অভিনয় ক্যারিয়ার শুরুর পর থেকেই নানা কারণে তুমুল আলোচনায় ছিলেন হালের জনপ্রিয় চিত্রনায়িকা পরীমনি। আর এসব আলোচনার বড় একটা জায়গা দখল করে ছিল ব্যক্তিজীবন। তবে ২০২১ সালের ১৭ অক্টোবর চিত্রনায়ক শরিফুল রাজকে বিয়ের পর থেকে সংসারী মেয়ে হওয়ার চেষ্টা চালিয়ে গেছেন এই অভিনেত্রী। কিন্তু সেখানেও আসে নানা বাধা! দাম্পত্য কলহ শুরু হয় রাজের সঙ্গে চিত্রনায়িকা মিমকে (বিদ্যা সিনহা মিম) জড়িয়ে। এর কদিন পর পরী জানান সংসারজীবনে রাজের উদাসীনতার কথা। তবে একমাত্র সন্তান শাহীম মুহাম্মদ রাজ্যের দিকে তাকিয়ে সব সহ্য করে যাচ্ছেন ‘বিশ্বসুন্দরী’খ্যাত এই নায়িকা।
গত সোমবার দিনগত রাতে রাজ-পরীর সংসারে নতুন করে ঝড় ওঠে। এবার আলোচনায় আসে ‘ন ডরাই’খ্যাত অভিনেত্রী সুনেরাহ বিনতে কামালকে নিয়ে। রাতে রাজের ফেসবুক থেকে ‘গোপন’ কিছু ছবি ও ভিডিও প্রকাশ হয়; যা মুহূর্তের মধ্যেই ভাইরাল হয়ে যায় নেটদুনিয়ায়। সেখান থেকে জন্ম নেয় নতুন সমালোচনার। এমনিতেই রাজ-পরীর সংসারজীবন ভালো যাচ্ছে না, এমন গুঞ্জন শোবিজে অনেক দিন ধরেই চলছে। সেই পালে এবার নতুন করে হাওয়া দিল ভাইরাল হওয়া ‘গোপন’ ছবি ও ভিডিওগুলো। বিষয়টি নিয়ে বেজায় চটেছেন পরী। আর এর পেছনে সুনেরাহকে দায়ী করছেন।
পরীমনি বলেন, ‘এই মেয়েকে (সুনেরাহ) আমি চিনিই না। ওর সঙ্গে আমার কখনো কথাই হয়নি। তা হলে কেন ও আমাকে নিয়ে আজেবাজে মন্তব্য করছে। রাজের ফেসবুক থেকে প্রকাশিত ভিডিওগুলোতে অনেকেই দেখেছেন। ওখানে ওর মুখের ভাষা কেমন ছিল! আর ওরা কি স্বাভাবিক ছিল? এটা কোন ধরনের বন্ধুত্ব? রাজের ফেসবুক হ্যাক হয়নি। এটি করেছে ওই মেয়েই! কারণ রাজ ঘুমালে তার কোনো হুঁশ থাকে না।’
সুনেরাহকে দায়ী করে পরী আরও বলেন, ‘আমরা সংসারজীবন নিয়ে
বেশ ভালোই ছিলাম। কিন্তু এটি অনেকের ভালো লাগছে না। তাই আমার সংসারের পেছনে লেগেছে তারা। তার কথা ও মাতলামি দেখেছেন? এবার বোঝেন। ওই মেয়ে হুমকি দিয়েছে, আইনের ভয় দেখিয়েছে- আইন কি শুধু তার জন্যই? আমিও তাকে দেখে নেব, ধৈর্যের একটা সীমা আছে! আমার মনে হয় ও (সুনেরাহ) আমার সংসারটা ভাঙার চেষ্টা করছে।’
এদিকে রাতে রাজের ফেসবুক থেকে ছবি ও ভিডিও ভাইরাল হওয়ার ১৭ মিনিট পরই তা ডিলিট করা হয়। আর সকাল হতে না হতেই ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেন সুনেরাহ। তার কথায়, ‘আমি রাজকে ১০ বছরেরও বেশি সময় ধরে চিনি। সে আমার অনেক ভালো বন্ধু ছিল। একটাই সমস্যা তা হলো সে ছেলে আর আমি মেয়ে। তার বিয়ের পর থেকে আমাদের যোগাযোগই ছিল না। সেদিন একটা ডাবিং স্টুডিওতে আমাদের দেখা হয়। আমরা একসঙ্গে ছবি তুললাম। আমি জানি না, পুরনো বন্ধুর সঙ্গে একটা ছবি তোলা কী অপরাধ। কোনো কারণ ছাড়াই তার স্ত্রী (পরীমনি) আমার ওপর রেগে গেল।’
ফাঁস হওয়া ভিডিওগুলো নিয়ে ‘ন ডরাই’খ্যাত এই অভিনেত্রী বলেন, ‘যে ভিডিওগুলো আপনারা দেখেছেন, সেগুলো পাঁচ বছর আগের। তখন আমাদের বয়স কম ছিল, আর আমরা সবসময় মজা করতাম। প্রতিদিন আমরা এভাবে কথা বলার প্র্যাকটিস করতাম। কারণ, আমাদেরকে (বিশেষ করে আমাকে) সিনেমার প্রয়োজনে এভাবে গালি দিতে হয়েছে। রাজকে একটি ছবি আমি তখন পাঠিয়েছিলাম, তাকে এটা জানানোর জন্য যে আমি শুটিংয়ে মার খেয়েছি (যেখানে লিয়াকত আমাকে মারে, ‘ন ডরাই’ সিনেমাটা যারা দেখেছেন, তারা জানবেন), মার খেয়ে কালশিটে পড়ে গিয়েছিল, উঠে দাঁড়াতেও পারছিলাম না। শুটিংয়ে যেতে পারব না এটা জানানোর জন্য ছবিটা পাঠিয়েছিলাম। তবে শুধু তাকে না, পরিচালককেও পাঠিয়েছিলাম।’
বিষয়টি নিয়ে বাড়াবাড়ি না করার অনুরোধও জানিয়েছেন সুনেরাহ। তার ভাষ্য, ‘আমি নিশ্চিত, ওর (রাজের) আইডি হ্যাকড হয়েছে। আর কে হ্যাক করেছে, সেটা আমরা সবাই জানি, প্রকাশ্যে হইচই করতে যার কোনো কারণ লাগে না (সে-ই করেছে)। এ ভিডিওগুলো যারা ছড়াবে তাদের প্রত্যেকের বিরুদ্ধে আমি আইনগত ব্যবস্থা নেব।’
তবে সুনেরাহর এসব কথা মানতে নারাজ পরীমনি। এই ভিডিওগুলো সুনেরাহ-ই প্রকাশ করেছেন বলে বারবার জানান তিনি। শুধু তাই না, তাদের সংসার ভাঙার পাঁয়তারাও করছেন ‘ন ডরাই’র এই অভিনেত্রী। তবে পরী এবার কাউকে ছেড়ে কথা বলবেন না। তিনিও এর শেষ দেখে ছাড়বেন। প্রয়োজনে আইনের আশ্রয়ও নেবেন পরীমনি।
রাজের প্রসঙ্গ নিয়েও কথা বলেছেন পরী। তার কথায়, ‘রাজ কখন কী করে, কোথায় থাকে, তা আমাকে জানানোর প্রয়োজন মনে করে না। এভাবে একটা সংসার চলতে পারে না।’