ঢাকা: শুক্রবার ভোর থেকে শুরু হচ্ছে ঈদের টিকিট লড়াই। দেশের উত্তর-দক্ষিণ বঙ্গের ৬০টি রুটের টিকিট পাওয়া যাবে স্ব স্ব বাস কাউন্টারে। একই সঙ্গে বাস কাউন্টারগুলো থেকে বুক দেওয়া যাবে ফিরতি টিকিট। টিকিট পাওয়া যাবে ঈদের আগের দিন পর্যন্ত।
রোববার (২৮ জুন) বাংলাদেশ বাস-ট্রাক ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের গাবতলী কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত বৈঠকে এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত হয়।
এবার যাত্রী প্রতি বিআরটিএ নির্ধারিত কিলোমিটার প্রতি ১ টাকা ৪৫ পয়সা ভাড়া আদায় করা হবে। এছাড়া ফেরী ভাড়া, টোল ও টার্মিনাল চার্জ বাবদ যাত্রী প্রতি ২৫ টাকা কেটে নেওয়া হবে টিকিটের সঙ্গেই।
বিআরটিএ নির্ধারিত ভাড়া অনুযায়ী যাত্রী প্রতি ঢাকা-সৈয়দপুর (ভায়া যমুনাসেতু, বগুড়া, রংপুর) রুটে ৩৩৮ কিলোমিটার রাস্তার জন্য গুণতে হবে ৫১৫ টাকা ১০ পয়সা (নরমাল কোচ)। চেয়ার কোচের ক্ষেত্রে এ ভাড়া হবে ৬৪৯ টাকা ৮৮ পয়সা। একই ভাবে দেশের অন্যান্য জেলার দূরত্ব অনুযায়ী ভাড়ার হার নির্ধারিত হবে। বিআরটিএ কর্তৃক ২০১৩ সালে নির্ধারিত ভাড়া অনুযায়ী টিকিটের এই মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে।
শুক্রবার কোথায় কোন কাউন্টারে অগ্রিম টিকিট পাওয়া যাবে
হানিফ পরিবহনের যাত্রীদের জন্য যেতে হবে গাবতলী বালুরমাঠ, বাগবাড়ী মিরপুর শাখায়। শুক্রবার ভোর ৫টা ৩০ মিনিটে টিকিট বিক্রি শুরু হবে। ডিপজল পরিবহনের টিকিট পাওয়া যাবে টেকনিক্যাল সোহরাব পেট্রোল পাম্পের কাছে। ন্যাশনাল ট্রাভেলসের টিকিট পাওয়া যাবে টেকনিক্যাল মোহনা পেট্রোল পাম্পের কাছে। এছাড়া নাবিল পরিবহনের গাবতলী কাউন্টার, এসআর পরিবহনের কল্যাণপুর কাউন্টার এবং শ্যামলী পরিবহনের টিকিট পাওয়া যাবে গাবতলী মাজার রোড সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পাশে শ্যামলী কাউন্টারে।
এবার বেশ কিছু পরিবহন অনলাইনে টিকিট বিক্রির সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এছাড়া কিছু পরিবহন বিকাশ পেমেন্টের মাধ্যমেও টিকিট বিক্রি করছে।
ন্যাশনাল ট্রাভেলস থেকে ১৬২৮৭/০১৭২৭৫৪৫৪৬০ নাম্বারের সাহায্যে বিকাশের মাধ্যমে টিকিট সংগ্রহ করা যাবে। এই নম্বরে কল করে ভ্রমণের তারিখ সময় বলতে হবে। একইভাবে যাত্রীর নাম, মোবাইল নাম্বার, যাত্রী কোন কাউন্টার হতে উঠবেন, কোথায় নামবেন এসব তথ্য এজেন্টদের জানাতে হবে। এরপর একই বিকাশ ওয়ালেট নাম্বারে সমপরিমাণ ভাড়া পরিশোধ করলেই পাওয়া যাবে টিকিট।
এছাড়া অনলাইনে টিকিট বুকিং সেবা দিচ্ছে সোহাগ পরিবহন, শ্যামলী পরিবহন, নাবিল পরিবহন, এসআর পরিবহন। অনলাইন টিকিট বিক্রির প্রতিষ্ঠান সহজ এর সঙ্গেও চুক্তিবদ্ধ হয়েছে অনেক পরিবহন কোম্পানি।
বাংলাদেশ বাস-ট্রাক ওনার্স এসোসিয়েশনের কার্যনির্বাহী সদস্য মো. সালাউদ্দিন বলেন, আমরা বাস মালিকদের নিয়ে বসেছি। সবাইকে নির্দেশ দেওয়া আছে সরকারি নির্ধারিত ভাড়া নেওয়ার জন্য। এরপরও যদি কারো বিরুদ্ধে অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের প্রমাণ পাওয়া যায় তাহলে তার রুট পারমিট সাময়িকভাবে বন্ধ করা হবে। এছাড়া ওই মালিকের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
তিনি বলেন, টিকিট প্রাপ্তির জন্য যাত্রীরা যেন কোন হয়রানির স্বীকার না হন সে জন্য আমাদের ৩০ সদস্যের একটি ভিজিলেন্স টিম রয়েছে। তারা সার্বক্ষণিকভাবে টার্মিনাল পরিদর্শন করবেন। এছাড়াও থাকবে ৠাব, পুলিশের বিশেষ টহল টিম। তাই এবার অতিরিক্ত ভাড়া বা কোন রকম হয়রানি করার সুযোগ নেই। যেহেতু তেলের দাম বাড়েনি তাই অতিরিক্ত ভাড়া নেওয়ার প্রশ্নই আসে না।
এদিকে অগ্রিম টিকিট কালোবাজারী বা যাত্রীদের হয়রানি ঠেকাতে প্রস্তুত রয়েছে আইন শৃঙ্খলাবাহিনী। গাবতলী এলাকায় সরেজমিন ঘুরে পুলিশের ডিউটি অফিসার সার্জেন্ট জালাল উদ্দিন রুমি বাংলানিউজকে বলেন, যানজট ও টিকিট নিয়ে হয়রানি রোধে আমরা প্রস্তুত রয়েছি। আমাদের পাশাপাশি থাকবে ৠাবের ভিজিলেন্স টিম। এছাড়া পুলিশের ক্রাইম টিমও থাকবে। গাবতলী এলাকার নিরাপত্তায় ৫-৭টি ওয়াচ টাওয়ার ও ১৫-২০টি সিসি টিভি বসানো হচ্ছে বলেও জানান তিনি।
এদিকে রাষ্ট্রীয় পরিবহন সংস্থা বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন করপোরেশন (বিআরটিসি) বাসের অগ্রিম টিকিট বিক্রি শুরু করবে ১০ জুলাই থেকে। শিগগিরই এ বিষয়ে বৈঠক করে বিস্তারিত সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।
ট্রেনের অগ্রিম টিকিট বিক্রি হবে ৯ থেকে ১৩ জুলাই। ৯ জুলাই বিক্রি হবে ১৩ জুলাইয়ের টিকিট, ১০ জুলাই বিক্রি ১৪ জুলাইয়ের, ১১ জুলাই ১৫ জুলাইয়ের, ১২ জুলাই ১৬ জুলাইয়ের ও ১৩ জুলাই বিক্রি হবে ১৭ জুলাইয়ের অগ্রিম টিকিট। ঢাকা ও চট্টগ্রাম রেলস্টেশন থেকে এই অগ্রিম টিকিট অগ্রিম বিক্রি হবে।