বিদ্যুৎ পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে। অনেক দিন পর দেশের সর্বোচ্চ বিদ্যুৎ ঘাটতির পরিমাণ চার অঙ্কের ঘর থেকে তিন অঙ্কে নেমে এসেছে। দিন ও রাতের বেশিরভাগ সময় লোডশেডিংয়ের পরিমাণ ঘণ্টাপ্রতি ৪০০ মেগাওয়াটের নিচে নেমে এসেছে।
রবিবার (১১ জুন) সকাল ৬টা থেকে বিদ্যুৎ পরিস্থিতি অনেকটাই স্বাভাবিক হয়ে আসে। কয়লাচালিত বিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে বেশি বিদ্যুৎ উৎপাদন হওয়ায় পরিস্থিতি স্বস্তিদায়ক হয়ে আসছে।
সকাল ৬টায় দেশের বিদ্যুৎ চাহিদা ছিল ১১ হাজার ২৫০ মেগাওয়াট। এসময় উৎপাদন হয়েছে ১০ হাজার ৮৭৫ মেগাওয়াট। ঘাটতি ছিল মাত্র ৩৫৮ মেগাওয়াট। সকাল ৭টায় দেশের বিদ্যুৎ চাহিদা ১১ হাজার ৩২০ মেগাওয়াটের স্থলে উৎপাদন ছিল ১০ হাজার ৯১৯ মেগাওয়াট। ওই সময় ঘাটতি ছিল ৩৯০ মেগাওয়াট।
সকাল ৮টায় ৩০১ মেগাওয়াট, ৯টায় ৩৩৬ মেগাওয়াট, ১০টায় ২৯৪ মেগাওয়াট, ১০টায় ২৩১ মেগাওয়াট, ১১টায় ১৬২ মেগাওয়াট, ১২টায় ১৭৩ মেগাওয়াট, দুপুর ১টায় ১৮৯ মেগাওয়াট, ২টায় ২৫০ মেগাওয়াট লোডশেডিং হয়েছে।
বিদ্যুৎ বিভাগ সূত্র জানায়, আদানির ভারতীয় বিদ্যুৎ কেন্দ্রের দুটি ইউনিট চালু হওয়ায় কয়লা চালিত বিদ্যুতের সরবরাহ বেড়েছে। অন্যদিকে বৃষ্টির কারণে বিদ্যুতের চাহিদা কমে এসেছে। দুইয়ে মিলে বিদ্যুৎ পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে।
এখন কয়লা থেকে দুই হাজার মেগাওয়াটের বেশি বিদ্যুৎ পাওয়া যাচ্ছে। পায়রা বিদ্যুৎকেন্দ্রের জন্য আগামী ২৫ জুনের মধ্যে কয়লা আসবে। এতে করে উৎপাদন আরও বাড়বে। উৎপাদন বাড়লে আগামী ২৫ জুনের পর পরিস্থিতির আরও উন্নতি হবে।
পায়রা তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্রপায়রা তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্র
পায়রা বিদ্যুৎকেন্দ্র সূত্র জানিয়েছে তাদের কেন্দ্রের জন্য ৬৬ দিনের কয়লার ব্যবস্থা হয়েছে। আগামী দুই মাস ধরে ৮ লাখ টন কয়লা আসবে। বিদ্যুৎকেন্দ্র পরিচালনাকারী কোম্পানি সিএমসি (চায়না মেশিনারি কোম্পানি) ইতোমধ্যে কয়লা আমদানির জন্য ঋণপত্র খুলেছে। ইন্দোনেশিয়ার পার্টে প্রথম জাহাজটি কয়লা লোড করেছে।
পায়রার পাশাপাশি রামপাল বিদ্যুৎ কেন্দ্রের জন্যও দেশে কয়লা আসছে। এই কেন্দ্রটিও নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ করতে পারবে।
এছাড়া আগামী ৩০ জুনের মধ্যে এসএস পাওয়ারের দুটি উইনিট এক সঙ্গে চালু হওয়ার কথা রয়েছে। এই কেন্দ্রটিও ১৩২০ মেগাওয়াটের। ফলে এখান থেকেও বিদ্যুৎ পাওয়া যাবে।
সব মিলিয়ে পায়রা, এসএস পাওয়ার এবং রামপাল থেকে অন্তত ২ হাজার ৮৮৮ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ পাওয়া যাবে।
এ বিষয়ে পাওয়ার সেলের মহাপরিচালক মোহাম্মদ হোসেইন বলেন, বিদ্যুতের যে সংকট ছিল তা ছিল সাময়িক। আগেই জানানো হয়েছিল পরিস্থিতির দ্রুত উন্নতি হবে। সেই ধারাবাহিকতায় পরিস্থিতি ঠিক হচ্ছে। ১০ থেকে ১২ দিনের মধ্যে পরিস্থিতির আরও উন্নতি ঘটবে। ওই সময় বিদ্যুৎ হয়তো আর যাবেই না।