বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক হয়েও কয়েকবার আত্মহত্যা করতে চেয়েছিলেন সাবিহা ইয়াসমিন নামে এক রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক।
আজ বুধবার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকের এক স্টাটাসে তিনি বারবার আত্মহত্যা করতে যাওয়ার কথা তুলে ধরেন।
তবে আত্মহত্যার হাত থেকে তাকে বারবার ফিরিয়ে এনেছেন একজন মানুষ। যিনি তার কাছে ছায়া সঙ্গী। আর সেই মানুষটাকেই বিয়ে করেছেন এই শিক্ষক। সেই মানুষটার ছবিও শেয়ার করেন তিনি। তবে তার আগেও রাজীব নামে একজনকে বিয়ে করেছিলেন ওই শিক্ষক।
বিশ্ববিদ্যালয়টির ফোকলোর বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক হিসেবে কর্মরত ওই শিক্ষক এক সময় স্বামী প্রথাতে বিশ্বাসী ছিলেন না। তবে সামাজিক স্বীকৃতির কারণে এই আনুষ্ঠানিকতা বলেও উল্লেখ করেন স্ট্যাটাসে।
বর্তমান স্বামীর সঙ্গে সাবিহা ইয়াসমিন। ছবি: ফেসবুক থেকে নেয়া
নিজের জীবনের সেই সব অভিজ্ঞতা তুলে ধরে সাবিহা ইয়াসমিন তার ফেসবুকে লিখেন, ‘জীবন যখন গত ২ বছর ধরে আমার বেঁচে থাকার আশা শেষ করে দিচ্ছিল, কাছের মানুষরা যখন তাদের মুখোশ খুলে আসল রূপ দেখাতে শুরু করে, জীবনে এক এক করে আপনজনরা যখন দূরে সরে যেতে থাকে, বেঁচে থাকা যখন আমার কাছে অর্থহীন হয়ে উঠে, তখন যতবার আমি সুইসাইড করতে গেছি ততোবার এই মানুষটা আমাকে মৃত্যুর মুখ থেকে ফিরিয়ে এনেছে।’
তিনি লিখেন, ‘কখনো ঘুমের ওষুধ খাওয়া আমাকে হাসপাতাল নিয়ে গিয়ে ওয়াশ করে নিয়ে এসেছে, কখনো বিষ খাওয়া আমাকে নিজে সুইসাইড করবে ভয় দেখিয়ে বমি করিয়ে ভালো করেছে। কখনো ট্রেন এ কাটা পড়তে যাওয়া আমাকে খুঁজে জোর করে রেল লাইন থেকে বাসায় এনেছে। এতো কথা বলার অর্থ একটাই যারা ভাবছেন তার সাথে তো আমাকে আগেই দেখেছেন, হয়তো আমাদের প্রেমের বিয়ে। তাদের ভুলটা একটু ভাঙতে চাই। যদি তার সাথে আমার প্রেম থাকতো তাহলে রাজীব চলে যাওয়াতে আমি খুশি হতাম, এতো যন্ত্রণা পেতাম না, সে আমার আমাদের সব বান্ধবীর ভালো একজন বন্ধু।’
বিয়ের পিঁড়িতে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সাবিহা ইয়াসমিন। ছবি: ফেসবুক থেকে নেয়া
ওই শিক্ষক আরও লিখেন, ‘আমার গত দুই বছরের যন্ত্রণা সে খুব কাছে থেকে দেখেছে আর সবসময় ছায়ার মতো আমার পাশে থেকেছে। স্বামী প্রথাতে আমি আর বিশ্বাসী নই, সামাজিক স্বীকৃতি লাগে তাই এইসব আনুষ্ঠানিকতা। সে আমার কাছে একটা ভরসার জায়গা, এক কথায় আমি যেন ফেরারি পাখি, সে আমার ছোট্ট বাসা।’