে প্রধান অতিথি থাকবেন দলের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। সে সঙ্গে ওই দুই দিন ঢাকার প্রতিটি থানা ও ওয়ার্ডে সতর্ক পাহারায় থাকবেন নেতাকর্মীরা।
দলীয় কর্মসূচির বিষয় সামনে রেখে আওয়ামী লীগ ও দলের সহযোগী সংগঠনের নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন ওবায়দুল কাদের। এ সময় তিনি জাতীয় নির্বাচন সামনে রেখে ধারাবাহিক কর্মসূচির ঘোষণা দেন। ১৮ ও ১৯ জুলাই আওয়ামী লীগ যে কর্মসূচি করছে সেটাও ওই ধারাবাহিক কর্মসূচির অংশ বলে জানান তিনি। বলেন, আমাদের আওয়ামী লীগের উদ্যোগে যে সমাবেশ, এ সমাবেশের শিরোনাম হবে- ‘শান্তি ও উন্নয়ন সমাবেশ’। এই ‘শান্তি ও উন্নয়ন’ সমাবেশের প্রথম ধাপ শুরু হচ্ছে আগামী ১৮ জুলাই। এদিন মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের উদ্যোগে রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন থেকে বঙ্গবন্ধু ভবন পর্যন্ত শোভাযাত্রা অনুষ্ঠিত হবে। পরদিন ১৯ জুলাই ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগ সাত রাস্তা থেকে মহাখালী পর্যন্ত শোভাযাত্রা করবে।
ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘সেপ্টেম্বর মাসে নির্বাচনের সিডিউল ঘোষণা করা পর্যন্ত আমরা শান্তিপূর্ণভাবে সতর্কতার সঙ্গে রাজপথে আছি, থাকব। এটা হলো অভিন্ন কর্মসূচি। আমরা শান্তিপূর্ণ নির্বাচন চাই। শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের জন্য শান্তিপূর্ণ পরিবেশ প্রয়োজন। সে পরিবেশ আমরা রক্ষা করব।’ এ সব কর্মসূচিতে বিএনপির কর্মসূচির সঙ্গে যেন মুখোমুখি না হয়, তা নিশ্চিত করতে সংগঠনের নেতাদের নির্দেশ দেন তিনি।
ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আগস্ট মাস আসছে, কৃষক, শ্রমিক ও ছাত্র সমাবেশ করতে পারে। যুবলীগ যেটা শুরু করেছে, সেটা (যুব সমাবেশ) কন্টিনিউ করুক।’ নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আমাদের আচরণে আমরা যে একটি দায়িত্বশীল রাজনৈতিক দল, তার প্রমাণ জনগণের সামনে রাখতে হবে। আসন্ন নির্বাচনকে সামনে রেখে আমরা এমন কিছু করব না, যাতে জনমনে বিভ্রান্তি তৈরি হয়। আর জনগণ যেন মনে না করে, আমরা সংঘাতের কোনো
উস্কানি দিচ্ছি। আমরা জেতা দল, আমরা জিতব ইনশাআল্লাহ। কয়েকটা মাস আমাদের ধৈর্য ও সহিষ্ণুতার পরিচয় দিতে হবে।’
এমন সময় দলের সহযোগী সংগঠনের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের মধ্যে দূরত্ব দেখা গেছে, যা সমাধানের তাগিদ দেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক। সবাইকে ঐক্য ধরে রাখার তাগিদ দেন তিনি। তিনি বলেন, কোনো গ্যাপ থাকলে আলোচনা করে দূরত্ব ঘোচাতে হবে।
এদিকে আজ শনিবার মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ আওয়ামী লীগসহ দলের ভ্রাতৃপ্রতীম ও সহযোগী সংগঠন বিশেষ বর্ধিত সভা করবে বলে জানা গেছে। এ সভায় দলীয় হাইকমান্ডের নির্দেশনা মোতাবেক দলীয় কর্মসূচি সফল করার তাগিদ দেওয়া হবে। একই সঙ্গে নিজ নিজ এলাকায় নেতাকর্মীদের সতর্ক অবস্থানে থাকারও নির্দেশনা দেওয়া হবে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে মির্জা আজম সাংবাদিকদের বলেন, শান্তি ও উন্নয়ন সমাবেশে প্রধান অতিথি থাকবেন দলের সাধারণ সম্পাদক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল। এই শোভাযাত্রা থেকে বিএনপির কর্মসূচি নিয়ে দলের প্রতিক্রিয়া জানানো হবে।
ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন কবির বলেন, ১৮ জুলাই বিকাল ৩টায় ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন থেকে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ধানমন্ডির বাড়ি পর্যন্ত এবং ১৯ জুলাই বিকাল ৩টায় সাতরাস্তা থেকে মহাখালী পর্যন্ত শোভাযাত্রা হবে।
ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ বজলুর রহমান বলেন, বিএনপি পদযাত্রা কর্মসূচির নামে রাজধানীতে সন্ত্রাস ও নৈরাজ্যমূলক কর্মকা- চালানোর ষড়যন্ত্র করছে। তাদের এ ষড়যন্ত্র মোকাবিলায় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী রাজধানীর ৫০টি থানা, ১৩৯টি ওয়ার্ড ও একটি ইউনিয়নে সতর্ক অবস্থায় থাকবে। সে সঙ্গে শোভাযাত্রায় কয়েক লাখ সমর্থক উপস্থিত করার পরিকল্পনা রয়েছে।