করোনাকালে দেশের স্বাস্থ্যব্যবস্থার ভঙ্গুর অবস্থা দেখে নতুন অর্থবছরে বরাদ্দ বাড়ার প্রত্যাশা ছিল খাতসংশ্লিষ্টদের। তবে নানা অব্যবস্থাপনা ও জটিলতায় চলতি অর্থবছরে বরাদ্দের বড় অংশই এখনো অব্যবহৃত থাকা এবং চলমান বৈশি^ক সংকটকে সামনে রেখে এবারও বাজেটে গুরুত্বহীনই থাকছে স্বাস্থ্য খাত।
জানা গেছে, ২০২৩-২৪ অর্থবছরে প্রস্তাবিত বাজেট ১২ শতাংশ বাড়লেও স্বাস্থ্য খাতে মাত্র ৩ শতাংশ বাড়িয়ে ৩৮ হাজার ৫২ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। চলতি অর্থবছরে স্বাস্থ্য খাতে ৩৬ হাজার ৮৬৩ কোটি টাকার প্রস্তাব করা হয়েছিল। গতকাল জাতীয় সংসদের বাজেট অধিবেশনে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেন, স্বাস্থ্য খাতের উন্নয়নকে অগ্রাধিকার দিয়ে বিগত বছরগুলোর মতো এবারও কতিপয় পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। ওষুধ, চিকিৎসামগ্রী ও স্বাস্থ্য সুরক্ষাসামগ্রী উৎপাদনে প্রয়োজনীয় কাঁচামাল আমদানিতে বিদ্যমান সুবিধা আরও বাড়ানো হয়েছে। বিশেষ করে ম্যালেরিয়া ও যক্ষ্মা নিরোধক ওষুধের উৎপাদন মূসক অব্যাহতি প্রদানের প্রস্তাব করছি। এ ছাড়া নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যসামগ্রী, জীবনরক্ষাকারী ওষুধ তৈরির কাঁচামাল আমদানিতে বিদ্যমান শুল্কের হার অপরিবর্তিত রাখার প্রস্তাব করছি।
প্রস্তাবিত বাজেটে দেখা যায়, স্বাস্থ্য খাতে বরাদ্দের ২৯ হাজার ৪৩১ কোটি টাকা প্রস্তাব করা হয়েছে স্বাস্থ্যসেবার জন্য। এর মধ্যে পরিচালন ব্যয়ই হচ্ছে ১৭ হাজার ২২১ কোটি টাকা। আর উন্নয়নে রাখা হয়েছে ১২ হাজার ২১০ কোটি টাকা। অন্যদিকে স্বাস্থ্য শিক্ষা বরাদ্দ ৮ হাজার ৬২১ কোটি টাকা। এর মধ্যে উন্নয়নে ৩ হাজার ২৫৪ কোটি টাকা, পরিচালন ব্যয় ৫ হাজার ৩৬৭ কোটি টাকা।
ঢাকা বিশ^বিদ্যালয়ের স্বাস্থ্য অর্থনীতি ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক সৈয়দ আবদুল হামিদ আমাদের সময়কে বলেন, স্বাস্থ্য খাতে বরাদ্দ যে তেমন বাড়বে না, সেটা আগে থেকেই বোঝা যাচ্ছিল। এবারের বাজেটে মোট বরাদ্দের ২৪ শতাংশই দীর্ঘমেয়াদে পরিচালন ব্যয়। অন্যদিকে উন্নয়ন ব্যয় কমেছে ১৭ শতাংশ। ফলে বলা যায়, বাজেটে স্বাস্থ্য খাত এবারও তেমন গুরুত্ব পায়নি। স্বাস্থ্য খাতের উন্নয়নের বড় অংশ ব্যয় হয় সেক্টর প্রোগ্রামের মাধ্যমে। সেটি চলছে বর্ধিত বছরের, নিয়মিত নয়। চিকিৎসাসেবায় যতটা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে, সেটি দিয়ে আগের বছর যে পরিমাণ ওষুধ কেনা গেছে, এবার তা-ও হবে না। কারণ ডলারের দাম বেশি।