তরল কোকেন আমদানি

Slider জাতীয়

koken_8
চট্টগ্রাম: সানফ্লাওয়ার তেলের নামে তরল কোকেন আমদানির ঘটনা অনুসন্ধানে গঠিত কমিটির সদস্যদের সঙ্গে জরুরি বৈঠক করেছেন নগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার (অপরাধ ও অভিযান) দেবদাস ভট্টাচার্য এবং উপ-কমিশনার (ডিবি) কুসুম দেওয়ান।

বৈঠকে রিমান্ডে থাকা চারজনকে জিজ্ঞাসাবাদের কৌশল নির্ধারণ করা হয়েছে।

শনিবার (৪ জুলাই) সকাল ১১টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত সিএমপিতে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।

বৈঠকে নগর গোয়েন্দা পুলিশের অতিরিক্ত উপ কমিশনার ও অনুসন্ধানকারী টিমের প্রধান এস এম তানভির আরাফাত কোকেনের চালান আমদানি, কনটেইনার সিলগালা ও আসামিদের গ্রেপ্তার নিয়ে সামগ্রিক বিষয় বর্ণনা করেন।

এরপর গ্রেপ্তার চারজনকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে এ পর্যন্ত প্রাপ্ত তথ্য বৈঠকে পর্যালোচনা করা হয়। এরপর পূর্ণাঙ্গ তথ্য আদায়ে কী কৌশলে তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে সেটা নিয়ে আলোচনা করেন পুলিশ কর্মকর্তারা।

এস এম তানভির আরাফাত বাংলানিউজকে বলেন, ‘জিজ্ঞাসাবাদের কৌশল নির্ধারণ করেছি। কি প্রক্রিয়ায় কোকেনের চালান বন্দরে শনাক্ত হল সেটার বর্ণনা দিয়েছি।’

শুক্রবার (৩ জুলাই) রাতে সিএমপি কমিশনার মোহা.আব্দুল জলিল মন্ডল ১০ সদস্যের অনুসন্ধান কমিটি গঠন করেন। নগর গোয়েন্দা পুলিশের উপ কমিশনার কুসুম দেওয়ান কমিটির কার্যক্রম তদারকির দায়িত্ব দেয়া হয়েছে।

কমিটির প্রধান করা হয়েছে নগর গোয়েন্দা পুলিশের অতিরিক্ত উপ কমিশনার এস এম তানভির আরাফাতকে।

কমিটিতে অন্যান্যের মধ্যে আছেন পাঁচজন সহকারি কমিশনার মো.কামরুজ্জামান, ফয়জুল ইসলাম, মো.মঈনউদ্দিন, নির্মলেন্দু বিকাশ চক্রবর্তী ও এস এম নূরুল হুদা এবং বন্দর থানার ওসি একেএম মহিউদ্দিন সেলিম, আকবর শাহ থানার ওসি সদীপ কুমার দাশ, নগর গোয়েন্দা পুলিশের পরিদর্শক আব্দুর রউফ ও জাহেদুল ইসলাম।

সানফ্লাওয়ার তেলের নামে তরল কোকেন আমদানির মামলায় এ পর্যন্ত চারজনকে গ্রেপ্তার করেছে নগর গোয়েন্দা পুলিশ। এরা হলেন, গার্মেন্ট পণ্য রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠান মণ্ডল গ্রুপের বাণিজ্যিক নির্বাহী আতিকুর রহমান, কসকো বাংলাদেশ শিপিং লাইনস লিমিটেডের ব্যবস্থাপক (করপোরেট, বিক্রয় ও বিপণন) এ কে আজাদ, একটি ডেভেলপার কোম্পানির কর্মকর্তা মোস্তফা কামাল এবং সানফ্লাওয়ার তেলের আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান খানজাহান আলী লিমিটেডের কর্মকর্তা গোলাম মোস্তফা সোহেল।

এদের মধ্যে আতিকুর রহমান, একে আজাদ ও মোস্তফা কামালকে ১০ দিনের রিমান্ডে এবং সোহেলকে পাঁচদিনের রিমান্ডে পেয়েছে পুলিশ।

গত বৃহস্পতিবার (২ জুলাই) আতিকুর, আজাদ ও মোস্তফা কামালের ১০ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর হয়। তাদের ওইদিনই জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নিজেদের হেফাজতে নিয়েছে ডিবি।

আর সোহেলকে ৩০ জুন রিমান্ডে নেবার আদেশ দেন আদালত। তাকে রোববার (৫ জুলাই) ডিবি নিজেদের হেফাজতে নেবে বলে সূত্র জানিয়েছে।

হেফাজতে নেয়া তিনজনকে নগর গোয়েন্দা পুলিশের ‍চার সদস্যের একটি টিম গত বৃহস্পতি ও শুক্রবার জিজ্ঞাসাবাদ করেছে বলে সূত্র জানিয়েছে।

নগর পুলিশের কাছ থেকে তথ্য পেয়ে তরল কোকেন সন্দেহে গত ৬ জুন রাতে চট্টগ্রাম বন্দরে একটি কনটেইনার বন্দরে সিলগালা করে শুল্ক গোয়েন্দা কর্মকর্তারা। ৮ জুন এটি খুলে ১০৭টি ড্রামের প্রতিটিতে ১৮৫ কেজি করে সানফ্লাওয়ার তেল পাওয়া যায়। তেলের নমুনা প্রাথমিক পরীক্ষা করে কোকেনের অস্তিত্ব পাওয়া না গেলে উন্নত ল্যাবে কেমিক্যাল পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়।

২৭ জুন শুল্ক গোয়েন্দা অধিদপ্তর জানায়, কেমিক্যাল পরীক্ষায় একটি ড্রামে তরল কোকেনের অস্তিত্ব পাওয়া গেছে।

চালানটি নগরীর খাতুনগঞ্জের খান জাহান আলী লিমিটেডের নামে বন্দরে আনা হয়। কনটেইনারটি সিলগালা করার আগে নগর গোয়েন্দা পুলিশ অভিযান চালিয়ে খানজাহান আলী লিমিটেডের মালিকানাধীন প্রাইম হ্যাচারির ব্যবস্থাপক গোলাম মোস্তফা সোহেলকে গ্রেপ্তার করেছিল।

২৮ জুন নগরীর বন্দর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) ওসমান গনি বাদি হয়ে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনের ১৯ এর ১(খ) ধারায় জাহান আলী লিমিটেডের চেয়ারম্যান নূর মোহাম্মদ ও সোহেলকে আসামি করে একটি মামলা দায়ের করেন। পরে ওই মামলায় সোহেলকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *