জামালপুরের সাংবাদিক গোলাম রব্বানী নাদিম হত্যা মামলার প্রধান আসামি, ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) বরখাস্ত চেয়ারম্যান মাহমুদুল আলম বাবু দায় স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন। পাঁচ দিনের রিমান্ড শেষে আজ শুক্রবার দুপর দেড়টার দিকে কড়া নিরাপত্তায় তাকে আদালতে নিয়ে আসে পুলিশ। বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে জামালপুর জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. হাসিব উল্লাহ পিয়াসের আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন বাবু। পরে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়।
জামালপুর জেলা গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি আরমান আলী বলেন, রিমান্ডে বাবু ১৬১ ধারায় জবানবন্দিতে হত্যায় জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছেন। আদালতে বিচারকের সামনে ফৌজদারি কার্যবিধি ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছেন তিনি। গত ১৭ জুন তাকে পাঁচ দিনের রিমান্ডে নেওয়া হয়।
এর আগে গত ১৪ জুন রাতে পেশাগত দায়িত্ব পালন শেষে বাড়ি ফেরার পথে বাংলানিউজের জামালপুর জেলা প্রতিনিধি ও একাত্তর টেলিভিশনের বকশীগঞ্জ উপজেলা প্রতিনিধি গোলাম রব্বানী নাদিমের ওপর হামলা করে সন্ত্রাসীরা। বকশীগঞ্জের সাধুরপাড়া ইউপির চেয়ারম্যান মাহমুদুল আলম বাবুর নেতৃতে সন্ত্রাসীরা বকশীগঞ্জ সরকারি কলেজ মোড় এলাকায় মোটরসাইলের গতিরোধ করে তাকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেয়।
পরে ১০-১২ জন এলোপাতাড়ি কুপিয়ে ও পিটিয়ে রক্তাক্ত করে ফেলে রেখে যায়। তাকে প্রথমে বকশীগঞ্জ হাসপাতালে নেওয়া হলে সেখান থেকে জামালপুর জেনারেল হাসপাতালে স্থানান্তর করেন চিকিৎসক। সেখানে অবস্থার অবনতি হলে পরের দিন বৃহস্পতিবার সকালে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। ওই দিন দুপুরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।
এ ঘটনায় নাদিমের স্ত্রী মনিরা বেগম বাদী হয়ে মাহমুদুল আলম বাবুকে প্রধান আসামি করে ২২ জনের নাম উল্লেখ এবং অজ্ঞাত আরও ২০-২৫ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেন। প্রধান আসামিসহ ১৩ জনকে গ্রেপ্তার করে আদালতের মাধ্যমে বিভিন্ন মেয়াদে রিমান্ডে আনা হয়েছিল বকশীগঞ্জ থানায়।
তাদের মধ্যে প্রধান আসামি মাহমুদুল আলম বাবুকে পাঁচ দিন, ছয় আসামিকে চার দিন করে এবং অপর ছয় আসামির তিন দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত। বাবু ছাড়াও রিমান্ডে নেওয়া আসামিরা হলেন রেজাউল করিম, মনিরুজ্জামান মনির, জাকিরুল, গোলাম কিবরিয়া সুমন, মিলন, তোফাজ্জল, আইনাল, কফিল উদ্দিন, ফজলু মিয়া, শহীহ, মকবুল ও ওহিদুজ্জামান।
জিজ্ঞাসাবাদ শেষে সবাইকে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে। এদের মধ্যে বাবু, মনিরুল ও রেজাউল আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।