মাসুদ রানা সরকার, বগুড়া জেলা প্রতিনিধি ঃ শ্বাসরোধে হত্যার পর ১৪ লাখ টাকা ছিনতাই করে নাটোরের বড়াইগ্রাম উপজেলার আগ্রাণের পশ্চিমে ৮ নং ব্রিজে এলাকায় শহিদুল ইসলাম নামে এক গরু ব্যবসায়ীর মরদেহ ও আহত আরও ৩ ব্যবসায়ীকে হাত-পা বেঁধে ট্রাক থেকে ফেলে দেওয়ার ঘটনায় ৯ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।গত শনিবার দিবাগত রাতে পাবনার ঈশ্বরদী উপজেলার মধ্য গোপালপুর এলাকা থেকে তাদের গ্রেফতার করা হয়।
গত ২ জুলাই, রোববার দুপুর ১২টার দিকে পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে আয়োজিত প্রেস ব্রিফিংয়ে গ্রেফতারের বিষয়টি নিশ্চিত করেন নাটোরের পুলিশ সুপার সাইফুর রহমান।গ্রেফতারকৃতরা হলো- ডাকাত দলের সদস্য নাটোরের বড়াইগ্রাম উপজেলার মানিকপুর পশ্চিমপাড়া গ্রামের আবু হানিফের ছেলে আরিফ (২৫), ময়েজ উদ্দিনের ছেলে শাহ আলম (২৪), মৃত আব্দুল কুদ্দুসের ছেলে রুবেল (৩২), মানিকপুর টুনিপাড়া গ্রামের আব্দুল মান্নানের ছেলে মিঠুন (২৮), গোপালপুর মধ্যপাড়া গ্রামের লুৎফর রহমানের ছেলে সোহাগ (২৫) ও সুজন (৩৫), দায়িরপাড়া গ্রামের সেকেন্দারের ছেলে রেজাউল (৩৫), লালপুর উপজেলার কদিমচিলান গ্রামের মৃত মহরমের ছেলে ইনদাদুল (২৭) এবং গুরুদাসপুর উপজেলার চকদিঘরী গ্রামের আব্দুর রাজ্জাকের ছেলে রসুল (৩২)।পেস ব্রিফিংকালে পুলিশ সুপার সাইফুর রহমান আরও জানান, গত ২৭ জুন রাত ১১ টার দিকে বগুড়ার সারিয়াকান্দি উপজেলার বলাইল গ্রামের বাসিন্দা গরু ব্যবসায়ী আব্দুস সালাম, রেজাউল করিম, শহিদুল ইসলাম মিয়া ও ইউনুছ আলী ঢাকার বাড্ডার আফতাবনগরে গরু বিক্রির ১৪ লাখ টাকা নিয়ে একটি ট্রাকে করে বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা হন। পথে ট্রাকটি চান্দুরা এলাকায় পৌঁছালে ট্রাকে থাকা অজ্ঞাত কয়েক ব্যক্তি নিজেদেরকে ডাকাত পরিচয় দিয়ে গরু ব্যবসায়ীদের কাছে থাকা ১৪ লাখ ১২হাজার টাকা জোরপূর্বক লুন্ঠনের চেষ্টা করে। এতে গরু ব্যবসায়ীরা বাধা দিলে তাদেরকে মারপিট করা হয় এবং প্রাণে মেরে ফেলার হুমকি দেয় ডাকাত দলের সদস্যরা। এসময় শহিদুল ইসলাম তার কাছে থাকা টাকা দিতে না চাইলে ডাকাত দলের সদস্যরা তাকে গলায় গামছা পেঁচিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা এবং অন্যান্য গরু ব্যবসায়ীদের মারপিট করে হাত বেঁধে ট্রাকের পাটাতনে ফেলে রাখে। পরে সারারাত-সারাদিন ট্রাক নিয়ে ডাকাত সদস্যরা বিভিন্ন স্থানে ঘুরতে থাকে।এরই এক পর্যায়ে ২৮ জুন রাত ৯টার দিকে নাটোরের বনপাড়া-হাটিকুমরুল মহাসড়কের মান্নাননগর হতে চাটমোহর সড়কের হান্ডিয়াল এলাকায় প্রথমে হাত-পা বাঁধা অবস্থায় চলন্ত ট্রাক থেকে আব্দুস সালামকে ফেলে দেয়। এর আধাঘন্টা পর তারা নাটোরের বড়াইগ্রাম থানার আগ্রাণ ফিলিং স্টেশন এলাকার পশ্চিমে ৮ নং ব্রিজের কাছে রাস্তার ঢালে নিহত শহিদুল ইসলামের মরদেহ ও আহত গরু ব্যবসায়ী নূর আলম, রেজাউল বরিম ও ইউনুছ আলীকে হাত-পা বাঁধা অবস্থায় চলন্ত ট্রাক থেকে ফেলে দিয়ে পালিয়ে যায়। এই ঘটনায় আব্দুস সালামের ছেলে নুর আলমের বাদি হয়ে বড়াইগ্রাম থানায় একটি মামলা দায়ের করেন।পরে পুলিশ তথ্য প্রযুক্তি ও বিশেষ সোর্স কাজে লাগিয়ে ডাকাত দলের ৯ সদস্যকে গ্রেফতার করে। এছাড়া ডাকাতির কাজে ব্যবহৃত একটি ট্রাক ও ডাকাত সদস্যদের কাছ থেকে নগদ ৪ লাখ ৯৫ হাজার টাকা জব্দ করা হয়।