প্রাপ্তির খাতা শূন্য নয় তৃষ্ণা এখনো আছে

Slider বিনোদন ও মিডিয়া

ছোটপর্দার পরিচিত মুখ শবনম ফারিয়া। সুনাম কুড়িয়েছেন বিজ্ঞাপন আর সিনেমায় কাজ করেও। গত ৮ জুন মুক্তি পেয়েছে তার অভিনীত ওয়েব সিনেমা ‘আন্তঃনগর’। মুক্তিপ্রাপ্ত সিনেমা ও অন্যান্য বিষয়ে কথা হয় তার সঙ্গে। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন- জাহিদ ভূঁইয়া

‘আন্তঃনগর’-এর গল্প কী নিয়ে?

এই নগরে আমরা বিচ্ছিন্নভাবে জীবনযাপন করি। এর মধ্যেও হরহামেশাই একজনের জীবনের গল্প আরেকজনের মধ্যে ঢুকে যায়। ওয়েব সিনেমাটিতে তিনটি আলাদা জীবনের গল্প বলা হয়েছে। গল্পগুলো সমান্তরালভাবে চলতে থাকে, এক গল্প অন্য গল্পের ভেতর ঢুকে যায়। এটাকে প্যারালাল ন্যারেটিভ স্টোরি বলা হয়।

আপনার চরিত্র প্রসঙ্গে একটু ধারণা দেবেন?

মৌসুমী নামের এক পার্লারকর্মীর চরিত্রে অভিনয় করেছি। দৃশ্যধারণের তিন মাস আগে নির্মাতা গৌতম কৌরি গল্প ও চরিত্র সম্পর্কে জানিয়েছিলেন। সবকিছু পছন্দ হওয়ায় কাজটিতে অভিনয়ের আগ্রহ জন্মায়। অল্প সময়ের মধ্যে যতটুকু পেরেছি, প্রস্তুতি নেওয়ার চেষ্টা করেছি। আমাদেরই সহকর্মী অভিনেত্রী ও মডেল জান্নাতুল ফেরদৌস পিয়ার বিউটি পার্লার আছে। সেখানে গিয়ে পার্লারকর্মীর চরিত্রটি আত্মস্থ করার চেষ্টা করেছি। এটিই আমাকে চরিত্রটি রূপায়ণ করতে বেশ সহযোগিতা করেছে।

অভিনয়ে খুব কম দেখা যায়। কারণ কী?

আমার মাস্টার্স পরীক্ষার বাকি চার মাস। এ কারণে পড়ার চাপ বেশি। ইন্টার্নশিপও শুরু হচ্ছে। তাই ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও কাজ করতে পারছি না। পড়ালেখা শেষ হলে আবার পুরোদমে কাজে ফিরব।

তার মানে ঈদুল আজহায় কোনো নাটকে আপনাকে দেখা যাবে না?

দু-একটি নাটকে হয়তো দেখা যেতে পারে। তবে এখনই চূড়ান্ত কিছু বলা যাচ্ছে না।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিভিন্ন ইস্যুতে নিজের মতামত দেন। পাশাপাশি নেতিবাচক মন্তব্যকারীকেও ছেড়ে কথা বলেন না। এ নিয়ে কী বলবেন?

যে বিষয়গুলো আমার ভালো লাগে না, তা নিয়ে সরাসরি কথা বলতে পছন্দ করি। যারা কথা বলেন না, তারা সবার প্রিয় হতে চান। একজন সাধারণ মানুষ হিসেবে নিজের দায়িত্ববোধের জায়গা থেকে সমাজের নানা অসংগতি নিয়ে কিছু কথা বলা দরকার বলে আমি মনে করি। সবাই যদি সবকিছু চুপ করে শুনতে থাকেন, তাহলে হবে না। দু-চারজনকে তো কথা বলতে হবে।

অভিনয় ক্যারিয়ার নিয়ে কি আপনি তৃপ্ত?

প্রাপ্তির খাতা শূন্য নয়, তবে তৃষ্ণা এখনো আছে। ভালো কিছু করতে চাওয়া একটা নেশার মতো। তাই যতদিন বাঁচব, ভালো নাটক-সিনেমা-টেলিছবিতে অভিনয়ের বাসনা থেকেই যাবে।

ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা কী, মানে নিজেকে কোন অবস্থানে দেখতে চান?

মিডিয়ায় কাজ করব, এ নিয়ে বড় কোনো পরিকল্পনা নেই। আমি আগে মাস্টার্স শেষ করে ভালো একটা জায়গায় জয়েন্ট করতে চাই। পাশাপাশি অভিনয়টা চালিয়ে যেতে চাই। সে ক্ষেত্রে সংখ্যার চেয়ে মানটাকে বেশি গুরুত্ব দেব।

এখন পর্যন্ত কোন ইচ্ছাটা অপূর্ণ আছে?

ভালো ভালো অনেকগুলো ছবি করতে চাই। আর আমাদের কাজের সময়টা যেন একটা সিস্টেমে আসে, সেটা পূরণ করতে চাই। সেটা ১০ ঘণ্টা হোক বা ১২ ঘণ্টা হোক- তার পরও একটা সিস্টেম তৈরি জরুরি।

অভিনেত্রী না হলে কী হতেন?

সাংবাদিক। কারণ এ পেশাটাকে আমার অনেক ভালো লাগে।

আবার জন্মালে?

এ জীবনে যা ভুল আছে, সেগুলো শুধরে আসব। সেই সঙ্গে ভালো একজন অভিনেত্রী হব। আর অবশ্যই বর্তমানে মিডিয়ার যে অবস্থা, এ অবস্থায় যেন না আসতে হয়!

কী কারণে নিজেকে সবার থেকে আলাদা মনে করেন?

কোনো কারণেই নিজেকে আলাদা মনে হয় না। আমি আট-দশটা সাধারণ মানুষের মতোই।

আলাদিনের চেরাগ পেলে কোন তিনটি ইচ্ছা পূরণ করবেন?

প্রথমত, ১০-১৫টা ভালো ছবিতে অভিনয় করতে চাই। যেগুলো দেখে দর্শক অভিনেত্রী শবনম ফারিয়াকে অনেকদিন মনে রাখবে। দ্বিতীয়ত, যতদিন আমি বেঁচে থাকি, ততদিন যেন আমার বাবা-মাও বেঁচে থাকে। মানে আমার চলে যাওয়ার আগে যেন তারা চলে না যান। আর তৃতীয় ইচ্ছাটা হলো- পুরো পৃথিবীটা ঘুরে দেখতে চাই।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *