ঢাকা: কাউন্টারের বাইরের লোকেদের কাছ থেকে বাড়তি টাকায় টিকিট সংগ্রহ করছেন অনেকে। অথচ দীর্ঘ সময় লাইনে দাঁড়িয়ে থেকেও টিকিট পাচ্ছেন না বলে অভিযোগ করেছেন যাত্রীরা।
শুক্রবার (জুলাই ০৩) রাজধানীর গাবতলী বাস টার্মিনালের বেশকিছু টিকিট কাউন্টারে ঘুরে ও যাত্রীদের সঙ্গে কথা বলে এ অভিযোগ পাওয়া যায়।
টিকিটের জন্য দীর্ঘ সময় ধরে কাউন্টারে দাঁড়িয়ে থাকা শরিফুল ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, অভিযোগ করলেও কোনো লাভ হচ্ছে না। আমরা লাইনে থেকেও টিকিট পাচ্ছি না। টিকিট শেষ বলে কাউন্টার থেকে জানানো হচ্ছে। অথচ কাউন্টারের বাইরে টিকিট বিক্রি করা হচ্ছে।
তিনি বলেন, ভোড় ৫টা থেকে টিকিটের জন্য লাইনে দাঁড়িয়ে আছি। একটা মানুষ কতক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকতে পারে! ঈদে বাড়ি যেতে হবে তাই যেভাবেই হোক টিকিট প্রয়োজন।
সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, হানিফ, শ্যামলী, টিআর, এসআর, কেয়া, নাবিল পরিবহনসহ বেশ কয়েকটি পরিবহনের টিকিট কাউন্টারে লাইনে দাঁড়িয়ে রয়েছেন বিপুলসংখ্যক যাত্রী।
কয়েকটি কাউন্টারে মহিলাদের জন্য আলাদা লাইনের ব্যবস্থা থাকলেও তা নেই অধিকাংশ কাউন্টারে।
এসআর পরিবহনের সহকারী ব্যবস্থাপক মো. তারিকুল ইসলাম বাংলানিউজকে বলেন, এবার যাত্রীদের কাছে টিকিটের দাম বেশি রাখা হচ্ছে না। তবে ঈদ উপলক্ষে টিকিটের ডিসকাউন্ট বন্ধ রাখা হয়েছে।
এদিকে আল-হামরা পরিবহনের কাউন্টারে লাইনে দাঁড়িয়ে থাকা বেশ কয়েকজন অভিযোগ করে বলেন, লাইন ছাড়াই অনেকেই কাউন্টারের ভিতরে ঢুকে টিকিট নিয়ে যাচ্ছেন।
পরিবারের সঙ্গে ঈদ উদযাপনের প্রত্যাশায় হানিফ এন্টারপ্রাইজের কাউন্টারে টিকিট কিনতে এসেছেন চামেলী আক্তার। তিনি বলেন, মহিলাদের জন্য আলাদা কোনো লাইনের ব্যবস্থা নেই এই কাউন্টারে। টিকিট ক্রয়ের জন্য পুরুষদের সঙ্গে গাদাগাদি করেই লাইনে দাঁড়াতে হচ্ছে।
হানিফ এন্টারপ্রাইজের জি এম মো মোশাররফ হুসাইন বলেন, আমাদের এই কাউন্টারে নিয়ম-শৃঙ্খলা মেনেই যাত্রীদের কাছে টিকিট বিক্রি চলছে। তবে লাইনের বাইরে টিকিট বিক্রির কোনো অভিযোগ এখনও পাইনি।
তিনি বলেন, ঈদে ঘরমুখো যাত্রীদের সুবিধার্থে আমাদের কোম্পানির পক্ষ থেকে প্রায় ৬শ’ থেকে ৭শ’ গাড়ি চলবে। এতে সিট সংখ্যা প্রায় ৩২ হাজার। রাস্তায় যানজট কম থাকলে যাত্রীদের সুবিধার্থে আরও ৫০ থেকে ১শ‘ গাড়ি ছাড়া যাবে।
সড়কে যানজটর প্রসঙ্গে তিনি বলেন, চান্দুরা মোড়, মির্জাপুর রেলগেট থেকে এলেঙ্গা পর্যন্ত প্রচণ্ড যানজটে পড়তে হচ্ছে। যমুনা সেতুর পরে নকলা ব্রিজের এপারে-ওপারে ৬ কিলোমিটার রাস্তায় চালকদের অনেক কষ্ট হয়। এই রাস্তা খানাখন্দে ভরা।
এদিকে শ্যামলী পরিবহনের কাউন্টারে ঈদের অগ্রিম টিকিটের দাম বেশি রাখছে বলেও অভিযোগ করেন বেশ কয়েজন যাত্রী। লাইনে দাঁড়ানো যাত্রীদের কাউন্টারের ভিতর থেকে বলা হচ্ছে ‘টিকিট নাই’।
যাত্রীদের অভিযোগ, এই কাউন্টারে অতিরিক্ত দামে টিকিট বিক্রি করা হচ্ছে। গাইবান্ধার টিকিট আগে ছিলো ৪৫০ টাকা কিন্তু ওই টিকিট ৭৫০ টাকা করে বিক্রি করা হচ্ছে।
অতিরিক্ত দামে টিকিট ক্রয় করেছেন যাত্রী সানোয়ার। তিনি বলেন, গাইবান্ধার সাধারণ ভাড়া ৪০০ থেকে সাড়ে ৪৫০ টাকা। কিন্তু ঈদ উপলক্ষে ৫২০ টাকা পর্যন্ত সবাই নিচ্ছে। কিন্তু কাউন্টার থেকে ৫২০ টাকার টিকিট ৭৫০ টাকায় বাধ্য হয়েই কিনতে হয়েছে।