রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসা শেষে বাসায় ফিরেছেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। আজ শনিবার সন্ধ্যায় গুলশানের বাসভবন ফিরোজায় ফেরেন তিনি।
সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার পর বাসভবনের সামনে আসে খালেদা জিয়াকে বহন করা একটি সাদা রঙের গাড়ি। তাদের পেছনে ছিল আরেকটি গাড়ি। এ সময় মুষলধারে বৃষ্টি হচ্ছিল। সেই বৃষ্টিতে ভিজে নেতাকর্মীরা দলীয় চেয়ারপাসনের গাড়ি ঘিরে ধরেন। তার ‘পথ আটকে’ বিভিন্ন স্লোগান দিতে থাকেন। স্লোগানে তারা বলছিলেন, ‘এই মুহূর্তে দরকার, খালেদা জিয়া সরকার’।
দীর্ঘ সময় ধরে গাড়ি ‘আটকে’ স্লোগান দেওয়ায় অসুস্থ খালেদা জিয়া বাসায় ঢুকতে পারছিলেন না। তিনি গাড়ির পেছনের সিটে বসা ছিলেন। এ সময় সামনের সিটে বসা একজন পথ ছেড়ে দিতে সামনে থাকা নেতাকর্মীদের ইশারা দেন। কিন্তু তারা পথ ছাড়ছিলেন না। এভাবেই কিছু দূর এগিয়ে যায় গাড়ি। পাশে বৃষ্টির মধ্যেই ছাতা নিয়ে ছবি তুলছিলেন ও ভিডিও করছিলেন গণমাধ্যমকর্মীরা।
চারপাশ ঘিরে ধরে স্লোগান দিতে দিতেই খালেদা জিয়ার গাড়ি বাসভবনের সামনে চলে আসে। এ সময় বাসার গেট থেকে এগিয়ে আসেন বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য আমান উল্লাহ আমান। তিনি গাড়ির সামনে থেকে সবাইকে সরে যেতে বলেন। কিন্তু তার নির্দেশের পরও খালেদা জিয়ার গাড়ির সামনে থেকে কেউ সরে যাচ্ছিল না। আরও কিছুক্ষণ পর খালেদা জিয়াকে নিয়ে গাড়ি বাসায় প্রবেশ করে।
বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে গত ১২ জুন দিবাগত রাতে বাসা থেকে হাসপাতালে নেওয়া হয়
খালেদা জিয়া বাসায় ফেরার পর রাত ৮টার দিকে সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন তার মেডিকেল বোর্ডের সদস্য অধ্যাপক ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন। তিনি বলেন, আজ সকালেও খালেদা জিয়ার কিছু শারীরিক পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হয়েছে। এখন কিছুটা সুস্থবোধ করায় তাকে আগের মতো বাসায় রেখে চিকিৎসা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে মেডিকেল বোর্ড।
এর আগে সন্ধ্যা ৬টা ৩৫ মিনিটে এভারকেয়ার হাসপাতাল থেকে বাসার উদ্দেশে রওনা হন খালেদা জিয়া। দলের চেয়ারপারসনের প্রেস উইংয়ের সদস্য শামসুদ্দিন দিদার বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
জানা যায়, আজ বিকেলের পর থেকেই খালেদা জিয়ার বাসভবনের সামনের সড়কে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়। পুলিশের অন্তত ২০ থেকে ২২ জন সদস্যকে সেখানে দেখা যায়।
পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, খালেদা জিয়ার বাসায় ফেরার খবরে পুলিশের সদস্যরা সেখানে অবস্থান নেন। বিএনপির নেতাকর্মীদের উপস্থিতিতে সেখানে যেন কোনো ধরনের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি না হয়, এ জন্য তারা সতর্ক রয়েছেন।
প্রসঙ্গত, ৭৮ বছর বয়সী খালেদা জিয়া দীর্ঘদিন ধরে আর্থাইটিস, ডায়াবেটিস, কিডনি, লিভারসহ নানা রোগে ভুগছেন। গত সোমবার রাতে হঠাৎ শারীরিক সমস্যা দেখা দিলে মেডিকেল বোর্ডের সদস্যদের সিদ্ধান্তে তাকে এভারকেয়ার হাসপাতালে নেওয়া হয়।