চাঁপাইনবাবগঞ্জের ভোলাহাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোসা. উম্মে তাবাসসুমকে ঈদের পর গামছা পরিয়ে বিদায় করার হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছে।
গতকাল সোমবার বিকেলে উপজেলার মেডিকেল মোড়ে আওয়ামী-যুবলীগের ডাকা শান্তি সমাবেশে এ হুঁশিয়ারি দেন ভোলাহাট উপজেলা চেয়ারম্যান রাব্বুল হোসেন। তার বক্তব্যের ২ মিনিট ৪৩ সেকেন্ডের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে।
উপজেলা চেয়ারম্যান রাব্বুল হোসেন বলেন, ‘আমাকে বরখাস্ত করার উৎপাত চলছে। আমার গাড়ির ড্রাইভারের ওভারটাইম বেতন দেওয়া হচ্ছে না। শুধু জামায়াত-বিএনপি নয়, প্রশাসনে বসে বর্তমান ইউএনও ষড়যন্ত্রের সঙ্গে যুক্ত।’
ইউএনওকে হুঁশিয়ারি দিয়ে চেয়ারম্যান বলেন, ‘আগামী ঈদের পর উম্মে তাবাসসুমকে গামছা পরিয়ে এখান থেকে বিদায় করা হবে। এখানে দাঁত ভাঙা জবাব কেউ দেখেনি, সবাই চুপচাপ আছে। ইনশাআল্লাহ ঈদের পরে সেই রূপ দেখতে পাবে। আওয়ামী লীগের চেয়ারম্যানকে সরানোর পায়তারা করছ। ঈদের পর তোমার চৌদ্দগোষ্ঠির দাঁত ভাঙা জবার দেওয়া হবে।’
আওয়ামী লীগ নেতাদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, ‘আপনারা এই ইউএনওকে কন্ট্রোল করুন, নাইতো বিদায় করুন। ঈদের পর জামায়াত-বিএনপির আন্দোলন তীব্র হলে এই ইউএনওর কারণে আমাদের আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগের অর্ধেক নেতাকর্মীকে কারাগারে থাকতে হবে।’
সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ইয়াসিন শাহ, উপজেলা যুবলীগের সিনিয়র সহসভাপতি ও উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান গরিবুল্লাহ দবিরসহ ছাত্রলীগ, যুবলীগসহ সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীরা। এতে সভাপতিত্ব করেন উপজেলা যুবলীগের সভাপতি রেজাউল করিম।
এ বিষয়ে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে ভোলাহাট উপজেলা চেয়ারম্যান রাব্বুল হোসেন বলেন, ‘ইউএনও দীর্ঘদিন ধরে নানা অনিয়ম-দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত। শুধু তাই নয়, উপজেলা পরিষদের বিভিন্ন অনুষ্ঠান, সভা-সেমিনারে ইউএনওর পাশে চেয়ারম্যানের নির্দিষ্ট চেয়ারে বসতে না দেওয়া, উন্নয়নমূলক প্রকল্পের টাকা ছাড়াকরণের জন্য সাক্ষর করতে গেলে ঘুষ চাওয়া, টাকা না দিলে সাক্ষর না করাসহ নানা অভিযোগ রয়েছে। সাক্ষর না করায় একাধিক উন্নয়নমূলক প্রকল্পের টাকা এরই মধ্যে ফেরত গেছে।’
এদিকে প্রতিবাদ সভার সভাপতি এবং উপজেলা যুবলীগের সভাপতি রেজাউল করিম মুঠোফোনে বলেন, ‘প্রকাশ্যে হুমকি দেওয়া ঠিক হয়নি। এ নিয়ে আমরা বিব্রত।’
অপরদিকে ভোলাহাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) উম্মে তাবাসসুমের বক্তব্য জানতে একাধিকবার কল দেওয়া হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ-২ আসনের সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগরে ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মুহা. জিয়াউর রহমান জানান,‘ইউএনওকে হুমকি দেওয়া দল সমর্থন করেনা। আমরা এমন ঘটনায় বিব্রত। দ্রুত দলীয় ফোরামে আলোচনা করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
চাঁপাইনবাবগঞ্জ অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক আহমেদ মাহবুব-উল-ইসলাম বলেন, ‘চেয়ারম্যানের বক্তব্যের ভিডিওটি আমাদের নজরে এসেছে। বিষয়টি নিয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’