ঈদের ছুটিতেও খরা গেছে সিলেটের পর্যটনখাতে। ঈদের আগের দিন থেকে একটানা বৃষ্টির কারণে ঈদের দিনই প্লাবিত হয় সিলেটের অনেক নিম্নাঞ্চল। ঈদের পর টানা দুদিন ধরে চলছে ভারি বৃষ্টিপাত। আজ শনিবার শেষ ২৪ ঘণ্টায় প্রায় ১১০ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে সিলেটে।
টানা বৃষ্টিতে শহরে তৈরি সৃষ্টি হয় জলাবদ্ধতা। শনিবার সিলেট রেলওয়ে স্টেশনের প্রবেশ সড়কে হাঁটু সমান পানি জমে যায়। এতে সাধারণ যাত্রীদের সঙ্গে ব্যাপক ভোগান্তিতে পড়েন সিলেটে বেড়াতে আসা পর্যটকরা।
ঢাকা থেকে সিলেটে বেড়াতে আসা শাহীন আলম বলেন, অনলাইনে রেলের টিকেট করেছি। এখন স্টেশনের কাছে এসে দেখি হাঁটুপানি পার হয়ে তবে রেলস্টেশনে যেতে হবে।
ঢাকায় ঈদের ছুটি কাটিয়ে শনিবার সিলেট ফেরা মঈন আহমদও সিলেট স্টেশনে এসে বিরক্তি নিয়ে দাঁড়িয়েছিলেন। অটোরিকশা দ্বিগুণ ভাড়া দাবি করায় তিনি গাড়িও পাচ্ছিলেন না।
তিনি বলেন, রেলে চড়তে হয় পানি পেরিয়ে, রেল থেকে নেমে সাঁতার কেটে ডাঙায় উঠতে হয়, এটাই চিত্র সিলেট রেল স্টেশনের। এটি একটি প্রায় স্থায়ী সমস্যা। অল্প বৃষ্টিতেই পানিতে তলিয়ে যায় রেলস্টেশনে প্রবেশ সড়ক। অথচ এ ব্যাপারে কোনো উদ্যোগ নেই।
এদিকে টানা বৃষ্টিতে সুরমা, কুশিয়ারা, সারিসহ সিলেটের প্রায় সব প্রধান নদীতে বেড়েছে পানির উচ্চতা। শনিবার বিকেলে সুরমা নদীর পানি অন্তত দুটি পয়েন্টে বিপদসীমার কাছাকাছি প্রবাহিত হচ্ছিল।
প্রতিকূল আবাহাওয়ার কারণে এবার ঈদের ছুটিতে সিলেটে পর্যটকের ঢল দেখা যায়নি। যারা এসেছিলেন তারাও হতাশ হয়েছেন বৃষ্টি আর জলাবদ্ধতায়। অনেক পর্যটন স্পটও ছিল জলমগ্ন।
বৃষ্টির দাপটে এবার সিলেটের বিভিন্ন পর্যটনকেন্দ্রে পর্যটকদের তেমন উপস্থিতি দেখা যায়নি। সাদা পাথর, জাফলংয়ের মতো পর্যটনকেন্দ্রে বৃষ্টিতে ভিজেও অনেক পর্যটককে আনন্দ করতে দেখা যায়। তবে ঈদের ছুটিতে প্রত্যাশিত পর্যটক সংখ্যার কাছে তা ছিল সামান্যই।
ভোলাগঞ্জ এলাকার বাসিন্দা কবির আহমদ বলেন, ঈদের দিন সাধারণত পর্যটক উপস্থিতি কম থাকে। অনেকে আশা করেছিলেন ঈদের পরের দিন পর্যটক উপস্থিতি বাড়বে। কিন্তু সেভাবে কেউ আসেনি। হাতেগোনা কয়েকজন এসেছিলেন। দুপুরে বৃষ্টি উপেক্ষা করে ছাতা নিয়ে অনেকেই সেখানে হাজির হয়েছিলেন। তবে বিকেল গড়াতেই এলাকা জনশূন্য হয়ে পড়ে।
জলারবন রাতারগুলেও বৃষ্টির প্রভাবে পর্যটকদের উপস্থিতি কম ছিল বলে জানিয়েছেন স্থানীয় লোকজন।
আবহাওয়া অধিদপ্তর সিলেট কার্যালয়ের সহকারী আবহাওয়াবিদ শাহ মোহাম্মদ সজিব হোসেন জানান, আষাঢ়ের মাঝ সময়ে দেশের অধিকাংশ এলাকায় মাঝারি থেকে ভারি বর্ষণ হচ্ছে। আগামী দু-তিন দিনের মধ্যে ধীরে ধীরে বৃষ্টিপাতের প্রবণতা কমবে। তবে সপ্তাহের শেষ দিকে ফের ভারি বর্ষণের আভাস রয়েছে।