হৃদয়ের ব্যাটে হাসল বাংলাদেশ

Slider খেলা


আফগানিস্তানের দেওয়া ১৫৫ রানের লক্ষ্যে একপর্যায়ে ১০ ওভার ১ বলে ৬৪ রান তুলতেই ৪ উইকেট হারিয়ে বসে বাংলাদেশ। সেখান থেকে ৪৩ বলে ৭৩ রানের জুটি গড়েন তাওহীদ হৃদয় ও শামীম হোসেন পাটোয়ারি। এই জুটির কল্যাণেই শেষ পর্যন্ত ১ বল ও ২ উইকেট হাতে রেখে জয়ের লক্ষ্যে পৌঁছে যায় বাংলাদেশ। শেষ ওভারে হ্যাটট্রিক করেও আফগানদের জেতাতে পারলেন না করিম জানাত।

সিলেটের ওসমানী স্টেডিয়ামে ২ ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজের প্রথমটিতে আফগানিস্তানের দেওয়া ১৫৫ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে ৩৯ রান তুলতেই দলটি হারিয়ে বসে রনি তালুকদার, নাজমুল হোসেন শান্ত ও লিটন দাসের উইকেট। এরপরই বাধ সাধে বেরসিক বৃষ্টি। ৭ ওভার ২ বলে বাংলাদেশের রান যখন ৪১, তখনই বৃষ্টির কারণে খেলা বন্ধ করে দেন আম্পায়ার। তবে অল্পক্ষণ ছিল বৃষ্টি। ফের শুরু হয় খেলা।

বৃষ্টির কিছুক্ষণ পরই ফেরেন সাকিব আল হাসান। ফরিদ আহমেদের বলে চালিয়ে খেলতে গিয়ে করিম জানাতের হাতে ক্যাচ দেন তিনি। ১৭ বলে ১৯ রান করে ফেরেন তিনি।

সাকিবের বিদায়ের পর বাংলাদেশের খেলার মোড় ঘুরাতে শুরু করেন দুই তরুণ ব্যাটার হৃদয় ও শামীম। এর মধ্যে আজমাতুল্লাহ ওমারজাইয়ের এক ওভারেই এই দুজন তুলে নেন ২১ রান। এই দুজন নিজেদের ৫০ রানের জুটি গড়েন মাত্র ২৯ বলে। ১৩৭ রানের মাথায় রশিদ খানের বলে স্লগ সুইপ করতে গিয়ে উইকেট দেন শামীম। যাওয়ার আগে ২৫ বলে ৪টি চারের মারে ৩৩ রান করেন শামীম। শেষ দিকে ২ বাউন্ডারিতে ৮ রান করে বাংলাদেশের জয়ের পথ আরও সহজ করে দেন মিরাজ।

১৯তম ওভারের দ্বিতীয় বলে মিরাজের আউটের পর তৃতীয় বলে ফেরেন তাসকিন আহমেদও। চতুর্থ বলে নাসুম আহমেদকে ফিরিয়ে হ্যাটট্রিক পূরণ করেন জানাত। ২ বলে ২ রান দরকার হওয়া ম্যাচের পঞ্চম বলে চার মেরে বাংলাদেশের জয় নিশ্চিত করেন শরীফুল ইসলাম। শেষ পর্যন্ত ৪৭ রানে অপরাজিত থেকে দলের জয় নিশ্চিত করেন হৃদয়।

এর আগে, প্রথম ইনিংসে ৭ উইকেট হারিয়ে ১৫৪ রানের চ্যালেঞ্জিং সংগ্রহ তোলে আফগানিস্তান। ইনিংসের শুরু থেকেই আফগানিস্তানকে চেপে ধরে বাংলাদেশ। দ্বিতীয় ওভারেই ফিরতে পারতেন রাহমানুল্লাহ গুরবাজ। তাসকিনের বল সজোরে হাঁকালে টপ এজ হয়। তবে বলটি হাতে আটকাতে পারেননি রনি তালুকদার। তৃতীয় ওভারেই উইকেটের দেখা পায় বাংলাদেশ। নাসুম আহমেদের প্রথম বলে ছক্কা হাঁকানোর পর দ্বিতীয় বলও বাউন্ডারিছাড়া করতে যান হজরতউল্লাহ জাজাই। তবে তাওহীদ হৃদয়ের হাতে ধরা পড়েন তিনি।

চতুর্থ ওভারে আবারো আফগান শিবিরে বাংলাদেশের আঘাত। জীবন পেয়েও কাজে লাগাতে পারলেন না গুরবাজ। সেই তাসকিনের বলেই ফিরলেন তিনি। যাওয়ার আগে ১১ বলে ২ চার ও ১ ছক্কায় ১৬ রান করেন তিনি। পরের ওভারে আঘাত হানলেন শরিফুল। এই পেসারের অতিরিক্ত বাউন্সি বলে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দেন ইব্রাহিম জাদরান। ব্যাটিং অর্ডারে প্রমোশন পেয়ে পাঁচে নেমেছিলেন করিম জানাত। তবে দলের বিপদ বাড়িয়ে ৫২ রানের মাথায় বিদায় নেন তিনি। ৮ম ওভারে সাকিব আল হাসানের করা চতুর্থ বলে নাজমুল হোসাইন শান্তর হাতে ক্যাচ তুলে দেন তিনি।

৫২ রান হারিয়ে আফগানরা যখন দিশা খুঁজে পাচ্ছিল না তখন দলকে টেনে তোলার কাজ শুরু করেন মোহাম্মদ নবী ও নাজিবুল্লাহ জাদরান। গড়েন ৩৫ রানের জুটি। ১৪তম ওভারের পঞ্চম বলে মেহেদী হাসান মিরাজের বলে লিটন দাসের দুর্দান্ত এক ক্যাচে নাজিবুল্লাহ ফিরলে ভাঙে এই জুটি। ১৩ ওভার ৫ বলে ৮৭ রান তুলতেই প্রথম পাঁচ উইকেট হারায় আফগানিস্তান। সেখান থেকে পাল্টা আক্রমণ শুরু করেন মোহাম্মদ নবী ও আজমাতুল্লাহ ওমারজাই। শেষ ৩৭ বলে ৬৭ রান তোলে দলটি। ১৯তম ওভারের শেষ বলে ওমারজাই ফিরলেও শেষ পর্যন্ত ৫৪ রানে অপরাজিত ছিলেন নবী। তাতে প্রথম ইনিংসে নির্ধারিত ২০ ওভার শেষে তাদের সংগ্রহ দাঁড়িয়েছে ৭ উইকেট হারিয়ে ১৫৪ রান।

৪ ওভারে ২৭ রান দিয়ে ২ উইকেট নিয়ে বাংলাদেশের সবচেয়ে সফল বোলার অধিনায়ক সাকিব আল হাসান। একটি করে উইকেট পেয়েছেন তাসকিন, মিরাজ, নাসুম, মোস্তাফিজ ও শরিফুল।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *