গণতন্ত্রের প্রশ্নে ভারতের অবস্থান জানতে চায় জনগণ: গয়েশ্বর

Slider রাজনীতি


গণতন্ত্রের প্রশ্নে ভারতের অবস্থান বাংলাদেশের জনগণ জানতে চায় বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়। আজ সোমবার নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে নারী ও শিশু অধিকার ফোরামের উদ্যোগে অনুষ্ঠিত মানবন্ধনে তিনি এ মন্তব্য করেন।

গত ১৪ মে তারুণ্যের সমাবেশ থেকে ফেরার পথে চট্টগ্রামে ‘ছাত্রদল নেত্রী নাদিয়া নুসরাতকে নির্যাতন ও মিথ্যা মামলায় গ্রেপ্তারের প্রতিবাদে’ এ মানবন্ধন আয়োজন করা হয়।

গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, ‘একটা রাষ্ট্রের সাথে আরেকটা রাষ্ট্রের বন্ধুত্ব থাকবে। কিন্তু এই সরকার তো বন্ধুত্বে বিশ্বাস করে না। তার পররাষ্ট্রমন্ত্রী তো বলে দিয়েছে, প্রতিবেশীর সাথে তাদের বন্ধুত্ব স্বামী-স্ত্রীর মতো। স্বামী-স্ত্রী ও বন্ধুত্বের সম্পর্ক কিন্তু এক নয়। সুতরাং আমরাও তো ভারতের সাথে, প্রতিবেশি রাষ্ট্রের সাথে বন্ধুত্ব চাই। বন্ধুত্ব আমাদের দরকার, ঝগড়া ঝাটি আমাদের চলে না। আমাদের যদি প্রভুত্ব বা স্বামী-স্ত্রীর মর্যাদা দেয়, সেই বন্ধুত্ব তো কাম্য নয়।’

তিনি বলেন, ‘সে কারণে আমি বলব ভারত একটি গণতান্ত্রিক দেশ, ভারতের গোয়েন্দা সংস্থাসহ এখানে যারা আছেন, তারা দিল্লীতে খবর পাঠান, জনগণের চোখের ভাষা, মনের ভাষা বুঝতে শিখুন।’

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য বলেন, ‘ভারত একটি গণতান্ত্রিক দেশ, তার পাশে বাংলাদেশ গণতন্ত্র বিহীন। যার জন্য এদেশের জনগণ ভারতেকে দায়ি করে। আপনাদের ভারত সরকার, ভারতের রাজনীতিবিদদের বলেন, বন্ধুত্ব কী শুধুমাত্র শেখ হাসিনার সাথে করবেন, বন্ধুত্ব কী শুধুমাত্র আওয়ামী লীগের সাথে করবেন; নাকি বাংলাদেশের ১৮ কোটি জনগণের সাথে করবেন? ১৮ কোটি মানুষের সাথে যদি ভারতের বন্ধুত্ব হয়, সেটা হলো প্রকৃত বন্ধুত্ব, সেটা মর্যাদাপূর্ণ ও টেকসই হবে। নতুবা এক জনের সাথে বন্ধুত্ব করলে কোনো লাভ হবে না।’

তিনি বলেন, ‘সুতরাং আপনাদের রাজনৈতিক সংস্কৃতি ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্কে, এই সংস্কৃতি পরিবর্তন করতে হবে। সঠিক তথ্য আপনাদের জানাতে হবে, সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে হবে। আপনারা আমাদের নির্বাচনে পাশ করিয়ে দেবেন তা নয়; গণতন্ত্রের প্রশ্নে সুস্পষ্ট অবস্থান নেবেন কিনা- তা বাংলাদেশের মানুষ জানতে চায়।’

মানবন্ধন থেকে গণতন্ত্র ও ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠার স্বার্থে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকারকে পদত্যাগ করার আহ্বান জানান গয়েশ্বর চন্দ্র রায়।

প্রধানমন্ত্রীকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, ‘আপনি জাতির উদ্দেশ্যে ভাষন দেন, দিয়ে বলেন- জনগণের ১০ দফা মেনে নেবেন, সংসদ বিলুপ্ত করবেন, নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের বিল পাশ করবেন এবং নিরপেক্ষ সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করবেন। এই প্রতিশ্রুতি দিলে কাল থেকে আপনাকে কিছু বলব না, শুধুমাত্র অপেক্ষা করব কখন বঙ্গভবনে গিয়ে আপনার পদত্যাগপত্র জমা দেন।’

গয়েশ্বর বলেন, ‘নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন হলে বাংলাদেশের মানুষ সিদ্ধান্ত নেবে কে সরকার গঠন করবে।’

তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের সাহেব বলেছেন, বিএনপি নির্বাচনে যাবে। হ্যাঁ বিএনপি নির্বাচনে যাবে; তবে কোনো ভোট ডাকাত এবং ভোট চোরদের ক্ষমতায় রেখে নয়।’

তিনি আরও বলেন, ‘নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন হলে জনগণের ভোটে ক্ষমতায় গেলে এই সরকারের আমলে গুম, খুন, নির্যাতনসহ সকল অপকর্মের সঙ্গে যারা জড়িত তাদের বিচার করা হবে।’

সংগঠনের আহ্বায়ক ও বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সেলিমা রহমানের সভাপতিত্বে ও দলের স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক সরফত আলী সপুর পরিচালনায় আরও বক্তব্য রাখেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, বিএনপি নেতা আবদুস সালাম, মীর নেওয়াজ আলী নেওয়াজ, আবদুস সালাম আজাদ, শিরীন সুলতানা প্রমুখ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *