কক্সবাজারের উখিয়ায় রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শনে আসা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধি দলের কাছে দ্রুত মিয়ানমারে প্রত্যাবাসনের ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন রোহিঙ্গারা। প্রতিনিধি দলের সঙ্গে আলাপকালে রোহিঙ্গারা জানিয়েছেন, ক্যাম্পে আশ্রিত বন্দিজীবন আর চাই না। এজন্য মিয়ানমারকে চাপ প্রয়োগের মাধ্যমে স্বদেশে ফেরাতে যুক্তরাষ্ট্রকে জোরালো ভূমিকা রাখার অনুরোধ জানান রোহিঙ্গারা। এ সময় প্রতিনিধি দলটি রোহিঙ্গাদের সঙ্গে ক্যাম্পের শিক্ষাব্যবস্থা, খাদ্য, নিরাপত্তা নিয়েও কথা বলে।
পরিদর্শনকালে প্রতিনিধি দলের প্রধান মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের বেসামরিক নিরাপত্তা, গণতন্ত্র ও মানবাধিকার বিষয়ক আন্ডার সেক্রেটারি উজরা জেয়ার হাতে রোহিঙ্গাদের সংগঠন আরাকান রোহিঙ্গা সোসাইটি ফর পিস অ্যান্ড হিউম্যান রাইটসের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ জোবায়েরের নেতৃত্বে একদল রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন দাবি সংবলিত একটি আবেদনও দেন। ১০ সদস্যের প্রতিনিধি দলে আরও ছিলেন যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ এশিয়াবিষয়ক সহকারী সেক্রেটারি ডোনাল্ড লু, ঢাকার মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাস ও দক্ষিণ এশিয়ায় শরণার্থীবিষয়ক সমন্বয়কারী ম্যাককেঞ্জি রোয়ে।
প্রতিনিধি দলটি বুধবার সকাল ১০টা ৫০ মিনিটে উখিয়ার বালুখালী ৯ নম্বর রোহিঙ্গা ক্যাম্পে ইউএনএইচসিআর পরিচালিত রোহিঙ্গাদের রেজিস্ট্রেশন সেন্টার পরিদর্শন করেন। এরপর সেখানে পুষ্টি কেন্দ্র, ডব্লিউএফপি পরিচালিত খাদ্য বিতরণ কেন্দ্রের কার্যক্রমও পরিদর্শন করেন। তারপর ১১ নম্বর ক্যাম্পের কমিউনিটি সেন্টারে গিয়ে দশজন একটি রোহিঙ্গা দলের সঙ্গে ঘণ্টাব্যাপী বৈঠক করেন।
বৈঠক অংশ নেওয়া মো. ইসমাইল বলেন, প্রতিনিধি দলটি ক্যাম্পের শিক্ষাব্যবস্থা সম্পর্কে জানতে চেয়েছে। তাদের জানানো হয়, ক্যাম্পে শিক্ষার ব্যবস্থা কম। উচ্চশিক্ষার সুযোগ নেই। পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা না থাকার কথাও জানানো হয়েছে। মো. ইউসুফ নামে একজন
বলেন, প্রতিনিধিরা প্রত্যাবাসনের বিষয়ে আমাদের মতামত জানতে চেয়েছেন। ক্যাম্পের আশ্রিত জীবনকে বন্দিজীবন বলে জানিয়ে দ্রুত মিয়ানমারের ফেরত যাওয়ার কথা জানিয়েছি। এজন্য যুক্তরাষ্ট্রসহ আন্তর্জাতিক মহলকে মিয়ানমারের ওপর চাপ প্রয়োগের অনুরোধও জানানো হয়েছে।
মো. ইদ্রিস নামে এক রোহিঙ্গা বলেন, প্রতিনিধি দলকে আগের মতো খাদ্য সহায়তা দেওয়ার কথা জানিয়েছি।
ছৈয়দ নুর নামে এক রোহিঙ্গা জানান, তাদের সমাধানের আশ্বাস দিয়েছেন প্রতিনিধিরা।
আরাকান রোহিঙ্গা সোসাইটি ফর পিস অ্যান্ড হিউম্যান রাইটসের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ জোবায়ের জানান, নিজেদের নিহত মাস্টার মুহিবুল্লাহর সংগঠনের নেতা পরিচয় দেওয়ার পর প্রতিনিধি দলটি কথা বলে। তাদের দেওয়া চিঠিতে রোহিঙ্গাদের বিভিন্ন দাবি রয়েছে।
প্রতিনিধি দলটি কক্সবাজার শহরে ফিরে বিকালে কক্সবাজারে কর্মরত আন্তর্জাতিক সংস্থা, শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কার্যালয়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক শেষে গতকালই ঢাকায় ফেরার কথা রয়েছে।